বঙ্গদেশ ডেস্ক : গত ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন আকারের, ছোট–বড় নানান ঘণ্টা তৈরি করে আসছেন দাউ দয়াল। উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথের ১০১ কেজি ওজনের ঘণ্টা হোক, উজ্জয়নীর মহাকালেশ্বর মন্দিরের ১০০০ কেজির ঘণ্টা–সবই তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু এবার আরও বড় আকৃতির ঘণ্টা তৈরি করলেন উত্তরপ্রদেশের জলেশ্বরের বাসিন্দা দাউ। আসলে তাঁর উপর রাম মন্দিরের জন্য ২১০০ কেজির অষ্টধাতুর ঘণ্টা তৈরি করার দায়িত্ব পড়েছে। তবে তিনি একা নন, ঘণ্টার কারুকার্য আবার করবেন ইকবাল মিস্ত্রি নামে এক মুসলিম। এছাড়াও ছিলেন আরও বেশ কিছু মুসলিম কারিগরও। তবে দু’জনেই জানিয়েছেন, এই প্রথমবার এত বড়মাপের ঘণ্টা তাঁরা তৈরি করতে পেরেছেন।
গত বছর নভেম্বরে রাম মন্দিরের সম্পর্কিত মামলা শেষ হওয়ার পরই প্রস্তুতি শুরু হয় মন্দির নির্মাণের। তারপরই ইটাওয়া জেলার জলেশ্বর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান বিকাশ মিত্তলের কর্মশালাকে এই ঘণ্টা তৈরির বরাত দেয় অযোধ্যা মামলার অন্যতম মামলাকারী নির্মোহী আখড়া। জানা গিয়েছে, ২১০০ কেজি ওজনের এই অষ্টধাতুর ঘণ্টা তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ২১ লক্ষ টাকা। হিন্দু–মুসলিম মিলিয়ে ২৫ জনের একটি কারিগরের দল আগামী একমাসের মধ্যে সেটি তৈরি । এমনকী ব্যবহার করা হবে ক্রেনও। তবে অযোধ্যার এই ঘণ্টার আওয়াজ নাকি শোনা যাবে ১৫ কিলোমিটার দূর থেকেও। এমনটাই দাবি দাউ দয়ালের।
এই প্রসঙ্গে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘একমাস ধরে চলা এই প্রক্রিয়ায় কোনওরকম ভুল করা চলবে না। রাম মন্দিরের জন্য এই কাজ করতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত। কিন্তু ভয়ও আছে, কোনওরকম ভুল করার।’’ মুসলিম কারিগরদের যুক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ঘণ্টা তৈরির সময় সেটির ডিজাইন কিংবা পালিশের কাজ করার বিষয়ে আমাদের মুসলিম ভাইরা খুবই অভিজ্ঞ।’’ এই ঘণ্টা তৈরির প্রসঙ্গে চেয়ারম্যানের ভাই আদিত্য মিত্তল জানান, ২১ লক্ষ টাকা খরচ হলেও এটি তৈরির জন্য তাঁরা কোনও টাকা নেবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা মনে করি কোনও বিশেষ কারণেই এই কাজটির বরাত আমাদের কাছে এসেছে। তাই আমরা ঠিক করেছি, এই ঘণ্টাটি আমাদের পক্ষ থেকে মন্দিরকে দান করা হবে।’’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ই শুরু হয়েছিল শ্রী রাম মন্দির নির্মাণের শুভ সুচনা। তার পর ই সারা ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে জেগেছিল অভূতপূর্ব উদ্দীপনা। বহু ধর্মপ্রাণ হিন্দু রাম মন্দির গঠনে আর্থিক সাহায্য করেছেন।
তামিলনাড়ুর লিগ্যাল রাইটস কাউন্সিল এর তরফে ঘোষণা করা হয় রাম মন্দিরের জন্য ৪.১ ফুট এর ঘণ্টা প্রদান করা হবে তাদের তরফে।
সেই ঘণ্টা মন্দিরে পৌঁছাতে ”রাম রথ যাত্রার ” সূচনা করেছিল রামেশ্বরম থেকে।
আজ সমস্ত প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেই ঘণ্টা এসে পৌঁছায় অযোধ্যা শহরে।
সংস্থার তরফে এই বিশাল আকার ঘণ্টা টি তুলে দেওয়া হয় মন্দির কতৃপক্ষের হাতে।
ঘণ্টা টির গায়ে খোদাই করা “জয় শ্রীরাম”।
এই বিশাল আকার ঘণ্টা টি মন্দিরে পৌঁছে দিতে প্রায় ৪৫৫৫ কিমি পথ অতিক্রম করা হয়েছে।
এবং ১১ টি রাজ্য অতিক্রম করা হয়েছে।
আগামী দিনে রাম মন্দিরে স্থাপিত হয়ে মন্দিরের শোভা বর্ধন করবে এই ঘণ্টা টি।