কৃষ্ণনবমী থেকেই দেবীর আরাধনা,প্রথা মেনেই হচ্ছে ঐতিহাসিক চাঁচল রাজবাড়ীর পুজো

0
913

বঙ্গদেশ ডেস্ক : সাড়ে তিনশো বছরে বদলে গেছে আশেপাশের অনেক কিছুই। তবুও রীতি-প্রথা সবই যেন থমকে রয়েছে এই রাজবাড়িতে। দুর্গা ষষ্ঠীর ১২ দিন আগে কৃষ্ণা নবমীতে দেবীর আরাধনা শুরু হয় চণ্ডীমণ্ডপে। পুরনো প্রথা মেনে মহা সপ্তমীর সকালে অষ্টধাতুর মূর্তি ঠাকুর বাড়ি থেকে ঢাকঢোল সহকারে পাহাড়পুর চণ্ডীমণ্ডপে আনা হয়। এর পর চারদিন ধরে ধূমধাম করে চলে পুজো। অষ্টমীর দিন কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয়। দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য ভক্তের উপচে পড়ে রাজবাড়ির চণ্ডীমণ্ডপে। ভিড়ে মুখরিত হয় মন্দির চত্বর

চাঁচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরীর আমলে চণ্ডীমণ্ডপের উল্টোদিকে সতীঘাট শ্মশানে রাজপরিবারের এক মহিলা স্বামীর চিতায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। পরবর্তীতে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই বংশেরই রাজা রামচন্দ্র সতীঘাট থেকে এক অষ্টধাতু নির্মিত দেবীপ্রতিমা উদ্ধার করেন। সেই প্রতিমাই এখনও স্বমহিমায় বিরাজমান চাঁচল রাজবাড়ি লাগোয়া ঠাকুরবাড়িতে।

বর্তমানে রাজ পরিবারের কেউ নেই। তবুও ঘাটতি পড়েনি পুজোর উদ্দীপনায়। চাঁচলের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই পুজোর দায়িত্ব নিয়েছে পাহাড়পুর চণ্ডীমণ্ডপ পুজো কমিটি। বেশ কয়েকবছর ধরেই সমস্ত রীতি ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রেখে পুজো করছে এই কমিটি।

তবে রাজ আমলের এই সাড়ে তিনশো বছরের পুরোনো পুজোতেও এবার করোনার থাবা। করোনা আবহে এ বার মন্দিরের মূল দরজা বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাই এবার আর পাহাড়পুর চণ্ডীমণ্ডপের গর্ভগৃহে ঢুকে পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারবেন না ভক্তরা।মন্দিরের পুরোহিত ভোলা পাণ্ডে বলেন, ‘‘পুজোর আগে সমস্ত জায়গা স্যানিটাইজ করা হবে, মানা হবে সামাজিক দূরত্ব। সরকারি নিয়ম রীতি মেনে ঐতিহ্য বজায় রেখে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’

ব্যারিকেডের বাইরে থেকে বিধি মে‌নে সারিতে দাঁড়িয়ে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে ভক্তদের জন্য।
বাইরে থেকেই চলবে প্রার্থনা, এবার আর কাছে যাওয়া যাবেনা মা এর।