নবী মুহাম্মদের সমালোচনা ! নরসিংহানন্দ সরস্বতী মহারাজকে শিরোচ্ছেদের হুমকি আপ বিধায়ক আমানাতুল্লাহ খানের

0
1233

বঙ্গদেশ ডেস্ক: বেশ কিছুদিন আগে ফ্রান্সে ইতিহাসের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্র ক্লাসে দেখানোয় প্রকাশ্যে তার শিরোচ্ছেদ করা হয়েছিল। সেই ঘটনার জেরে বিশ্বজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। তার‌ই ছায়া দেখা গেল ভারতবর্ষের বুকে তবে এখানে হত্যা করা হয়নি কিন্তু হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আপ বিধায়ক আমানাতুল্লাহ খান নবী মুহাম্মাদুর বিরুদ্ধে সমালোচিত মন্তব্য করার জন্য দাসনা দেবী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত যতি নরসিংহানন্দ সরস্বতী মহারাজের শিরশ্ছেদ করার ডাক জানিয়েছেন।

তিনি টুইটারে একটি ঘৃণাত্মক টুইট করে লিখেছেন “আমরা আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদের প্রতি এমন নৈর্ব্যক্তিকতা সহ্য করতে পারি না। এই ঘৃণ্য জীবকে তার জিভ এবং গলা কেটে সবচেয়ে গুরুতর শাস্তি দেওয়া উচিত। কিন্তু দেশের আইন আমাদের এই কাজের অনুমতি দেয় না, আমরা ভারতীয় সংবিধানের প্রতি বিশ্বাস রাখি, এবং আমি চাই দিল্লি পুলিশের ও এই বিষয়টি লক্ষ্য করা উচিত।” আমানাতুল্লাহ খান নরসিংহানন্দ সরস্বতী মহারাজের ভিডিওটি টুইটে শেয়ার করেছিলেন যেখানে তিনি নবী মুহাম্মদের সমালোচনা করেছিলেন।

যতি নরসিংহানন্দ সরস্বতী মহারাজ প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় হজরত মুহাম্মদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে হিন্দুদেরকে নির্ভীক হওয়ার আহ্বান জানান। সেই প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলেছেন,” যদি আমরা ভগবান রাম এবং অন্যান্য হিন্দু দেবদেবীদের সম্পর্কে জানতে পারি তবে মুহাম্মদ সম্পর্কে আমাদের জানতে দোষ কোথায়? কেন আমরা মুহাম্মদ সম্পর্কে কথা বলতে ও সত্য স্বীকার করতে পারিনা? ”

তিনি আরও বলেছেন,“যদি ইসলামের বাস্তবতা একজন জেনে যায়, তবে সে নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করবে।” তিনি বলেছেন,’ আপনি যদি মুহম্মদ সম্পর্কে সত্যি কথা বলেন তবে আপনার শিরশ্ছেদ করা হবে। হিন্দুদের উচিত এই ভয় ত্যাগ করা।’

আমানাতুল্লাহ খান এই বক্তব্যে রুষ্ট হয়েছেন। তিনি সরাসরি সাধু মহারাজকে গলা কেটে হত্যা করার জন্য প্ররোচিত করেছেন। তবে তার এই হিন্দু বিদ্বেষী মনোভাব প্রথম নয়, অতীতেও দিল্লি দাঙ্গার সময় আসামি তাহির হুসেনকে রক্ষা করতে ‘মুসলিম কার্ড’ রোল প্লে করেছিলেন তিনি। দাবি করেছিলেন যে হুসেনের বিরুদ্ধে প্রমাণ উপেক্ষা করে সে কেবল মুসলমান ছিল বলেই তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন, ২০১৯ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর আমানতুল্লাহ খানের বিরুদ্ধে দিল্লিতে হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

এর আগে ভারতবর্ষের বুকে নবী মুহাম্মদের সমালোচনা করার জন্য হিন্দু মহাসভার সভাপতি কমলেশ তিওয়ারিকে বাড়িতে ঢুকে খুন করা হয়। আল-হিন্দ ব্রিগেডের তরফে হিন্দু মহাসভার সভাপতির হত্যার দায় স্বীকার‌ও করে নেওয়া হয়েছিল।

আল হিন্দ ব্রিগ্রেডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, “কমলেশ তিওয়ারি সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক ছিল। আর কেউ যদি ইসলাম ধর্ম এবং মুসলমানদের দিকে আঙুল তোলে, সেও একই পরিণতি লাভ করবে। আল হিন্দ ব্রিগেড এই ঘটনার দায় স্বীকার করছে। আরও দেখতে প্রস্তুত হোন। যুদ্ধ সবে শুরু হয়েছে।”

তবে শুধু ভারতেই নয় নবী মুহাম্মদের সমালোচনা করে প্রাণের বিনিময়ে মূল্য চোকাতে হয়েছে অনেককেই। সেই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের এক হিন্দু ব্লগার‌ও। মাত্র কয়েক বছর আগে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির ঢাকার অমর একুশে বইমেলা থেকে ফেরার সময় মৌলবাদীরা টিএসসি এলাকায় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে ঘিরে ধরে। প্রকাশ্যে তাকে কুপিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। অভিজিৎ মুক্তচিন্তা ও যুক্তিবাদের পক্ষে ব্লগ লিখতেন, তিনি নবী মুহাম্মদের সমালোচনা করেছিলেন,এই ছিল তাঁর ‘অপরাধ’।