৯টি রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে আবেদন সুপ্রিম কোর্টে

0
834

বঙ্গদেশ ডেস্ক: দেশের ৯টি রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন হাইকোর্টে মুলতুবি রয়েছে একাধিক আবেদন। হাইকোর্টের আবেদনগুলিকে সুপ্রিম কোর্টের হাতে স্থানান্তর করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আবেদন সম্পর্কিত সমস্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তর করার জন্যও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে আবেদন দাখিল

সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন দাখিল করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনোরিটিজ অ্যাক্ট, ১৯৯২-এ যে বিধানগুলি মেনে সংখ্যালঘুদের বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়, সেগুলি অবিলম্বে বাতিল করা হোক। এছাড়াও বলা হয়েছে, যদি আইনটি বাতিল না করা হয় তাহলে ৯টি রাজ্য, যেখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে, সেখানে হিন্দুদের রাজ্য-ভিত্তিক সংখ্যালঘুর মর্যাদা অবিলম্বে প্রদান করা হোক। যাতে করে ওই রাজ্যগুলির হিন্দুরা সংখ্যালঘু সুযোগ সুবিধা পান।

ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনোরিটিজ অ্যাক্ট, ১৯৯২-কে চ্যালেঞ্চ জানিয়ে ওই রাজ্যগুলির হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলাগুলিকে সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

৯টি রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু ঘোষণার দাবি

বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়ের দায়ের করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু আইনের ধারা ২ (সি)-এর অধীনে মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ এবং জৈনদের সংখ্যালঘু হিসাবে ঘোষণা করেছে, কিন্তু ইহুদিদের সংখ্যালঘু হিসাবে ঘোষণা করেনি। আরও বলা হয়েছে, দেশের ৯টি রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হলেও তারা কিন্তু সংখ্যালঘুদের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

আবেদনে আরও বলা হয়েছে, লাদাখ, মিজোরাম, লক্ষদ্বীপ, কাশ্মীর, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, অরুণাচলপ্রদেশ, পঞ্জাব এবং মণিপুরে মোট জনসংখ্যার নিরিখে হিন্দুরা সংখ্যালঘু। আবেদনকারী জানিয়েছেন, এই রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘু হওয়ায় হিন্দুদের সংখ্যালঘুদের সুবিধা দেওয়া উচিত। কিন্তু সেই সুবিধা থেকে তাদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে এবং সেই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠকেই সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।


“এই মামলার মামলার বিচার সুপ্রিম কোর্টে হওয়া উচিত”

আবেদনকারীর বক্তব্য, এমন পরিস্থিতিতে ভাষাগত ও ধর্মের ভিত্তিতে রাজ্যভিত্তিক সংখ্যালঘুদের মর্যাদা দেওয়া উচিত। অর্থাৎ, এই সংখ্যালঘু মর্যাদা রাজ্য- ভিত্তিক বিবেচনা করা উচিত। সুপ্রিম কোর্টে এমন নির্দেশ দেওয়া হোক, যাতে সংখ্যালঘুদের মর্যাদা ভাষা ও ধর্মের ভিত্তিতে রাজ্য অনুযায়ী করা হয়।

অশ্বিনী উপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আবেদন করার আগেই, ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি অস্বীকার করেছিল শীর্ষ আদালত। সে বার আবেদনকারীকে দিল্লি হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছিল। আবেদনকারী জানিয়েছেন, যে দিল্লি হাইকোর্ট, মেঘালয় হাইকোর্ট এবং গুয়াহাটি হাইকোর্টে এই সম্পর্কিত একাধিক মামলা বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। সেগুলোকে অতি সত্বর সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তর করা উচিত।

আবেদনকারীর যুক্তি, বিভিন্ন হাইকোর্টে দায়ের করা মামলা থেকে বিভিন্ন রকমের আলোলোচনা আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিতর্ক এড়াতে সুপ্রিম কোর্টেই মামলার শুনানি হওয়া উচিত। আবেদনকারী বলেন, ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনোরিটিজ অ্যাক্ট, ১৯৯২-এর ধারা ২(সি)-কে সংবিধানিক হিসাবে ঘোষণা করতে হবে, যার অধীনেই সংখ্যালঘুদের মর্যাদা দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গেই ৯টি রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া উচিত বলেও তিনি দাবি করেছেন।

সংখ্যালঘু শিক্ষা আইনকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে
২০২০ সালের ২৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি আবেদনের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। যেখানে আবেদনকারী জাতীয় সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইনকে কড়াভাবে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।

আবেদনকারী জানিয়েছিলেন, এই আইনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্য পর্যায়ে সংখ্যালঘুদের স্বীকৃতি দিতে অসফল। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এসকে কউলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে মামলা দায়ের করা আবেদনের বিষয়ে নোটিশ জারি করে ছ’সপ্তাহের মধ্যে উত্তর দিতে বলেছিল।