“পাকিস্তান মিলিটারীর তালিবান ও আল-কায়দার সাথে ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল” – আত্মজীবনীতে বিস্ফোরক ওবামা

0
969

বঙ্গদেশ ডেস্ক :- বারাক ওবামা সম্প্রতি তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থর ১-ম খণ্ড উন্মোচন করেছেন: দ্যা প্রমিসড ল্যান্ড (একটি প্রতিশ্রুত ভূভাগ)। বইটিতে থাকা বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি সমূহের কারণে এটির খবর ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সাথে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা, বিভিন্ন বিষয়ে মার্কিন স্টিরিওটাইপসের মুখোশ উন্মোচন থেকে শুরু করে সমসাময়িক বিশ্বে প্রভাব ফেলতে পারে এরকম বহু ঘটনা তুলে ধরা এই বইটি সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতির মনের এক জানালা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যান্য বিষয়গুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যে ঘটনাটির বারাক ওবামা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছিলেন তা হ’ল একটি মার্কিন অপারেশন। এই অপারেশানেই ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়েছিল। এই গোপনীয় অভিযান সম্পর্কে পাকিস্তানকে অবহিত করার বিষয়ে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতির মধ্যে সংশয় ছিল। সেকারণেই তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতির তালে তাল মিলিয়ে, পাক সরকারকে এ বিষয়ে কোনো খবর দেওয়া হয়নি।

ওবামা তাঁর বইতে, ২০১১ সালে আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার বিবরণ দিয়েছেন। তবে ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভবত আরও উৎসাহজনক বিষয় হ’ল, ওবামার এবং আরো বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে খোলাখুলিভাবে সন্দেহ প্রকাশ।

ওবামা, পাকিস্তানী সেনার প্রতি আমেরিকার ভুলগুলো তুলে ধরেছেন

ওবামা তাঁর স্মৃতিগ্রন্থে পাকিস্তানের সাথে আমেরিকার বিবর্ণ হয়ে ওঠা সম্পর্ক ও অবিশ্বাসের একটা ঝলক তুলে ধরেছেন। প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি সরাসরিভাবে উল্লেখ করেছেন যে, যদিও তাঁরা সন্ত্রাসবাদবিরোধী একাধিক অভিযান চালাতে পাকিস্তানের সাথে মিত্রতা করেছিল এবং দেশটি আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনাবাহিনীর এক গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসাবে কাজ করেছে, তবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যুদ্ধে এটি আর বিশ্বস্ত অংশীদার হিসাবে বিবেচিত হতে পারে না।

ওবামা লিখেছিলেন, “পাকিস্তানকে অবহিত করা হয়েছিল এই আশঙ্কা প্রকাশ করে, যে পাকিস্তানে লাদেন লুকিয়ে থাকতে পারে”। এরপরেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওয়েস্ট পয়েন্টের সমতুল্য ইন্সটিটিউট থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে লাদেন মারা যায়। “পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সেই অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থান কেবল এই সম্ভাবনাকেই আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল যে, আমরা পাকিস্তানিদের যা কিছু বলেছিলাম তা আমাদের লক্ষ্য থেকে দূরে রাখতেই ব্যবহার করা হয়েছিল” ওবামা লিখেছেন এই মিশন সম্পর্কে। এটি ফাঁস হওয়ায় মুখ পুড়েছে পাকিস্তানের।

পাক সেনা, জঙ্গীদের ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে

“আমাদের আর‌ও একটি প্রতিবন্ধকতা ছিল: আমরা যে কোন বিকল্প বেছে নিই না কেন তাতে পাকিস্তানিদের জড়িত করা সম্ভব ছিল না। যদিও পাকিস্তান সরকার সন্ত্রাসবিরোধী বেশ কয়েকটা অভিযানে আমাদের সাথে সহযোগিতা করেছিল এবং আফগানিস্তানে আমাদের বাহিনীর জন্য এক জরুরি পথ দিয়েছিল, তবে এটি একটি ‘সর্বজন জ্ঞাত গোপন বিষয়’ ছিল, সে দেশের ইন্টালিজেন্সের অভ্যন্তরের একটি নির্দিষ্ট অংশ এবং বিশেষত এদের গোয়েন্দা সংস্থা গুলি (পাক ISI), তালিবানের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল। আর সম্ভবত আল-কায়েদাও কখনও কখনও তাদের কৌশলগত সম্পদ হিসাবে ব্যবহার করে। তারা নিশ্চিত করতে চাইত যাতে আফগান সরকার দুর্বল থাকে এবং পাকিস্তানের এক নম্বর প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সাথে নিজেদের সুসম্পর্ক তৈরি করতে অক্ষম হয়” প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টে ওবামা তার বইয়ে এরূপ দাবী করায় বিশ্ব মঞ্চে একদিকে ইমরান খান নিয়াজির মুখ পুড়ল। অনুদিকে ভারত নিজের অবস্থান আরও সশক্ত করল।