একটিমাত্র শৌচাগার দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষের বার্ষিক মোটা অংকের টাকা সাশ্রয় করছে

0
961

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় শৌচাগার তৈরির ফলে আর্থিক কী সুবিধা পাওয়া গিয়েছে তার একটি সমীক্ষা সম্প্রীতি মিডিয়া মাধ্যমে উঠে এসেছে।

আমরা জানি, খোলা জায়গায় মলত্যাগের ফলে সাধারণ মানুষের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াজনিত জীবাণুর সংক্রমণের পাশাপাশি ডাইরিয়া জাতীয় নানারকম রোগব্যাধি হতে পারে। এবং এই কারণগুলোর জন্য ২০১২ সালে ভারতে ৩৩৫,০০০ জন মানুষ মারা গিয়েছিল।

স্বরাজ্য ম্যাগ রিপোর্ট করেছে, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের আওতায় নির্মিত শৌচাগার গুলোর দৌলতে গ্রামীণ পরিবারগুলিতে বছরে বহু অংশে মৃত্যু হ্রাস পেয়েছে, চিকিৎসা ব্যয় সংক্রান্ত খরচাপাতি কমেছে এবং আয়ের উৎসের যে বিরাট ক্ষতি বিগত বছরগুলোতে হতো তা রোখা সম্ভব হয়েছে।

দরিদ্র পরিবারে শৌচাগার তৈরির মাধ্যমে মাঠেঘাটে উন্মুক্ত জায়গায় মলত্যাগ বন্ধ করতে ২০১৪ সালে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, একটিমাত্র শৌচাগার পরিবারগুলির বছরে গড়ে প্রায় ৪৭,০০০টাকা বাঁচাতে সাহায্য করেছে। এছাড়াও শৌচাগার নির্মাণ অকাল মৃত্যু হাত থেকে বাঁচিয়েছে, চিকিৎসা খরচা সাশ্রয় করেছে এবং উপার্জনের ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি কম করেছে।

প্রকল্পের আর্থিক সুযোগ-সুবিধাগুলো নিয়ে বিশদে গবেষণার জন্য ইউনিসেফ এবং ভারতীয় নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত গবেষকদের দল জানিয়েছেন ২০১৪-২০১৭ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় ভারতের ১২ টি রাজ্যের মোট ১০,০০০-এর ওপর গ্রামীণ বাড়িতে শৌচাগার তৈরি হয়েছে। শৌচাগার তৈরির ফলে অকালমৃত্যুর পরিমাণ কমতে থাকে। সমাজে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের জীবনের আয়ু বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এবং এর ফলাফল হচ্ছে বার্ষিক প্রায় ১৬০০০ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যয়‌ও কমতে থাকে – যেমন ডাক্তারের ফি এবং ওষুধপত্রের খরচ কমে বছরে গড়ে প্রায় ৮০০০ টাকা সাশ্রয় হয়। পরিসংখ্যান বলছে একজন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রায় দু’দিনের কাজ হারান। কিন্তু বর্তমানে উপার্জনের ক্ষেত্রে সমস্যা অনেক কমে গিয়েছে। বছরে প্রায় ২০০০ টাকা পরিবার পিছু সাশ্রয় হয়ে গিয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, মলত্যাগের জন্য বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে পায়ে হেঁটে যেতে হতো। এর ফলে অনেকটা সময় বাড়তি যেত, কিন্তু বাড়িতে শৌচাগার থাকার ফলে সময়ের সাশ্রয় হয়েছে। বছরে প্রায় ২১,০০০ টাকা দূরে কোনো স্থানে হেঁটে মলত্যাগ না করতে যাওয়ায় সাশ্রয় হয়েছে।
একটি মূল্য রেখেছিলেন। বাড়িতে একটি শৌচাগার থাকার ফলে গড়ে প্রায় ১৯,০০০ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

সরকার শৌচাগার নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল সরবরাহ করে তবে পরিবারগুলি সেপটিক ট্যাঙ্কের সুবিধা ভোগ করার জন্য অতিরিক্ত কিছু অর্থ ব্যয় করে বলে সূত্রের খবর। তবে লেখকরা তথ্যের খতিয়ান দেখিয়ে বলেছে যে সুবিধাগুলি জাতীয় ব্যয়ের চেয়ে অনেক বেশি খরচসাপেক্ষ। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এককালীন মোটা অংকের টাকা খরচের বিনিময়ে পরিবারগুলি তাদের ব্যয় অপেক্ষা প্রায় দ্বিগুণ সুবিধা ফেরত পায়।

সরকার ২০১৯ সালে ঘোষণা করেছেন ভারতে আর কোনো ব্যক্তি খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে না। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গেছে যে খোলা জায়গায় মলত্যাগ-মুক্ত পরিবেশের সম্ভাব্য সুবিধাগুলি কেবলমাত্র শৌচাগারের ব্যবহার ও গুরুত্ব দিয়েই অর্জিত হয়েছে। তবে এই শৌচাগারগুলো থেকে কঠিন এবং বর্জ্য পদার্থ নির্গত করার জন্য একটি উপযুক্ত ব্যবস্থাও রাখা দরকার।