আলুরচপ ভেজে অভিনব প্রতিবাদ চাকুরিপ্রার্থীদের

0
611

রাজ্যের বেকার যুবকদের জন্য চপের দোকান খোলার পরামর্শ দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল রাজ্যজুড়ে।আবার তৃণমূলের অনেকে বলেছিলেন যে আত্মনির্ভর হওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।এই নিয়ে নিন্দার কিছু নেই।তবে তার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ট্রল এবং পোস্টে চপ এর ব্যবহার শুরু হয়। আর এবার সেই চপকে প্রতিবাদের প্রতীক হিসাবে বেছে নিলেন কিছু শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী।

মেদিনীপুর শহরের রাস্তায় বিক্ষোভে নেমে আন্দোলনে অভিনব প্রতীকী হিসাবে ভাজলেন আলুর চপ। “যোগ্যতা আছে, সুযোগ নেই, নিজেকে প্রমাণের সুযোগ চাই” এমনই লেখা ব্যানার নিয়ে মেদিনীপুর শহরের রাজপথ অবরোধ করলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কয়েক’শ বেকার যুবক যুবতী। এঁদের কেউ স্নাতক কেউ আবার স্নাতকোত্তর। বিজ্ঞান, কলা, কেউ আবার বাণিজ্য বিভাগের ডিগ্রি নিয়ে বসে রয়েছেন অনেক দিন। কারও আবার চাকরির বয়সই পের হওয়ার মুখে। গতকাল এরকমই এক ঝাঁক চাকরি প্রার্থী শিক্ষিত যুবকের অবরোধে অবরুদ্ধ হয়ে গেল জেলাশাসক দপ্তরের সামনে কালেক্টরেট মোড়।
“ওয়েস্টবেঙ্গল এস এল এস টি ক্যান্ডিডেট অ্যাসোসিয়েশন এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল টিচার্স জব অ্যাসোসিয়েশন” সংগঠনের ব্যানারে কয়েকশ বেকার যুবক যুবতী মঙ্গলবার সমবেত হয়েছিলেন মেদিনীপুর শহরের কলেজ মাঠে। এরপর বিক্ষোভ স্লোগান দিতে দিতে মেদিনীপুর শহর পরিক্রমা করে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে হাজির হয় তারা। সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন নীতির বিরোধিতা করে প্রতিবাদী স্লোগান দেন তারা।

আন্দোলনকারী এক যুবক বলেন , “২০১৬ সালের পর থেকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কোন বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হয়নি। বিএড পাশ করে বহু প্রশিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী চাকরির আবেদন করার সুযোগ পর্যন্ত পায়নি। তাই অবিলম্বে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সক্রিয় করতে হবে। সেইসঙ্গে মেধাতালিকা দুর্নীতি মুক্ত করে প্রকাশ্যে আনতে হবে।আমরা বিনা পয়সায় রেশন চাই না, আমরা চাই সরকার আমাদের চাকরি দিন, আমরা বেতনের টাকায় চাল ডাল কিনে খাব।”

বেলা বারোটা নাগাদ জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ অবরোধ শুরু হওয়ার পর যানজটে আটকে যাওয়া বহু মানুষকেই এদিন বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। অনেক সময় মানুষ এই ধরনের অবরোধে বিরক্ত হন, কিন্তু মঙ্গলবার দেখা গেল বিরক্ত হওয়ার পরিবর্তে মানুষ দাঁড়িয়ে তাঁদের কথা শুনেছেন। আসলে অনেকেই নিজের ঘরে থাকা বেকার ছেলে, মেয়ের প্রতিচ্ছবি যেন দেখতে পেয়েছেন বিক্ষোভকারীদের মধ্যে। পরে জেলাশাসকের দপ্তরে ডেপুটেশন দিয়ে অবরোধ তুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন তারা। রাজ্যের ১০টি জেলায় এই কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে বিক্ষোভ কারীরা জানালেন।