বঙ্গদেশ ডেস্ক:- দিল্লি দাঙ্গাকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ (Terrorist Activity) বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করল পুলিশ। বলা হয়েছে, এই দাঙ্গায় অশান্তির ব্যাপ্তি ও প্রভাব দুইই মারাত্মক ছিল। হিংসার মাত্রা বাড়াতে দাঙ্গাকারীরা অত্যাধুনিক ও মারাত্মক সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছিল। সেই কারণে দিল্লি পুলিশ অতিরিক্ত চার্জশিটে ফেব্রুয়ারি মাসের এই দাঙ্গাকে ‘সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ’ বলেই উল্লেখ করল।
জেএনইউ-র প্রাক্তন ছাত্র উমর খালিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শারজিল ইমাম এবং ফয়জান খানের নাম উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অশান্তিতে ইন্ধন জুগিয়েছে এরা। চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, “কেন্দ্রীয় সরকারের CAA ও NRC প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লির শাহিনবাগের ওই দাঙ্গায় হিংসা বাড়ানোর অভিপ্রায় থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র, পেট্রল বোমা, অ্যাসিড হামলা-সহ একাধিক ভয়ঙ্কর অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি ওই অশান্তির জেরে এক পুলিশ কর্মীরও মৃত্যু হয়েছে। ২০৮ জন পুলিশ কর্মী গুরুতরভাবে জখম হয়েছে। এই সমস্ত বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে ওই দাঙ্গাকে চোখ বুজে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বলে দেওয়া যেতে পারে।”
২৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ–পূর্ব দিল্লিতে শুরু হয়েছিল সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। সেসময় ভারত সফরে এসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই দাঙ্গায় মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৫০ জনের। জখমের সংখ্যা কমপক্ষে ৭৫০ জন মতো। এছাড়া, প্রচুর সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি, পরিবহণেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়। এমনকি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল স্বাভাবিক জনজীবন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি হাসপাতাল-ওষুধের মতো জরুরী পরিষেবা মেলাও কঠিন হয়ে পড়েছিল। এর থেকেই ওই অশান্তি কতটা মারাত্মক ছিল তা আন্দাজ করা যায়। তাই দিল্লি হিংসাকে ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’ বলা যায় বলে দাবি পুলিশের।
এই ঘটনায় যুক্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ (UAPA) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারণ, তাদের হিংসাত্মক কর্মকান্ড দেশের একতা ও দেশের মানুষের স্বাভাবিক জনজীবনের উপর কুপ্রভাব ফেলেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, এই অশান্তি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের ভাবমূর্তি কলুষিত করেছে বলেও অভিযোগ। মঙ্গলবার দিল্লির কাড়কাড়ডুমা আদালতে ৯০৩ পাতার এই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দাখিল করেছে দিল্লি পুলিশ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভয়াবহ এক দাঙ্গার সাক্ষী থাকে উত্তরপূর্ব দিল্লির একাধিক এলাকা। ওই ঘটনার যথাযথ তদন্ত শুরু হয়।তদন্তে নেমে ইউএপিএ ধারায় উমর খালিদ ও শারজিল ইমামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দিল্লি পুলিশ। এই মর্মে গত ২২ নভেম্বর দিল্লির একটি আদালতে চার্জশিট ফাইল করে পুলিশ। সেখানে উমর খালিদ, শারজিল ইমাম-সহ ফইজান খানেরও নাম উল্লেখ রয়েছে।