বঙ্গদেশ ডেস্ক: আল কায়দা যোগে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থেকে গ্রেপ্তার আরও এক। এনআইএ এবং রাজ্য পুলিশের এসটিএফ যৌথ অভিযান চালিয়ে শামিম আনসারি নামে বছর একুশের ওই যুবককে জঙ্গিযোগ সন্দেহে শুক্রবারই অস্ত্রসমেত গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সূত্র জানতে চাইছিলেন তদন্তকারীরা। শেষমেশ আল কায়দা যোগে ধৃত জেলার ৬ সদস্যের সঙ্গেই যে কাজ করত শামিম, সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। মুর্শিদাবাদ সিজেএম আদালতে পেশ করে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এনআইএ
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি, ডোমকল এবং রানিনগর ও কেরলের এর্নাকুলাম থেকে মোট ৯ জন আলকায়দা অপারেটিভকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। কেরল থেকে ধৃত ৩ জঙ্গিও আদতে মুর্শিদাবাদেরই বাসিন্দা বলে জানা যায়। তাদের থেকে উদ্ধার হওয়া অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক এবং সেসব তৈরির বইপত্র, জেহাদি নথিপত্র থেকে প্রাথমিক তদন্তে এনোআইএ-র ধারণা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বড়সড় আত্মঘাতী হামলার ছক কষছিল এই জঙ্গিরা। নিজেদের মানব বোমা হিসেবে ব্যবহার করাই ছিল এদের লক্ষ্য। মূলত মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্র করে বাংলায় আলকায়দার ঘাঁটি বিস্তারের পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা। পাশাপাশি বাংলায় বসে রাজধানী শহর দিল্লিতেও বড় হামলার ছক কষেছিল তারা।
সংলগ্ন এলাকা ছাড়াও জঙ্গিদের নিশানায় ছিল মুম্বই এবং কোচি। এএনআই জানিয়েছিল, ধৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস, নথিপত্র, জিহাদি সাহিত্য, ধারালো অস্ত্র, দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, স্থানীয় এলাকা থেকে বানানো শরীরে পড়ার বর্ম, ঘরে বসে বিস্ফোরক বানানোর বিভিন্ন বই এবং নথিপত্র—— এইসব কিছু উদ্ধার করা হয়েছে। হামলার জন্য টাকা জোগাড় করাও শুরু করেছিল তারা। এই ৯ জঙ্গি গ্রেফতারের পর তদন্তে নেমে এএনআই জানতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই জঙ্গিদের ট্রেনিং দিত পাকিস্তানে থাকা আলকায়দার মাথারা। নির্দেশ ছিল ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি হামলা করার। পাশাপাশি বাংলা থেকে নতুন জিহাদিদের আলকায়দায় নিযুক্ত করার কাজও করত এই জঙ্গিরা।
এনআইএ সূত্রে খবর যে ৯ জঙ্গিকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হল মুরশিদ হাসান, ইয়াকুব বিশ্বাস, মোশারফ হোসেন, নাজমুস সাকিব, আবু সুফিয়ান, মইনুল মণ্ডল, লিউ ইয়ান আহমেদ, আল মামুন কমল এবং আতিতুর রহমান। এবার এই তালিকায় নাম জুড়েছে শামিম আনসারির।আর এ নিয়ে আল কায়দা জঙ্গিযোগ সন্দেহে বাংলার মুর্শিদাবাদ থেকেই ধৃত মোট ৭ যুবক। তবে দেশজুড়ে এত বড় একটা জঙ্গিচক্রের হদিশ পাওয়ার পর তল্লাশি আরও জোরদার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। বাংলা এবং কেরলের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও অন্যান্য রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিকেও নজরে আনা হচ্ছে। চলছে ধরপাকড়ও। শামিমের পাশাপাশি আরও ৩ জন যুবককে আটক করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে তাদের সঙ্গে আদৌ আল কায়দা বা অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা।