রক্ষক যখন ভক্ষক! পাকিস্তানে হিন্দু নাবালিকাকে জোরজবরদস্তি ইসলামে ধর্মান্তরিত করল পুলিশকর্মী

0
725

বঙ্গদেশ ডেস্ক: পাকিস্তানে কোনোভাবেই থামছে না হিন্দু নির্যাতন। এবারও শিরোনামে সেই হিন্দু অধ্যুষিত সিন্ধ প্রদেশ। তবে এবার অভিযোগ গুরুতর। অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক হিন্দু নাবালিকাকে অপহরণ করে জোরজবরদস্তি বিয়ে করে এক পুলিশকর্মী। পাশাপাশি তাকে মারধর করে জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হয়।

সূত্রের খবর, সিন্ধ প্রদেশের নৌশাহর ফিরোজ জেলায় হিন্দু নির্যাতনের এই ঘটনাটি ঘটেছে। সেখানকার বাসিন্দা রমেশ লালের কন্যা নিনা কুমারীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় গুলাম মারুফ কাদরি নামের এক পুলিশকর্মী। নিয়তির কি নিষ্ঠুর পরিহাস! জঙ্গী ও মৌলবাদীদের হাত থেকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের রক্ষার জন্য‌ই সেখানে কাদরিকে মোতায়েন করা হয়েছিল। এই ঘটনার জেরে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় হিন্দু নেতা বলেন, দিন পাঁচেক আগে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় নিনা। তার খোঁজখবর নিতে গিয়ে পরিবার অপহরণের কথা জানতে পারেন। ‘অল পাকিস্তান হিন্দু পঞ্চায়েত’-এর অভিযোগ ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ নিনাকে অপহরণ করে স্থানীয় দরগায় হাজির হয় ওই পুলিশকর্মী। সেখানেই ওই হিন্দু নাবালিকার জোর করে ধর্মান্তরকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তারপর তাকে করাচিতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করে গুলাম মারুফ কাদরি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন আগেই পাক হিন্দুদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে একটি চিঠি দিয়েছে ‘হিন্দু ফোরাম অফ ব্রিটেন’। এই ফোরামের ছত্রছায়ায় আছে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ হিন্দু সংগঠন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু নাগরিকরা ভীষণ সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। নানারকম অত্যাচার ও অবিচারের শিকার তারা। ক্রমশ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে ত্বরান্বিত হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে হিন্দুদের রক্ষার জন্য দ্রুত ও কার্যকরী ব্যবস্থার আর্জি জানাচ্ছি।” জনসনের কাছে হিন্দু সংগঠনগুলির বিনীত আবেদন, অবিলম্বে একটি উচ্চপর্যায়ের সরকারি কমিটি গঠন করা হোক। সেই কমিটি পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে বিশদে তদন্ত করবে। রাষ্ট্রসংঘের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে একত্রিত করে একইভাবে তদন্তের দাবি তুলেছেন সংগঠনগুলির কর্মকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, যেভাবেই হোক হিন্দু গণহত্যা, অত্যাচার-অবিচার থেকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের রক্ষা করতেই হবে। সংগঠনের সদস্যরা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পাকিস্তানের মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট করে কোনও নাম উল্লেখ না করলেও বরিস জনসনকে লেখা চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, জনমানসে হিন্দু বিদ্বেষ তৈরি করতে পাকিস্তানের মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ কিছু প্রভাবশালী মানুষ সক্রিয় মদত রয়েছে।