পাকিস্তানি সেনেটে চীনা ‘স্পাই’ ক্যামেরা, উত্তাল সংসদ ঠিক ভোটের আগে

0
593

বঙ্গদেশ ডেস্ক – শুক্রবার সেনেট চেয়ারম্যানের পদে ভোট দেওয়ার সময় পাকিস্তান সেনেটে (সংসদের উচ্চ সভায়) বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনের জন্য ভোটকেন্দ্রটিতে ‘স্পাই’ ক্যামেরা বসানো রয়েছে বলে বিরোধীপক্ষের তরফে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

ভোটিং প্রক্রিয়া শুরু হবার আগে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সেনেটর মুস্তাফা নওয়াজ খোক্কর দাবি করেন যে ভোটকেন্দ্রটির ঠিক উপরে “স্পাই” ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেনেট হলের ভিতরে চীনা ক্যামেরার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। সেনেট সদস্য রাজা রাব্বানী বলেন, স্পাই ক্যামেরা লাগিয়ে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই অভিযোগের পরে, অনেক সংসদ সদস্যই অস্থির হয়ে ওঠেন এবং ভোটদান প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

সেনেটের সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনের জন্য একটি গোপন ব্যালটে ভোটদান প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। এর আগেই সেনেটের উচ্চ আইনসভায় নবনির্বাচিত ৪৮ জন সদস্য শপথ গ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাকিস্তানে একজন সেনেটারের মেয়াদ ছয় বছরের আর তাঁদের মধ্যে অর্ধেক তিন বছর পর অবসর গ্রহণ করেন। উপরের কক্ষটি (হাউস) চালানোর জন্য প্রতি তিন বছর অন্তর একজন নতুন চেয়ারম্যান ও তাঁর ডেপুটি নির্বাচন করা হয়।

৩ মার্চ পাকিস্তানে সেনেটে একটি নির্বাচনের আয়োজন করা হয় নির্ধারিত আসনগুলির জন্য, যেগুলির বর্তমান সংসদ সদস্যরা ১১ ই মার্চ অবসর নেবেন। সেনেট সচিবালয় জানায় যে সদ্য নির্বাচিত সেনেটরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সকালে অনুষ্ঠিত হবে, এরপর বিকালে বা সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান ও ডেপুটি চেয়ারম্যানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানী চেয়ারম্যান পদে ১১ দলের বিরোধী জোট পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট এর প্রার্থী হিসাবে মনোনীত। অন্যদিকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ফজলের নেতা মাওলানা গাফুর হায়দ্রি ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনীত হন। আবার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজির পিটিআই তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে সভাপতি পদে সাদিক সানজরানিকে এবং উপ-সভাপতির জন্য মির্জা মোহাম্মদ আফ্রিদিকে বেছে নেন।

১০০ জন সদস্যের হাউসে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে, যে দল ৫১ টি ভোট পেতে সক্ষম হবে তারাই বিজয়ী হবে। বিরোধী দল দাবি করেছে তাদের কাছে ৫১ জন সেনেটরের সমর্থন রয়েছে এবং একই দাবি সরকারও করেছে। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বিধায়ক ভাঙানোর জন্য অর্থ এবং অন্যান্য কৌশল ব্যবহারের অভিযোগ করেছে। এই অবস্থায় যদি প্রমাণ হয় চীনারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে কিংবা ইমরান খান সরকারের আদেশে পাক আইএসআই এই কাজ করেছে, তাহলে অনুমান করা যায়, আগামীতে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন একটি ঝড় আসন্ন।