বেজিং গর্জে উঠতেই থাপ্পড় মেরে থামিয়ে দিল ভারত

0
821

বঙ্গদেশ ডেস্ক:– লাদাখে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির জন্য ভারতকে দায়ী করার পুরোনো অভ্যাস এখনও ছাড়তে পারেনি চীন। এই টালমাটাল অবস্থার মধ্যেই সোমবারে ভারত-চিন বৈঠক সমাপ্ত হতেই ফের একবার ভারতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ফায়ার করার বৃথা প্রচেষ্টা চালায় চীন। এর পিছনে চীনের নতুন ধান্দা এবং পুরোনো একগুঁয়ে মনোভাব, দুটোই বিরাজমান ছিল সমান ভাবে। তবে চীনের এহেন অবান্তর দোষারোপকে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিল নয়াদিল্লি।

লাদাখ ইস্যুতে চীনের মিথ্যা অজুহাত

মঙ্গলবার চীনের পক্ষ থেকে লাদাখ ইস্যুতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্তে ভারতীয় সেনার কারণেই উত্তরোত্তর উত্তেজনা বেড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দু’দেশেরই এমন কোনো কাজ করা উচিত হবে না যা থেকে দুই দেশের মধ্যে ফের উত্তেজনা দানা বাঁধে।’ কিন্তু এই মিথ্যা অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে।

ভারতের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে চীন ভীত

আদতে চীনের লক্ষ্য ছিল সোমবার দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ৪৪ টি ব্রিজ উদ্বোধন করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা পাকানো। কিন্তু দিল্লি প্রমাণ্য তুলে ধরে দেখিয়ে দিয়েছে, উদ্বোধন করা ব্রিজগুলোর কোনটাই সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় নয় এবং এগুলি সাধারন জণগনের যাতায়াতের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুটি যুক্তি পেশ করে দিল্লির তরফে বেজিংয়ের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে কষাঘাত করা হয়েছে।

বেইজিংকে দিল্লির কড়া জবাব

ভারতের স্পষ্ট বক্তব্য, চলমান সেনা পর্যায়ের বৈঠকে একবারও চীনের তরফে ভারতের নির্মাণ কাজ নিয়ে উচ্চবাচ্য করা হয়নি। উপরন্তু চীনের দ্বিচারিতা তুলে ধরে ভারত মনে করিয়ে দিয়েছে, লাদাখে রাস্তা নির্মাণ থেকে শুরু করে অপটিক্যাল ফাইবার বসানোর কাজ করেছিল চীন যেখান থেকেই উত্তেজনার সূত্রপাত।

লাদাখের ‘কেন্দ্রশাসিত স্ট্যাটাস’ নিয়ে খোঁচা দেয় বেজিং

কমিউনিস্ট চীন যে শুধুমাত্র ভারতের নির্মাণ কাজ নিয়ে আপত্তি তুলেছিল সেটা নয় বরং ভারতকে‌ খোঁচা দিয়ে ফের লাদাখের ‘কেন্দ্রশাসিত স্ট্যাটাস’ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। শি জিনপিংয়ের দাবি, বেআইনিভাবে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে দখল করে রেখেছে ভারত এবং সেই কারণেই চীন সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ভারতের পরিকাঠামোগত নির্মাণ কাজের ক্রমাগত বিরোধিতা করে। তবে এদিন ভারতের পক্ষ থেকে কড়া জবাবের দাপটে অনেকটাই ব্যাকফুটে চীন।

চিনা আগ্রাসনের যোগ্য জবাব দিতে তৈরি আত্মনির্ভর ভারত

ভারতের বক্তব্য, ১৯৭৬ সালে চীনা স্টাডি গ্রুপ লাদাখে ৬৫ টি প্যাট্রোলিং পয়েন্ট নির্ধারণ করে যেখানে ভারত এবং চীনের সেনা টহলের সীমানাও উল্লেখিত ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে দুর্বুদ্ধি প্রয়োগ করে পিএল‌এ এই সীমানাগুলিতে বদলে সেগুলিকেই ভারত-চীন সীমান্ত হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছে। তবে চলমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারত আর কোনোভাবেই এই আগ্রাসী মনোভাব সহ্য করবে না।

চীনের ভীতির কারণ

একদিকে চীনের ভয় লাদাখ এবং কাশ্মীর জুড়ে ভারতের পরিকাঠামোগত নির্মাণকাজ তাদের সিপেক প্রকল্পকে বসিয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে বন্ধু পাকিস্তানের সঙ্গে তৈরি হওয়া চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর চীনের স্বপ্নের প্রকল্প। এবং সেই প্রকল্পের সুরক্ষা নিয়ে বেজিংয়ের ঘুম উড়ে গিয়েছে। অন্যদিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ভারতকেও দমিয়ে দিতে পারছেনা চীন।

বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের তৈরি ৪৪ টি সেতু উদ্বোধন

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার যখন দুই দেশের সেনা বৈঠক চলছিল সেই সময়েই ৭ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের তৈরি ৪৪ টি সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এই সেতুগুলো অরুণাচল প্রদেশ,সিকিম, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব এবং জম্বু কাশ্মীর সীমান্তে বানানো হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সর্বোচ্চ ১০ টি ব্রিজ রয়েছে কাশ্মীরে এবং বর্তমানে এই ব্রিজগুলোই চীনের মাথাব্যথার কারণ।