অন্ধ্রপ্রদেশে ক্রমাগত হিন্দু মন্দিরে হামলা সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ! ?

0
801

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- বেশ কিছুদিন ধরে ক্রমাগতভাবে অন্ধ্রপ্রদেশের হিন্দু মন্দিরগুলোতে হামলা চালাচ্ছে দুষ্কৃতীর দল। একের পর এক মন্দির ধ্বংসে বিরক্ত রাজ্যের মানুষ। অথচ পুলিশ অপরাধীদের ধরতে তৎপর নয়, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। মন্দির ভাঙচুর ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মনে তৈরি হয়েছে প্রবল ক্ষোভ। মুখ্যমন্ত্রী জগমোহন রেড্ডির সমালোচনায় মুখর বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দ।

জানা গিয়েছে, এই মন্দিরগুলো আগের টিডিপি সরকারের আমলেই ভাঙচুর করা হয়েছিল। সেই মন্দির সংস্কারের কাজে হাত লাগিয়েছে সরকার। এই কাজের জন্য মোট ৭৭কোটি টাকা খরচ ধার্য করা হয়েছে।

সরকারি আধিকারিকরা বলেছেন, যে ৯টি মন্দিরের কাজ শুরু হবে সেগুলো হল রাহু-কেতু মন্দির, শ্রী অঞ্জনেয়স্বামী মন্দির, সানেস্বারা স্বামী মন্দির, শ্রী দাসানঞ্জেয় স্বামী ভরা মন্দির, বোড্ডু বোম্মা,শ্রী ভিরা বাবু স্বামী মন্দির এবং গোশালা কৃষ্ণা মন্দির।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর ইনচার্জ এম নাগেশ্বর রাও বলেছেন, “সরকার যদি হিন্দু মন্দির চায় তবে প্রথমে ভারতকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ ঘোষণা করা উচিত।

রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের মতে, ২০২০ সালে, অন্ধ্র প্রদেশে মন্দির ভাঙচুরের ২২৮ টি ঘটনা ঘটেছিল। এই হিন্দু বিরোধী ঘটনাগুলোর পিছনে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র যুক্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সরকার সকল ধর্মকে সুরক্ষা প্রদান করবে বলে আশ্বাস দিলেও ; একটি নির্দিষ্ট ধর্মের দিকে ঝুঁকছে বলে মনে হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই ধর্মনিরপেক্ষতার লক্ষণ নয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের একত্রিত হওয়া এবং অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার কর্তৃক দখলকৃত ২৪,৬৩২ টি মন্দিরের সুরক্ষার জন্য লড়াই চালানো উচিত এবং ‘গোপন মন্ত্রীসভা’-র মতো প্রতিটি মন্দিরে ‘গোপন ট্রাস্ট’ স্থাপন করা দরকার। ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের হিন্দু মন্দির দখল করার কোনও অধিকার নেই।

তিনি একথাও বলেছেন, সরকার যদি হিন্দু মন্দির রক্ষা করতে চায় তবে প্রথমে দেশকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ হিসাবে ঘোষণা করা উচিত এবং তারপরে মন্দিরগুলির দেখাশোনা করা উচিত।

তেলেঙ্গানার প্রজ্ঞা ভারতীর রাজ্য সহসভাপতি, মিঃ গিরিধর মামিদি বলেন, “গোয়ায় পর্তুগিজ শাসনকালে সেন্ট জাভেয়ার বলতেন, ‘বাচ্চারা আমার বাড়িতে এসে বলে তাদের পরিবার বা বাবা-মায়ের পূজ্য প্রতিমাগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমি এগুলো শুনে খুব খুশি হ‌ই।” তিনি আরও বলেন, এ জাতীয় মতাদর্শের লোকেদের পূর্ণ মদত রয়েছে প্রতিমা ভাঙচুরের পিছনে। রাজ্য সরকার যদি এই ঘটনাগুলি কঠোরভাবে প্রতিরোধ না করে, তবে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত। এছাড়াও, হিন্দুদের উচিত এই বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে গণসচেতনতা তৈরি করা।

তেলঙ্গানায় রাষ্ট্রীয় শিবাজি সেনার সভাপতি শ্রীনিবাস চারি বলেছেন,“অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু মূর্তি ভাঙ্গা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও, ৪ টি জায়গায় প্রতিমা ভাঙা ঘটনা ঘটেছে। সুতরাং, আমরা সরকারের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস দুই-ই হারিয়ে ফেলেছি”।

হিন্দু জনজাগরণ সমিতির জাতীয় মুখপাত্র রমেশ শিন্ডে বলেছেন, “অন্ধ্র প্রদেশ সরকার যদি মন্দিরগুলো থেকে কোটি কোটি টাকা নেয় তবে মন্দিরগুলিকে কেন সুরক্ষা প্রদান করা হয় না। এক‌ই ধরনের হামলার ঘটনা যখন একসঙ্গে ২০০ টির‌ও বেশি মন্দিরে সংঘটিত হয়, তখন কেন সরকার বুঝতে পারে না যে এটি শুঊ হিন্দু বিশ্বাসকে ধ্বংস করার একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র? শুধু এ রাজ্যে নয়, গোয়াতেও প্রতিমা ভাঙার একই রকম ঘটনা ঘটেছিল বহু মন্দিরে। কিন্তু অপরদিকে যখন কর্ণাটকের ৫-৬ টি গির্জায় পাথর ছোঁড়া হয়েছিল, তখন ভারতের বুকে চার্চগুলি কতটা বিপদগ্রস্ত এরকম মর্মে একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছিল

অপরদিকে শত শত মন্দিরে আক্রমণ সত্ত্বেও, এটি গুরুত্ব সহকারে এড়িয়ে যাওয়া হয়। সুতরাং, হিদুদের‌ই দায়িত্ব নিতে হবে নিজেদের অধিকার বুঝে নেওয়ার করা এবং সেই সঙ্গে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা।