আনন্দবাজারের অর্ধসত্যের ভাঁওতা- যোগীর আমলে এসেছে ন্যায়

0
2501

আবার আনন্দবাজারের শিকার সত্য। আজ আনন্দবাজার বলেছে যে যোগীর আমলে উত্তরপ্রদেশে নারীদের উপর অত্যাচার ও ধর্ষণ নাকি বেড়েছে। আনন্দবাজার পরিসংখ্যান খুলে তাই দেখিয়েছে। অখিলেশ যাদবের চেয়ে যোগী আদিত্যনাথ আসার পরই নাকি ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে। অতএব যোগী আদিত্যনাথ নিশ্চয়ই কুশাসক।

প্রথমতঃ, অপরাধের সংখ্যা বাড়া থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে যোগীর আমলে অপরাধের যাঁরা শিকার তাঁরা এখন সাহস করে পুলিশের কাছে আসতে সাহস পাচ্ছেন। এই মিরাকল সম্ভব হয়েছে কারণ যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ ক্ষমতায় আসার পরই প্রচুর দুর্বৃত্তকে হয় গ্রেফতার করেছে, নয়তো এনকাউন্টারে হত্যা করেছে। তাতে সাহস পেয়ে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে পশ্চাৎপদ অংশ এখন এগিয়ে আসছেন। তাঁরা পুলিশের কাছে যাচ্ছেন। হাতরাসের ধর্ষণের এক ঘণ্টার মধ্যেই হতভাগা মেয়েটির দাদা পুলিশে রিপোর্ট লিখিয়েছিল। কাজেই ধর্ষণের সংখ্যা বেশি দেখাবে। এই বৃদ্ধি ন্যায়ের জয়, অন্যায়ের নয়। কিন্তু আনন্দবাজারের চোখে হয়তো জয় বাংলার চশমা। কাজেই তারা দেখবে কি করে?

দ্বিতীয় কথা, যোগী আদিত্যনাথের পর পর তিন বছরে ধর্ষণ কত? ২০১৭ তে ছিল ৪,৬৬৯, ২০১৮তে ৪,৩২২ এবং ২০১৯এ ৩,০৬৫। এ কথা আনন্দবাজার নিজেই বলছে। মিথ্যা পাছে ধরা পড়ে, তাই লেখাটির এক জায়গায় বলে নি। তিন জায়গায় বলেছে। দেখাই যাচ্ছে, যোগীর আমলে ধর্ষণ কমছে, বাড়ছে না।

তৃতীয় কথা, উত্তরপ্রদেশে অপরাধ দেশের সব রাজ্যের চেয়ে বেশি তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যাও ভারতের সব রাজ্যের চেয়ে অনেক বেশি। দেখা দরকার কতজন নিবাসীর মধ্যে একজন অপরাধের শিকার। আনন্দবাজার তো পুলিশের পরিসংখ্যানকে বেদবাক্য মনে করে। তাই সেই পরিসংখ্যানই দেখলাম (পৃষ্ঠা ২১২)। দেখলাম সেই সংখ্যাটি উত্তরপ্রদেশে বেশ কম। পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালায় অনেক বেশি। ২০১৮ সালের পরিসংখ্যানটি বলি, যদিও অন্য বছরগুলি খুব আলাদা নয়। উত্তরপ্রদেশে ২,৯১১ জন পূর্ণবয়স্ক নারীর মধ্যে একজন এই বছর ধর্ষণের শিকার। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ১,০৬৫ জনের মধ্যে একজন ধর্ষণের শিকার। ভারতের শিক্ষিত রাজ্য কেরালায় এই সংখ্যা ৮১৬তে একজন। কাজেই আনন্দবাজারের পরিসংখ্যান মোতাবেক নারীরা উত্তরপ্রদেশে বেশি সুরক্ষিত, অন্ততঃ পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে।

চতুর্থ কথা, হঠাৎ কোন কোন ধর্ষণ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। যেমন হাতরাসেরটি। কিন্তু অন্যগুলির খবর আনন্দবাজারে খুঁজেই পাওয়া যায় না। যেমন বলরামপুরেরটি যেখানে দুই যুবক শাহিদ ও সাহিল দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করে হত্যা করেছে। কেন বলুন তো?

পঞ্চম কথা, যোগী কিন্তু এস আই টি গঠন করেছেন, ধর্ষকরা কারাগারে। পশ্চিমবঙ্গে তো বহু মেয়েকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে (যেমন মালদায়), কেউ  গ্রেফতারও হয় নি। জয় বাংলার চশমা?