বাংলা উইকিপিডিয়ায় মুসলমানি বাংলার আগ্রাসন অব্যাহত, ব্রাত্য সনাতনী বাঙ্গালীর অবদান

0
951

বঙ্গদেশ ডেস্ক:পশ্চিমবঙ্গে ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চোখে পড়ে। মাতৃভাষা দিবস পালনের পাশাপাশি কোথাও কোথাও আবার বাংলাদেশের শহীদ মিনারের আদলে স্তম্ভ গড়ে তার পাদদেশে সারাদিন ধরে নানান অনুষ্ঠান চলে। অথচ বাংলাদেশে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী বাঙ্গালী ও বাঙ্গলা ভাষাভাষীদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি সেই পরিমাণ সহানুভূতির প্রকাশ দেখা যায় না।

উইকিপিডিয়ায় ‘বাঙালি জাতি’ নিয়ে একটি নিবন্ধ থাকলেও সেখানে কিন্তু একছত্রভাবে বাংলাদেশী সম্পাদকদের আধিপত্য চোখে পড়ে। সেখানে প্রতিটি বাক্যে আরবি মিশ্রিত বাংলা শব্দের ব্যবহারের বাহুল্য দেখা যায়। উইকির নিবন্ধে প্রাচীন ইতিহাসের বদলে লেখা রয়েছে কদীম ইতিহাস। এছাড়া নিবন্ধের তাহজীব, মসরুফ, এস্তেমাল, তেজারত জাতীয় শব্দের ব্যবহার‌ই বেশি।

এছাড়া ভারতীয় বাঙ্গালী নারীদের পোশাক বর্ণনায় খুব সুন্দর করে শাড়ির সঙ্গে হিজাবের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের সালোয়ার কামিজের সঙ্গে বোরখা বা হিজাব ও ওড়নার তুলনা টানা হলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে ধুতির উল্লেখ কিন্তু নেই। বরং সেই জায়গায় টুপি, তকি, পাগড়ি বা রুমালের ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।অপরদিকে, বিবাহের ক্ষেত্রে শাদি, খান্দান, মঞ্জিল, দোয়া, তেলাওয়াত, আকদ শব্দের আধিক্য দেখা যায়।

বিভিন্ন ভাষাবিদ ও অধ্যাপকরা মনে করেন, বাংলাদেশ আরবি মিশ্রিত বাঙ্গলা চালাচ্ছে । তাই সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্কে চলছে ওই ভাষা । পশ্চিমবঙ্গে বাঙ্গলা অ্যাকাডেমী আছে , বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ আছে কিন্তু উপযুক্ত পরিকল্পনা নেই । সর্বজনমান্য বানান বিধি নেই , সংস্কৃত – জ্ঞান আর মাতৃভাষার পূর্ণ চেতনা নেই । উপরন্তু এই বাংলায় আরবি – পন্থীরা ছদ্মবেশ ধারণ করে আছে ।

আদপে, একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলাকে উর্দুর পাশে রাখার দাবিতে আন্দোলন ছিল। একে ভুলভাবে উপস্থাপন করে মাতৃভাষা আন্দোলন বলে চালানো হয় কিন্তু কখনও ১৯ মে ১৯৬১ সাল মনে রাখা হয় না। বিস্মৃত হয়েছে এগারোজন তরুণ তরুণীর রক্তদান ও জীবন দানের স্মৃতি। ১৪০০ বছরের বেশিদিন চলা বঙ্গাব্দ যাদের দখলে , সেই বাঙ্গালীর ভাষাকে ধ্রুপদী না বলার কোন‌ও কারণ থাকত না। মাতৃভাষা আম্মা বুলির কাছে হেরে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের উইকিপিডিয়ানদের মতামত, বাংলা উইকিপিডিয়ায় বাংলাদেশীদের রমরমা চলছে, ফলত প্রতিটি বাংলা নিবন্ধে আরবি মিশ্রিত বাঙ্গলা ভাষার আধিক্য বেশি, হারিয়ে যেতে বসেছে সনাতনী ধ্রুপদী বাঙ্গলা শব্দভাণ্ডার।