জগন রেড্ডির নেতৃত্বে খ্রীষ্টান ভোট ব্যাঙ্ক নির্মাণ: হিন্দু মন্দির ধ্বংসের পিছনের রাজনীতি

– সন্দীপ বালকৃষ্ণ

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অধ্যায় ২: ভারতীয় ইউনিয়নের মধ্যেই একটি খ্রিস্টান রাজ্য

বর্তমান অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যটি ভারতীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি খ্রিস্টান রাজ্য একজন ধর্মপ্রাণ অনুশীলনরত খ্রিস্টান, যাঁর সরকারে থাকা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিবৃন্দরাও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী, তাঁর দ্বারা এই কার্য সম্পন্ন হয়েছে এবং চার্চমিশনারী প্রতিষ্ঠানগুলির অদৃশ্য ক্ষমতা গোটা রাজ্যে এক বিশাল আকার ধারণ করেছে

হিন্দু দেবদেবীদেরকে নিয়ে যে নিরবিচ্ছিন্ন অবিস্মরণীয় ধ্বংসলীলা চলছে তার জন্য কেবল অন্ধ্রের খ্রিস্টানরাই দায়ী প্রকৃতপক্ষে, এই ধ্বংসলীলাই বাস্তবচিত্র নয়, এগুলি সম্পূর্ণ চিত্র নয়, বরং “বিশুদ্ধ” খ্রিস্টান রাজ্যে অধীনে হিন্দুদের কী অবস্থা হবে তার একটি ক্ষুদ্র চিত্র এই বিষয়ে ভাবুন যখন উত্তরপূর্বের রাজনীতিবিদরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা বাইবেলের দ্বারা শপথ গ্ৰহণ করেছিলেন

২০১৬ সনে আমি একটি আনুষ্ঠানিক সমীক্ষা করেছিলাম, যার ফলাফল থেকে জানা গেছে যে, উপকূলীয় অন্ধ্র প্রদেশের ত্রিশ শতাংশ হিন্দু খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে এই পরিসংখ্যানে যে সমস্ত খ্রিস্টানরা নিজেদের হিন্দু নাম রেখে দিয়েছিল তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি যে কোনও একজন শুধু অনুমান করতে পারেন যে এই সংখ্যাটি বর্তমানে কী পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে

সর্বাধিক ভয়াবহ রূপটিই এখন বাস্তবচিত্র হিসাবে ফুটে উঠেছে

হিন্দু দেবদেবীদের বিরুদ্ধে এই নিরবিচ্ছিন্ন আক্রমণগুলি যদি এই ধরনের উন্মুক্ততা সহ, এই ধরনের দ্রুততার সহিত, এত ঘনঘন এবং একই সাথে একই রকম পদ্ধতিতে সংগঠিত হতে থাকে, তবে তাঁরা এই অনিবার্য সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন:

ভয়াবহ পরিমাণ হিন্দু ধর্মান্তরিত হয়েছেন

ধর্মান্তরিত করার উদ্দেশ্যে তাঁদের পূর্বের ধর্মীয় ভাইদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের ন্যয় আকস্মিক হৃদয়হীন আচরণ করা হয়েছে

জগনের প্রতিরক্ষামূলক, রাজনৈতিক খ্রিস্টান শক্তির সাহায্যে চার্চ প্রতিষ্ঠানগুলি প্রকাশ্যে তাদের ক্ষমতা জাহির করছে

ভারতের সার্বভৌম অখণ্ড একতার সাংস্কৃতিক এবং সাংবিধানিক ভিত্তির প্রতি চার্চগুলি একটি সার্বজনীন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে

আরও স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, সমস্যাগুলির বিষয়বস্তু মানুষ আরও “ভালো” ধর্মে রূপান্তরিত হচ্ছে কিংবা স্বাস্থ্য পরিষেবা অথবা শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়ে নয় সর্বোপরি, এটি একটি আধ্যাত্মিক বিজয় প্রকৃতপক্ষে, যখন রাম স্বরূপ এবং সীতারাম গোয়েল এবং অরুণ শৌরির মতো লেখকরা লেখেন যে, খ্রিস্টধর্মতত্ত্ব হল একটি মুখোশ স্বরূপ, যা সাম্রাজ্যবাদকে খ্রিস্টধর্মের আড়ালে লুকিয়ে রাখে, তখন তাঁরা ঠিক এই কথাটিই বলতে চান আসলে, খ্রিস্টধর্মের সুদীর্ঘায়িত ইতিহাস অনুযায়ী ধর্মতত্ত্ব হল একটি বিভ্রান্তিকর প্রবন্ধ যা রাজনৈতিক অধিকারের উদ্দেশ্যে একটি সুনিশ্চিত রক্তক্ষয়ী সংগ্ৰামের পূর্বাভাস দেয় অন্ধ্রে যা ঘটেছিল তা হল: একটি নগ্ন ও উন্মুক্ত রাজনৈতিক ক্ষমতার দখল এবং সমন্বয়সাধন

জগমোহন রেড্ডি যখন অকল্পনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন একজন প্রবীণ পন্ডিত, যাঁকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি, তিনি তেলেগুতে মাত্র তিনটি শব্দ বলেছিলেনঅন্ধ্র সর্বনাশানম্ অয্যন্তিঅন্ধ্রের সর্বনাশ চলে এসেছে

যাঁরা ইতিহাস অধ্যয়ন করেছেন তাঁদের মানতেই হবে যে, ক্রমবর্ধমানভাবে জগন রেড্ডি রোমান সম্রাট কনস্ট্যানটাইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে গিয়েছিলেন, তবে কনস্ট্যানটাইনের ঈশ্বরের প্রতি আস্থা, আগ্ৰহ এবং লড়াই করার ক্ষমতা ছিল খ্রিস্টধর্মকে প্যাগন রোমের রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করার পর কনস্ট্যানটাইন প্রকাশ্যে কী করেছিল, তার বিশদ ও নৃশংস বিবরণ আমি অন্য  প্রবন্ধে বলেছি

এছাড়াও, অন্ধ্রে হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধে অবিরাম খ্রিস্টান হামলার একটি বিশুদ্ধ রাজনৈতিক দিক রয়েছে তর্কসাপেক্ষভাবে বলা যায় যে, জগন রেড্ডির মতো রাজনীতিবিদ জানেন যে, নির্বাচনী লড়াইয়ে এককভাবে শক্তিশালী বিজেপির সম্মুখীন হওয়াটা এক কষ্টসাধ্য লড়াই তিনি সম্ভবত এটিও জানেন যে, অন্ধ্রে বিজেপি ক্ষমতায় এলে, সমস্ত রাস্তাই বন্ধ হয়ে যাবে সুতরাং, তাঁর সামনে একটি কার্যকরী বিকল্প হল যে, ২০২৪ এর মধ্যে তিনি যতটা সম্ভব হিন্দু আস্থা অর্জন করতে পারেন, নচেৎ তিনি একচেটিয়া, খাঁটি খ্রিস্টান ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করেছেন, যা তাঁর একমাত্র সম্বল হবে

অধ্যায় ৩: তিনটি পরিকল্পনার ধ্বংস

হিন্দু নামধারী মুখ্যমন্ত্রীরা যাঁরা তাঁদের হিন্দুত্বকে প্রকাশ করার জন্য এবং তাঁরা “সংখ্যালঘুদের” রক্ষার্থে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে নিশ্চিত করার জন্য যে কোনও পর্যায়ে যান, তাঁদের ঠিক বিপরীত জগন খ্রিস্টধর্মটিকে তাঁর জামার হাতাতে পরিধান করে প্রদর্শন করেন

এটি আমাদের সংখ্যালঘুদের প্রতি ধারণাটিকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে মিশনারীগুলি হিন্দু গ্ৰামগুলিকে খ্রিস্টধর্মে রূপান্তরিত করে দেওয়ার সময়ও কি তাঁরা সংখ্যালঘু থাকে? এই গ্ৰামগুলিতে অবস্থিত মন্দির এবং মূর্তিগুলি এবং অন্যান্য সনাতন প্রতিষ্ঠানগুলির কী হবে?

এই পরিণতিটি স্বামী বিবেকানন্দের মতো আমাদের সাধু, মহাপন্ডিত এবং চিন্তাবিদরা পূর্বেই উপলব্ধি করেছিলেন প্রকৃতপক্ষে, পি. ভি. কেন এবং ডি. ভি. গুন্ডাপ্পা এর মতো পন্ডিতগণ ভারতবর্ষের ন্যয় গভীর ধার্মিক রাষ্ট্রীয় সভ্যতায় ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের মতো একটি ভিন্নগ্ৰহী, ঈশ্বরবিহীণ এবং হৃদয়হীন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অযোগ্যতা এবং মারাত্মক বিপদ সম্পর্কে বারবার সতর্ক করেছিলেন সাত দশক পরে এর ফলাফল খুব স্পষ্ট: ১৯৫০ সালে আমরা এমন সভ্য রাষ্ট্রের উপর যে অপরীক্ষিত গণতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছিলাম, তার সবচেয়ে মারাত্মক শিকার হয়েছে হিন্দুরাই

এই সাত দশক ধরে প্রতিনিয়তই দেখতে পাওয়া গেছে যে, হিন্দু সমাজ দুটি প্রধান পদ্ধতিতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে:

নির্বোধ ও রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত জাতিবৈষম্য তুলনামূলকভাবে হ্রাস পেলেও পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাসকে তাঁরা সঙ্গে নিয়ে গেছেন

দিনের পর দিন, বর্তমানে ধর্মান্তরিত হওয়া খ্রিস্টানরা প্রবল উৎসাহ, বর্বরতার এবং পূর্বে তাঁদের মধ্যে অনুপস্থিত একটি ধর্মপ্রাণ মানসিকতার সাথে তাঁদের পূর্ব ধর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করছে

এবং চূড়ান্ত যুদ্ধক্ষেত্র জগননিয়ন্ত্রিত অন্ধ্রতে এই দুটি কারণই মাত্রাতিরিক্তভাবে এবং শারীরিকভাবে ফুটে উঠেছে

বর্তমানে উদঘাটিত অন্ধ্রের পরিস্থিতি উপলব্ধি করে বলা যায় যে, খ্রিস্টান রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলি প্রধান তিনটি পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে:

রাজনৈতিক: রাষ্ট্রীয় শক্তিবলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বিপুল সংখ্যক হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করা হয় এই জঘন্য প্রচেষ্টার সাথে সাথে চলতে থাকে চিহ্নিত করে নিপীড়ন, হিন্দু হিসাবে চিহ্নিতকরণের পরে তাঁদের বিরুদ্ধে সহিংস আক্রমণ

সামাজিক: সম্পূর্ণরূপে ধূলিসাৎ না হওয়া পর্যন্ত ইতিপূর্বেই খন্ডিত হিন্দু সমাজের প্রায় সম্পূর্ণ ভাঙ্গনের ফলে হতাশার কিনারার দিকে অগ্ৰসর হচ্ছে, যতক্ষণ না শকুনরা এই সমাজের কঙ্কাল টুকু অবশিষ্ট রাখছে এ বিষয়ে চিন্তা করুন এই মুহুর্তে, রেড্ডি সম্প্রদায় “রেড্ডি খ্রিস্টান” জগনমোহন রেড্ডির প্রধান এবং সর্বাধিক শক্তিশালী সমর্থক পরিকাঠামোতে পরিণত হয়েছে “রেড্ডি খ্রিস্টানরা” যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে এবং সংখ্যালঘু “রেড্ডি হিন্দুরা” ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকার করলে কী হবে?

ব্যক্তিগত: যেমনটি আমরা ইতিমধ্যেই দেখতে পেয়েছি যে, ধর্মান্তকরণ বর্তমানে ধর্ম, ঈশ্বর, স্বাস্থ্যসেবা অথবা শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত নয়, বিশেষত অন্ধ্রে, এই ধর্মান্তকরণ রাতারাতি ভালো অর্থোপার্জনের জন্য একটি লাভজনক নব্য পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে মিশনারীগুলি নতুন ধর্মান্তকরণের উদ্দেশ্যে ধূর্ত কৌশল ব্যবহারকারী স্বার্থান্বেষী এই বহুস্তরীয় প্রচারকারী দালালগুলির সুরক্ষা সুনিশ্চিত করেছে অন্যদিকে, যে ব্যক্তিগণ এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী এই ভয়াবহ বিপদ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষত্বহীন করে দেওয়া হয়েছে

সুস্পষ্ট গৃহযুদ্ধের সূচনার পূর্ববর্তী বিরোধের নব্য পর্যায়ের ভিত্তিতে বর্তমানে অন্ধ্রের সামগ্ৰিক চিত্রটি রুয়ান্ডা সমাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে গেছে এবং অবশেষে খ্রিস্টানরা এই রাজ্যটিকে নিজেদের বলে দাবি করেছে

আমি কী বলতে চাইছি তার সম্পূর্ণ বিশদ বিবরণের জন্য রুয়ান্ডা গণহত্যা সংক্রান্ত ভয়াবহ অধ্যায়টি পড়ুন পড়ুন এবং মনে রাখুন

 

অধ্যায় ৪: গভীর নিদ্রা ধ্বংসলীলা সুনিশ্চিত করে

প্রধানত তিনটি সুস্পষ্ট কারণের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশে হিন্দু দেবদেবীদের নিরবিচ্ছিন্ন ভাঙচুরের সবচেয়ে মারাত্মক উদাহরণগুলি আমি ইচ্ছাকৃতভাবে তালিকাভুক্ত করি নি

প্রথমত: প্রকৃতপক্ষে, এই ঘটনাবলী কেবল ভাঙচুর ছিল না, বরং এগুলি ছিল রেডিওতে অনুষ্ঠিত দৈনিক পর্বের ন্যয় প্রতিনিয়ত সংগঠিত হিন্দু নিপীড়নের এক পরিপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ

দ্বিতীয় কারণ: এমনকি ভিডিওর মাধ্যমে যে কোনও সংবাদের স্থানীয় স্তরে এবং বিশ্বব্যাপী প্রচারের যুগে এ জাতীয় তালিকা প্রকাশ করা বাড়াবাড়ি হত

তৃতীয় কারণ: এই হিন্দু নিপীড়নের উদাহরণগুলি কেবল আমাদের বক্তব্যের দ্বারাই ছড়িয়ে পড়বে এবং সৌভাগ্যক্রমে প্রচুর ওয়েবসাইট এবং পোর্টাল রেয়েছে, যেখানে এগুলী পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নথিভুক্ত হয়ে থাকবে

আমি শুধু এটুকুই বলব: ইতিহাস বইগুলিতে মধ্যযুগীয় তুরুস্ক বর্বরদের দ্বারা হাজার হাজার মন্দির ধ্বংসের মজবুত এবং সরাসরি প্রমাণ সহ অধ্যায়গুলি পাঠ করার সময় আপনি যদি চান, তবে দয়া করে জগন রেড্ডি শাসিত অন্ধ্রের অধ্যায়টি পড়বেন অন্ততঃ ইতিহাসের সেই বেদনাদায়ক পর্যায়ে, আমাদের পূর্বপুরুষরা রক্তের শেষ বিন্দু এবং শেষ মানুষটি পর্যন্ত মহান যোদ্ধার ন্যয় সংগ্ৰাম করেছিলেন বর্তমানে তাঁদের বংশধররা হাহাকার করে কাঁদছে

এবং প্রলয়া ভেমা রেড্ডি আজ জীবিত থাকলে কী প্রতিক্রিয়া দিতেন এই ভেবে আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই

পূর্বোক্ত তেলেগু পন্ডিতগণ আমাকে যে নির্মম সত্যটি বলেছিলেন তা হল: হিন্দুভুলু তামা নাসানানি ভোটু ভেসি তেচ্ছুকুন্নারু– ‌হিন্দুরা তাঁদের ভোট দিয়ে তাঁদের ধ্বংসকারীকে ক্ষমতায় এনেছে

সত্যি কথা বলতে গেলে, জগনমোহন রেড্ডি বিপুল সংখ্যক হিন্দু ভোট ব্যতীত এই মাত্রায় নির্বাচনে বিজয় অর্জন করতে পারতেন নাআরেকটি সত্য হল যে, তিনি খ্রিস্টান হিসাবে নয়, চন্দ্রবাবু নাইডুর দুর্নীতিবাজ সরকারের হাত থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের মুক্তিদাতা হিসাবে প্রচার করেছিলেন তবুও, প্রায় দুই বছর পর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর স্মারক কী ছিল? অন্ধ্রপ্রদেশে রাতারাতি কেন হিন্দু বিরোধী হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাঁর পিতার শাসনকালেও দেখা যায় নি?

জগন রেড্ডিকে সম্পূর্ণ দোষ দেওয়া আংশিকভাবে অন্যায় হবে আমরা যখন অন্যদিকটিও তদন্ত করি, তখন অন্ধ্রের পরিস্থিতির সম্পূর্ণ বাস্তবচিত্রটি স্পষ্ট হয় জনৈক স্বামী একজন প্রতিনিধি হিসাবে জগন রেড্ডিকে বিপুল সংখ্যক হিন্দু ভোট সরবরাহ করেন সেই সময় থেকেই এই স্বামী সুসজ্জিত এবং শক্তিশালী হয়েছেনএটি স্পষ্ট যে, তাঁর মতো স্বামীরা রাজতন্ত্রের ঠিক বিপরীত গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোতে রাজনৈতিক ক্ষমতার স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী গতি বুঝতে পারেন না

অন্ধ্রে এই বাস্তবচিত্রটি ইতিমধ্যে ছিন্নবিচ্ছিন্ন সনাতন সমাজের রাজ্যের দুঃখজনক প্রতিচ্ছবি তবে এরও থেকে খারাপ অনেককিছু আছে

কয়েকমাস আগে, অন্ধ্র থেকে প্রকাশিত একটি পোস্টার এবং একটি ইমেল বেশ ভালোরকম অর্থ উপার্জন করে এটি অন্ধ্রপ্রদেশের বৈদিক ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের জগন রেড্ডির প্রতি পারস্পরিক সংহতি বোঝানোর একটি বিবৃতি ছিল, যাঁকে তাঁরা একরকম ত্রাণকর্তা হিসাবে বিবেচনা করতেন

সম্ভবত, এই নাদিরকে বর্ণনা করার সর্বোত্তম উপায় হল ডক্টর. এস. এল. ভিরাপ্পার সুনিপুণ মহাকাব্য, থান্টুর অর্চকা রামা ভট্টকে স্মরণ করা সরকার মন্দিরগুলি দখল করে নেওয়ার পরে এই জাতীয় হাজার হাজার অর্চকের প্রকৃতপক্ষেই করুণ পরিণতি হয় সরকার তাঁদের সামান্য ভাতা প্রদান করে এবং তাঁদের মধ্যে অনেকেই তাঁদের প্রাচীন ধর্ম ত্যাগ করেন বিশাল বিশাল মন্দিরগুলি অচলাবস্থায় পড়ে থাকে এবং মন্দিরের অতি সুন্দর মূর্তিগুলি চোর এবং পাচারকারীদের সম্পত্তিতে পরিণত হয় তবে, রামা ভট্টের মতো কিছু সাহসী ব্যক্তিরা অবিচল রয়েছেন: তিনি সরকারী ভাতা অস্বীকার করেন এবং কোনওমতে প্রাচীন হয়সালা মন্দিরের বংশগত অর্চক হিসাবে তিনি তাঁর ধর্মীয় কর্তব্য সম্পাদন করে চলেছেন তিনি বলেছেন যে, “কেরানিকে ঘুঁষ দেওয়ার পরে সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থে কি আমার মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানো উচিত? আমি এখনও পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে একটি পয়সাও গ্ৰহণ করি নি আর আমি কখনও এটি গ্ৰহণ করব না মহান এবং খ্যাতিমান মন্দিরগুলির অর্চকরা ধর্মঘট করেছিল সরকারের কাছে তাঁদের দাবি: সরকার আমাদের যা দেয় তাতে কিছুই হয় না সরকার যদি তালুক এবং পৌর দপ্তরগুলির কোনও ঝাড়ুদারের সমান বেতন দেয় তবে আমরা পূজা কর্ম বন্ধ করে দেব অন্যভাবে বলা যায় যে, তাঁরা তাঁদের কাজের সাথে কীসের তুলনা করছেন? তাঁরা পূজা করার জন্য যদি ধর্মঘট করেন, তবে তাঁদের অন্তরে কোনও ভক্তি আছে কি?”

এর বাইরে কিছু বিবৃতি দেওয়া অপ্রয়োজনীয়

উপসংহার

এমতাবস্থায়, বিশেষ করে রাম তীর্থমে ভয়াবহ ধ্বংসলীলা সংগঠিত হওয়ার পর চিন্নার জিয়ার স্বামী, অন্যান্য হিন্দু স্বামীরা, এবং পবন কল্যাণ ও বিজেপির সুনীল দেওধরের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বগুলির চেতনা জেগে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে, এটাই একটি স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয় অত্যন্ত শ্রদ্ধা এবং নিষ্ঠার সাথে বলছি, আবারও এই বিষয়েও অনেক দেরি হয়ে গেছেএই মানুষদের ময়নাতদন্ত নয়, প্রতিরোধমূলক সতর্কতাই আদর্শ কর্মসূচি হওয়া উচিত যাইহোক, সবচেয়ে লক্ষণীয় আনন্দের বিষয় হল যে, এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলি একটি কঠোর প্রতিবাদ গড়ে তুলেছে, যা কেবল স্বল্পমেয়াদী কারণ আসল কাজটি অন্য রাজ্যের সাথে সম্পর্কিত

প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে, সনাতম সমাজের এই আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শকদের অতিঅবশ্যই মিশনারী জানোয়ারটির প্রকৃত রূপটি ধারণ করতে হবে এবং সভ্যতা ধ্বংসের মতবাদের মূল বিষয়টিকে বুঝতে হবে ততদিন পর্যন্ত, বৃহত্তর ও ক্ষুদ্র হিন্দু জনগোষ্ঠী এবং সম্প্রদায় দ্বারা আরোপিত প্রবল প্রতিরোধও ক্ষণস্থায়ী হবে এই সন্ন্যাসী, স্বামী এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দর অবশ্যই খ্রিস্টান রাজ্যে, যার বিরুদ্ধে তাঁদের সংগ্ৰাম করতে হবে, তার বাস্তবচিত্রটি সম্পর্কে অধ্যয়ন করতে হবে

এটাই তাঁদের জন্য শেষ সুযোগ

সন্দীপ বালকৃষ্ণ লেখক ও চিন্তাবিদ। ধর্ম ডিসপ্যাচে প্রকাশিত মূল লেখাটি থেকে অনুবাদ করেছেন অর্ণব।