​বাঙ্গালী যুবকের তৈরি জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার মূর্তি পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে

0
353

বঙ্গদেশ ডেস্ক:এই মাস পেরলেই রথযাত্রা। জুলাই ১ তারিখে রথযাত্রা। এদিন রথে চড়ে মাসির বাড়ি পৌঁছাবেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। সেই উপলক্ষে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের আঠাশ বছরের যুবক সুদীপ্ত সরকার ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তাঁর সৃষ্টিকর্ম নিয়ে। সুদীপ্তর নিপুণ ভাস্কর্যে রূপ পেয়েছে মাত্র তিন ফুটের মহাপ্রভু জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। তাঁর তৈরি এরকম দশটি মূর্তি পাড়ি দিচ্ছে জার্মান,অস্ট্রেলিয়া,দক্ষিণ আমেরিকা, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ ও নেপাল। শেষ পর্ষায়ে তুলির টানে রূপ পাবে মূর্তিগুলো।

রঘুনাথগঞ্জ দু’নম্বর ব্লকের তেঘড়ির যুবক সুদীপ্ত সরকার ওরফে বাপ্পা দাস ২০০৯ সালে নিজের বাড়িতে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার কাঠের মূর্তি দেখে প্রথম মূর্তি গড়তে শুরু করেন। প্রথম থেকেই তিনি দেবদেবীর কাঠের মূর্তি তৈরি করতেন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি এই মূর্তি গড়ার কাজকে ব্যবসা হিসাবে গ্রহণ করেন। সারা বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০টি মূর্তি সরবরাহের জন্য ডাক পান তিনি। মুর্শিদাবাদের বাইরে হাওড়া, কোচবিহা পাশাপাশি বিহার ঝাড়খণ্ড, পাঞ্জাব, দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ ও বেঙ্গালুরুতেও বাপ্পা দাসের কাঠের মূর্তির ব্যাপক চাহিদা।

১ জুলাই রথযাত্রার (Rath Yatra) আগে জগন্নাথ-বলরামপুর-সুভদ্রার দশটি মূর্তি পাড়ি দিচ্ছে জার্মান, দক্ষিণ আমেরিকা, মালয়েশিয়া, নেপাল, বাংলাদেশ ও অস্টেলিয়ায়। নিমকাঠ দিয়ে তৈরি এই মূর্তিগুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা ৩ ফুট। শুধুমাত্র কাঠের উপর খোদাই করে কোনোরকম পেরেক ব্যবহার না করে মহাপ্রভুর মূর্তি হয়। তারপর সেই মূর্তিতে রং করা হয় এবং পেরেক বিহীন নিমকাঠ দিয়ে ৮ ইঞ্চির উচ্চতার কম মহাপ্রভূর মূর্তি তৈরি হয় না। তিন ফুটের তৈরি এই মহাপ্রভুর মূর্তির দাম ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। আড়াই ফুটের মূর্তির দাম ৮০ হাজার টাকা। এছাড়া ৮ ইঞ্চির মূর্তির দাম ৮ হাজার টাকা। ফাল্গুন মাস থেকে রথযাত্রার জন্য মূর্তির অর্ডার নিতে শুরু করেন।

সারা বছরে মোট ১০০ টি বিভিন্ন আকারের কাঠের মূর্তি তৈরি করেন বাপ্পা দাস। বড় সাইজের একটি মূর্তি গড়তে তাঁর সময় লাগে প্রায় একমাসের কাছাকাছি। ছোট সাইজের জন্য তিনি সময় নেন দশ থেকে বারো দিন। তিন দেবদেবীর মূর্তির পোশাক ও গয়না তৈরিতে তাঁকে সাহায্য করেন স্ত্রী অঙ্কিতা সরকার। বাপ্পাবাবু বলেছেন,বাড়ির মহাপ্রভুর মূর্তি দেখে প্রথম শিশু কাঠ দিয়ে মূর্তি তৈরি করতে শুরু করি। কারও কাছ থেকে কোনোরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই কাজ শুরু করি। তিনি মনে করেন মহাপ্রভু নিজেই তাঁর দাসকে দিয়ে মূর্তি গড়িয়ে নিচ্ছেন। তাই তিনি মহাপ্রভুর দাস হিসাবে সকলের কাছে সুদীপ্ত ওরফে বাপ্পা দাস পরিচিত। তাঁর কথায়, যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন মহাপ্রভুর দাস হিসাবেই সেবা করে যাব।