অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিল গেটস

0
607

বঙ্গদেশ ডেস্ক – টেক জায়েন্ট মাইক্রোসফটের ব্যপ্তি পৃথিবীব্যাপী। এর অন্যতম শেয়ার হোল্ডার বিল গেটস।গেটস বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। বিল গেটস, ‘ব্লুম বার্গ’-কে দেওয়া একটি ইন্টার্ভিউতে ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যত ও নতুন দিগন্তের উন্মোচন নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। গেটস শুধু একজন টেক জায়েন্ট, ইনভেস্টার বা ধনকুবেরই নন, তিনি একজন সমাজসেবীও বটে। তাঁর নিজের সমাজ সেবামূলক কাজের ফাউন্ডেশন অন্য অনেক দেশের সাথে কাজ করছে, ভারতের উন্নত মডেলযুক্ত ওপেন-সোর্স প্রযুক্তিগুলিকে সফলভাবে প্রয়োগ করতে।

কম্প্যুটার টেক্নোলজির দুনিয়ায় একজন পথিকৃৎ বিল গেটস আর্থিক উদ্ভাবন এবং সেগুলোর সফল প্রয়োগের জন্য ভারতের নীতিগুলির প্রশংসা করেছেন। তিনি ইন্টার্ভিউতে আরও বলেছেন যে, তাঁর জনহিতকর ‘বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ ভারতের ওপেন-সোর্স প্রযুক্তিগুলি ‘রোল আউট’ করতে পারলে তা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্যে বিশেষ লাভজনক হবে।

অর্থের অনলাইন বিনিময় এবং সেই বিনিময়ের নির্ভরযোগ্য শণাক্তকরণের জন্য ভারতবর্ষ বিশ্বের বৃহত্তম বায়োমেট্রিক ডেটাবেস তৈরি করেছে। যে কোনও ব্যাংক বা স্মার্টফোন অ্যাপের মধ্যে টাকা আদান-প্রদানের জন্য একটি সিস্টেম সহ একটি উচ্চাভিলাষী, সিকিওর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে তারা। গেটস বলেছিলেন যে এই নীতিগুলি দেশের দরিদ্রদের, বিশেষত মহামারীর সময়ে প্রান্তিক শ্রেণীর কাছে অর্থ বিতরণের ব্যয়, দীর্ঘসূত্রতা এবং অন্যান্য ঘাটতি মারাত্মকভাবে হ্রাস করেছে।

মঙ্গলবার “সিঙ্গাপুর ফিনটেক ফেস্টিভাল”-এ গেটস বলেছিলেন, “চীন ব্যতীত, যদি এখনই কোনও একটি দেশ নিয়ে যেকোন ব্যক্তি অধ্যয়ন করতে চান, তবে আমি তাদের বলব আপনাদের ভারতের দিকে নজর দেওয়া উচিত।” তিনি আরও বলেন যে “সেখানে সত্যই আবিষ্কারের বিস্ফোরন হচ্ছে এবং সেই ব্যবস্থাগুলির নতুনত্বও অসাধারণ।”

ভারত সরকার ২০১৬ সালে জনগণকে নোটবন্দীর খবর দেওয়ার পরে ভারতীয়দের নগদ অর্থ প্রদান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ বা সীমিত হয়ে যায়। তখন দুর্নীতি দমন রোধ করতে এবং ভারতীয়দের নগদ লেনদেনের থেকে দূরে সরিয়ে ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ শুরু হয়। দেশের বেশিরভাগ উচ্চ-মূল্যমানের ব্যাংক নোটকে অকার্যকর করে দেয়া হয়েছিল। ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস বা ইউপিআই, স্মার্টফোনের ব্যবহার এবং ওয়্যারলেস ডেটা মূল্যহার বিশ্বের সর্বনিম্ন হওয়া; এই পক্ষেপগুলির ফলে পয়সার ডিজিটাল আদানপ্রদান প্রসারিত করা সুবিধেজনক হয়।

ভারত সরকার নির্দেশ দেয় যাতে বিভিন্ন সংস্থাগুলি তাদের ইউপিআই প্ল্যাটফর্মটিকেই ব্যবহার করে। যাতে করে ফেসবুক ইনক, অ্যামাজন ডটকম ইনক, ওয়ালমার্ট ইনক, পেটীএম এবং যে কোনও নতুন সংস্থার মধ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রেরণ করা যায়। এক্ষেত্রে জিরো ব্যবহারকারী ফি ধার্য্য হয়।

ভার্চুয়াল সম্মেলনের সময় বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি বলেছেন, “ভারত একটি দুর্দান্ত উদাহরণ (ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে)।”

কোভিড -১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মঞ্চে বক্তব্য রেখে গেটস বলেছিলেন, তিনি আশা করেন যে ২০২২ সালে ভ্যাকসিন এলে এই ভয়াবহতার অবসান হবে। তিনি আত্মতুষ্টির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন।

“আমরা ভুলতে পারি না যে আর একটি মহামারী আসবে, তাই আমাদের বিনিয়োগ করা এবং অন্যান্য বিষয়ে প্রস্তুত হওয়া দরকার।” সামগ্রিক ডিজিটাল ব্যবস্থা – দূরবর্তী শিক্ষা, টেলিমেডিসিন, ডিজিটাল ফিনান্স – অনেক উন্নত করতে হবে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।