লোকাল ট্রেন চলাচল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্য

0
1979

বঙ্গদেশ ডেস্ক– :দুর্গা পূজা, কালী পূজার পর এবার লোকাল ট্রেন চলাচল নিয়েও কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলো সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্য। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে যে কালী পূজা, জগদ্ধাত্রী পূজা, কার্তিক পূজা ও রাসপূর্ণিমার দিকে লক্ষ্য রেখে লোকাল ট্রেন চলাচলের উপর কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে যে পূজার দিনগুলোতে মানুষ যেন বড় বড় পূজামণ্ডপগুলোতে ভীড় করতে না পারে সেই দিকে নজর রেখে এই মামলা করা হয়েছে। অন্যদিকে মামলাকারী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্য জানায় যে লোকাল ট্রেন চললে ভীড় জমতে বাধ্য আর তা থেকে কোভিডের সংক্রমণ বেশি মাত্রায় ছড়াবে।

মামলার আবেদনকারীর বক্তব্য, যদি এই সব পূজার মধ্যে লোকাল ট্রেন ওই স্টেশনগুলোতে দাঁড়ায়, সেক্ষেত্রে ভীড় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই, সংশ্লিষ্ট স্টেশনগুলোর অন্তত ১০ কিলোমিটারের মধ্যে অন্য কোনও স্টেশনেও যাতে পূজার দিনগুলোয় লোকাল ট্রেন না দাঁড় করানো হয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হোক। প্রথম পর্যায়ে কালীপূজার দিন থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর করার আবেদন জানানো হয়েছে।

বুধবার থেকে শিয়ালদহ ডিভিশনের প্রায় ২০০ জোড়া লোকাল ট্রেন বিভিন্ন শাখায় চলাচল শুরু করবে। মূলত দক্ষিণ ও উত্তর শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ নির্ভর করেন লোকাল ট্রেনের উপর। গত সাত মাস ধরে করোনার জন্য এই পরিবহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এই পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পরে বাস্তবে নির্দিষ্ট কিছু স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ানো বন্ধের নির্দেশ যদি দেওয়া হয়, তবে বাস্তবে তা কতটা কার্যকর করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মামলায় বলা হয়েছে যে কালী পূজার সময় বারাসাত, মধ্যমগ্রাম, পান্ডুয়াতে যেমন ভীড় হয় তেমনি জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় চন্দননগর,কৃষ্ণনগর ও রিষড়ায় ভীড় হয়। কার্তিক পূজায় ভীড় হয় চুঁচুড়া, বাঁশবেড়িয়া ও কাটোয়াতে। অন্যদিকে রাসপূর্ণিমাতে ভীড় হয় শান্তিপুর, নবদ্বীপ, দাঁইহাট ও উলুবেড়িয়াতে। ওই সকল পূজার দিন যদিও ওই সব এলাকায় লোকাল ট্রেন চলাচল করে বা দাঁড়ায় তাহলে দর্শনার্থীদের ভীড় হবেই। তাই মামলাকারী আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছে যে পূজার দিনগুলিতে ওই সব স্টেশনে ও তার আশেপাশের ১০ কিমি ব্যবধানের মধ্যে কোনও স্টেশনে যেন লোকাল ট্রেন না দাঁড় করানো হয় তার নির্দেশ দিক আদালত।

হাইকোর্টের বর্ষীয়ান এক আইনজীবীর মতে, লোকাল ট্রেন একবার চালু হয়ে গেলে যাত্রীদের তাতে ওঠার অধিকার রয়েছে। ফলে কেউ ঠাকুর দেখতে যাবেন, এমনটা ধরে নিয়ে প্রকৃত যারা ওই সকল এলাকার বাসিন্দা, তাদেরও সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে। ইতিমধ্যেই নাগরিক সমাজে এই আর্জির বিপরীতে সমালোচনা ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, শুধুমাত্র পূজার সময়েই ভীড়ের অভিযোগ তুলে লোকাল ট্রেন বন্ধের আবেদন কেন! অন্যান্য উৎসবের সময়ে কেন নয়? জনস্বার্থ কি একটি সম্প্রদায়ের উৎসবের সময়েই মনে পড়ে? উৎসবের কথা ছাড়াও, এতোদিন পরে লোকাল ট্রেন চালু হচ্ছে যেখানে সেখানে পুনরায় তা চলাচলে বাধ্যবাধকতা তৈরি করা হলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা হবে!