যতীন্দ্রমোহনের বাড়ি ধ্বংস দেখিয়ে দিল বহুত্ববাদী বাঙ্গালী সংস্কৃতির প্রতি বাংলাদেশের বিদ্বেষ

0
3052

সায়ন দে

 

যাত্রামোহন ও যতীন্দ্রমোহন

অবিভক্ত ভারতবর্ষের চট্টগ্রামের ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা যাত্রামোহন সেনগুপ্তের নাম ভারতের ইতিহাসের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। চট্টগ্রামের এই কৃতী আইনজীবীর ছেলে দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত যিনি একসময় আমাদের কলকাতার মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই সাথে তিনি ছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতা। যাত্রামোহন সেনগুপ্ত চট্টগ্রামে একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই বাড়িটির তাৎপর্য একটু বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে। 

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অসংখ্য আন্দোলনের মধ্যে অন্যতম আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের আন্দোলন। এই আন্দোলনের জড়িত তৎকালীন শীর্ষ নেতারা চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের এই বাড়িটিতে নিয়মিত বৈঠক করেছিলেন। এছাড়াও স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন সময়ে এই বাড়িটিতে উপস্থিত হয়েছিলেন আমাদের প্রিয় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। শরৎ বসু, মোহাম্মদ আলী ও শওকত আলী, মহাত্মা গান্ধী সহ প্রভৃতি কংগ্রেস নেতারাও তৎকালীন সময়ে এই বাড়িতে আন্দোলনের বিভিন্ন গতিবিধি নির্ধারণের জন্য বৈঠকের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামের এই বাড়িটি ব্যবহার করেছিলেন। উল্লেখ্য, আমাদের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিযুগের বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন, অনন্ত সিংহ, অম্বিকা চক্রবর্তীর মামলা লড়েছিলেন তাঁর সন্তান, চট্টগ্রামের কৃতী আইনজীবী যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত।

১৯৩০-৩১ সালের নির্বাচনে যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত পুনরায় কলকাতার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি সর্বমোট পাঁচবার কলকাতার মেয়র ছিলেন। ১৯৩১ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে যতীন্দ্রমোহন সস্ত্রীক লন্ডন যাত্রা করেছিলেন। রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে মহাত্মা গান্ধীও তখন লন্ডনে উপস্থিত ছিলেন। যতীন্দ্রমোহন সেখানে বিভিন্ন জনসভায় ভারতের স্বাধীনতার পক্ষে বক্তৃতা করেন এবং ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচারের নিদর্শন তুলে ধরেন। লন্ডনের মাটিতে ব্রিটিশ নিন্দা করায় কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার টেগার্ট ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ১৯৩২ সালের ২০ জানুয়ারি মাসে যতীন্দ্রমোহন বম্বে বন্দরে নামেন এবং সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জেলে বন্দী থাকেন প্রায় এক বছর। ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকায় তাঁকে ১৯৩৩ সালের ৫ জুন রাঁচি জেলে ট্রান্সফার করা হয়। রাঁচির একটি নির্জন বাড়িতে গৃহবন্দি হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর কাছে যেতে থাকেন ভারতমাতার এই মহান সন্তান। ১৯৩৩ সালের ২১ শে জুলাই ওই নির্জন বাড়িটিতে যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, ভারতমাতা হারায় তাঁর এক মহান সন্তানকে।  

 

নেলী সেনগুপ্ত

যতীন্দ্রমোহনের স্ত্রী নেলী সেনগুপ্ত জন্মসূত্রে ছিলেন ইংরেজ কিন্তু কর্মসূত্রে ষোল আনা ভারতীয়। স্বামীর সাথে ১৯২১ সালের অসহযোগ আন্দোলনে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদি বিক্রি করতেন। তিনি বহুবার কারাবরণও করেছিলেন। ১৯৩৩ সালে স্বামীর মৃত্যুর পরও তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে ওতোপ্রোতঃভাবে জড়িত ছিলেন। এই বছরই তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হন। তিনি বঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যও হন ১৯৪০ ও ১৯৪৬ সালে।  

যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত তাঁর পিতার তৈরী চট্টগ্রামের এই বাড়িটিতে কিছুকাল সস্ত্রীক বসবাস করেছিলেন। নেলী সেনগুপ্ত দেশভাগের মাধ্যমে পাকিস্তান গঠনের পর কলকাতাতেই থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর অনুরোধে তিনি চট্টগ্রামে ফিরে যান। নেহেরু তাঁকে পূর্ব পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি অগত্যা ওখানেই থেকে যান। ১৯৫৪ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান পরিষদেও সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত হন।

 

যতীন্দ্রমোহন-নেলীর বাড়ি শত্রু-সম্পত্তি! 

তিনি ১৯৭০ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের এই বাড়িটিতে বসবাস করেছেন। ১৯৭০ সালে যখন কোমরের চিকিৎসার জন্য নেলী সেনগুপ্তা কলকাতা যান, পাকিস্তান সরকার তাঁকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করে এবং তাঁদের এই বাড়িটি শত্রু সম্পত্তি হিসেবে দখল করে নেয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ হওয়ার পরে, নেলী সেনগুপ্ত তাঁর স্বামীর স্মৃতিবিজড়িত চট্টগ্রামের ভূমিতে ফিরে যান।

 সরকারের কাছে অনেক আকুতি সত্ত্বেও তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। এই মহান পরিবারটি জীবনে যা উপার্জন করেছে তার সবই বিলিয়ে দিয়েছিল মানুষের কল্যাণে। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়মিত অর্থের যোগান থেকে শুরু করে, চট্টগ্রামের ডাক্তার খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয়, অপর্ণাচরণ বালিকা বিদ্যালয়, কুসুমকুমারী বালিকা বিদ্যালয়, ত্রাহিমেনকা সংগীত মহাবিদ্যালয়, জে এম সেন হল, জে এম সেন স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম সংস্কৃত কলেজ, চন্দনাইশের বরমা ত্রাহিমেনকা উচ্চ বিদ্যালয়, বরমা ডিগ্রি কলেজ, বরমা উন্নতমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরমা দাতব্য চিকিৎসালয়, ভারতের কলিকাতা ব্যারিস্টার যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত কলেজ, দুর্গাপুর ব্যারিস্টার যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত কলেজ সহ অসংখ্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য সংস্থা তৈরি করেছিল এই মহান দেশপ্রেমী পরিবারটি। আমাদের কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের নামকরণ, ভারতমাতার এই মহান সন্তান দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের নামেই করা হয়েছে। 

 

বাড়ি ধ্বংসের চক্রান্ত

চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জে ১৯ গণ্ডা ১ কড়া পরিমাণ জমির ওপরে তৈরি দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের এই পৈতৃক বাড়িটি শত্রু সম্পত্তি ঘোষণা পর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে শামসুদ্দিন মো. ইছহাক নামে এক স্থানীয় মুসলিম ব্যক্তি জমিটি লিজ বা ইজারা নেয় এবং “বাংলা কলেজ” নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৭৫ সালের পর “বাংলা কলেজ” নামটি পরিবর্তন করা হয় এবং ভবনটিতে “শিশুবাগ স্কুল” একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন থেকেই ইছহাকের পরিবার স্কুলটি দেখাশোনা করছে। সোমবার দিন সকালে স্থানীয় একশো জিহাদী ও আওয়ামি যুবলীগের একটি দল সেখানে আসে। এদের নেতৃত্বে ছিল এম ফরিদ নামক ব্যক্তির দুই ছেলে, ফরহাদ ও ফয়সাল। এছাড়াও এদের সাথে স্থানীয় যুবলীগ নেতা গিয়াস উদ্দীন সুজন উপস্থিত ছিল। উল্লেখ্য, এই যুবলীগ হলো বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামিলীগের শাখা সংগঠন। আওয়ামিলীগ বাস্তবে “অসাম্প্রদায়িক দল” হিসেবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করলেও তাদের ইসলামপন্থী রূপ বারবার উঠে এসেছে৷ এর আগেও চট্টগ্রামের মা চট্টেশ্বরীর নামে নামকরণ করা চট্টেশ্বরী মোড়ের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিল স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন প্রশাসন। জমি দখলকারীদের সাথে নিজেদের জিহাদী ও যুবলীগ বাহিনী ছাড়াও ঘটনাস্থলে প্রায় ৫০ জন পুলিশ ও চট্টগ্রাম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের নাজির আমিনুল হক আকন্দ “দখল পরোয়ানা ” নিয়ে উপস্থিত ছিল। এরপর এই জিহাদী-যুবলীগ মিলিত বাহিনী মিলে স্কুলটিতে প্রবেশ করে এমন অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকদের মারধোর সহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং এই ঐতিহাসিক ভবনটি ভেতর থেকে ভাঙা শুরু করে। বাইরে থেকে বুলডোজার এর মাধ্যমে ভবন ভাঙার কাজ করতে থাকে দখলদার ও প্রশাসনের মিলিত দলটি। 

খবর পেয়ে এই ঐতিহাসিক ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটিকে রক্ষা করতে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, স্থানীয় জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন সহ অসংখ্য হিন্দু। এই সময়ে ভবন ভাঙায় বাধা দেওয়ায় তাদের ওপর হামলা করে স্থানীয় জিহাদী-যুবলীগের মিলিত দলটি। প্রশাসন সেখানে নির্বাক দর্শকের ন্যায় দাঁড়িয়ে ছিল। অনেক ধ্বস্তাধস্তি এবং তর্ক বিতর্ক ও স্থানীয় হিন্দুদের প্রাণপণে চেষ্টার পর ভবন ভাঙা থামানো হলেও যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই গিয়েছিল। ভবনটির বড় অংশই গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ ততোক্ষণে সম্পন্ন করে ফেলেছে জিহাদী-যুবলীগ-প্রশাসনের মিলিত এই দখলদারের দল। জমির দখলদার ফরহাদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে যে এই জমিসহ ভবনটি তার বাবা যতীন্দ্রমোহনের ভাগ্নে মিলন সেনগুপ্তের কাছ থেকে কিনেছে যেখানে বাস্তবতা হচ্ছে মিলন সেনগুপ্ত দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ। আর তাছাড়াও, এই বাড়িটি সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে নিয়ে নিয়েছিল, সেখানে মিলন সেনগুপ্তের জমি বিক্রির ঘটনা অলীক গল্প ছাড়া কিছুই নয়। পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে উচ্চ মানের জালিয়াতি ও প্রশাসনিক সাহায্যের মাধ্যমেই এই ঐতিহাসিক বাড়িটি দখলের পায়তারা করেছে স্থানীয় ওই জিহাদীরা। 

 

আদালতই জিহাদী

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ন্যায়ের প্রতীক যে আদালতকে বলা হয়, সেই আদালতই নাকি এই ঐতিহাসিক ভবনটিকে দখলের পরোয়ানা জারি করেছে! বাংলাদেশ যে আদতে একটি সর্বাঙ্গে পঁচে যাওয়া ইসলামিক রাষ্ট্র তা বলা বাহুল্য। রাষ্ট্রের সংবিধানে “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” রেখে, বাইরে সেক্যুলারিজমের মোড়ক যতোই মোড়ানো হোক না কেন, ইসলামিক বাংলাদেশের জিহাদী রূপটা প্রকট হয়েই পড়ে বারবার এভাবেই। ইসলামিক বাংলাদেশ হিন্দুদের জন্যে নরক ছাড়া কিছুই নয়, পরিসংখ্যানও সেটাই বলে।

জাতীয় হিন্দু মহাজোটের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত এই ৬ মাসে হত্যার শিকার হয়েছে ৭২ জন হিন্দু, হত্যার হুমকী ৬১ জন হিন্দু, ৮৭ জন হিন্দুকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, জখম ও আহত করা হয়েছে ৫১২ জন হিন্দুকে, নিখোঁজ হয়েছে ২৫ জন হিন্দু, হিন্দুদের থেকে চাঁদাবাজী করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা, হিন্দু পরিবার ও মন্দির লুট এর ৪০ টির অধিক ঘটনা ঘটেছে। ১৫৫ টি হিন্দু বসতবাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে, হিন্দু সম্পত্তির উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ৪৬ টি, হিন্দুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৩৫ টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, দখল হয়েছে সংখ্যালঘুদের মোট ২৩৩৩ একর ৬৭ শতাংশ জমি। এর মধ্যে আদিবাসী চাকমা সম্প্রদায়ের ১০০০ একর এবং গারো আদিবাসীদের ৫ একর ভূমি রয়েছে। এছাড়াও এই ৬ মাসে ১৫ জন হিন্দু নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ১১ জন হিন্দু নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে, ২ জন হিন্দু নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। ২৪৮৬ জন হিন্দু নারীকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে, ২৯৩ জন হিন্দু নারীকে ধর্মান্তরের চেষ্টা করা হয়েছে। ৭টি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগের ঘটনা ঘটেছে। হিন্দুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রদানের ঘটনা ঘটেছে ৬৯ টি, মিথ্যা মামলায় আসামী-গ্রেফতার-বরখাস্ত করা হয়েছে ৩৩ জন হিন্দুকে, ৩৪৩ টি হিন্দু পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। হিন্দুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অপবিত্রকরণের ঘটনা ঘটেছে ৫ টি, হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে বাধার ঘটনা ১৫ টি, হিন্দুদের ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ গরুর মাংস খাইয়ে অপবিত্রকরণ করা হয়েছে ৫০ জন হিন্দুকে, মিথ্যা রাজাকার বানানো ৩ জন হিন্দুকে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে ২৫ টি।

এই পরিসংখ্যানগুলো আসল সত্যকে তুলে ধরে। চট্টগ্রামের সেই ঐতিহাসিক বাড়িটি যদি যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের পরিবারের না হয়ে দ্যা গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং এর মূল কসাই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পরিবারের বা অন্য কোন মুসলিম ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের পরিবারের হতো তাহলে হয়তো বাড়িটি এই জিহাদী-যুবলীগ-প্রশাসনের মিলিত হামলার শিকার হতো না, আদালতও দখলের আদেশ প্রদানও করতো না। সবচেয়ে বড় কথা, নেলী সেনগুপ্ত যদি ধর্মান্তরিত হয়ে নেলী বেগম বা ইসলাম হয়ে যেতো তাহলে বাংলাদেশ সরকার নির্দ্বিধায় তাঁদের বাড়িটি ফিরিয়ে দিতো। আমাদের কাছে যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ভারতমাতার তথা বাঙ্গলার মহান সন্তান হলেও ইসলামিক বাংলাদেশে যতীন্দ্রমোহনরা “কাফের”, “মালাউন” ছাড়া কিছুই যে নয় তা আজ চোখের সামনেই দেখা যাচ্ছে। ইসলামিক বাংলাদেশে ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকা বাঙ্গালী সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিন্দুদেরকে রক্ষা করতে হলে তাদের সত্যতার চিত্রগুলো তুলে ধরে আন্তর্জাতিক জনমত অতিসত্বর তৈরি করা প্র‍য়োজন, ইসলামিক বাংলাদেশের মূল সত্য উন্মোচন করে তাদের হিপোক্রেসির পর্দা ফাঁস করা প্রয়োজন। নাহলে জিহাদী নামক রাক্ষসদের সামনে “গণিমতের মাল” হওয়া ছাড়া সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের আর কোন পথই থাকবে না।