লাগামছাড়া জেহাদি সন্ত্রাস ফ্রান্সে, এবার চার্চের সামনে ছুরিকাঘাত করে মহিলার শিরশ্ছেদ

0
711

বঙ্গদেশ ডেস্ক – ফ্রান্সে পুনরায় শিরচ্ছেদের ঘটনা। ফ্রান্সের নিস শহরে এক চার্চে ছুরি নিয়ে ঢুকে হামলার এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এক মহিলার মুণ্ডচ্ছেদ করেছে এক হামলাকারী। এই হামলায় আরও ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে, সাথে আহত বহু। এ ঘটনাকে মানবতাবাদবিরোধী ঘৃণ্য সন্ত্রাসবাদ বলে বর্ণনা করেছেন সে শহরের মেয়র।

হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ, এমনটাই ট্যুইট করে জানিয়েছেন মেয়র ক্রিশ্চিয়ান এস্ট্রোসি। পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত খবরের সূত্র যাতে জানা যাচ্ছে এখনো অবধি এই হামলায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ফ্রেঞ্চ অ্যান্টি-টেরোরিস্ট প্রসিকিউটর্স ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংবাদসংস্থা রয়টার্স সূত্রের খবর, হামলার পরই গোটা চার্চকে ঘিরে ফেলা হয়। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে যায় অ্যাম্বুলেন্স ও দমকলের গাড়ি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর হজরত মুহম্মদের কার্টুন দেখানোর অভিযোগে ১৬ বছরের এক চেচেন জঙ্গি কিশোর ফরাসি শিক্ষকের মুণ্ডচ্ছেদ করে। এই ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। এ ঘটনাকে বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন খ্রিষ্টানপ্রধান দেশ ফ্রান্সের বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু নবীর কার্টুনকে ঘিরে ফ্রান্সের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছে সৌদি আরব, তুরস্ক, পাকিস্তান-সহ একাধিক মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র। এক‌ই পথে হেঁটেছে বাংলাদেশের মুসলিমরাও।

ফরাসি শিক্ষকের প্রকাশ্যে মুণ্ডচ্ছেদের ঘটনার পরই মৌলবাদীদের কটাক্ষ করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এরপরই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের ভূমিকায় সরব হয়ে ওঠে মুসলিম দুনিয়া।

পড়ুয়া ও অভিভাবকদের বক্তব্য, ওই শিক্ষক মুক্ত চিন্তার মানুষ। কোন‌ও ধর্মের প্রতি তার কোন আক্রোশ ছিল না। ক্লাসে ছাত্রদের মুসলিম ধর্মগুরু হজরত মুহম্মদের কার্টুন দেখিয়ে তিনি নিজের বক্তব্য রেখেছিলেন। তবে জানা গিয়েছে, তার আগে ক্লাসের মুসলিম ছাত্রদের বেরিয়ে যেতে বলেছিলেন তিনি। শিক্ষক বলেছিলেন,”আমি কারোর মনে আঘাত দিতে চাই না।” আমার ক্লাসের মুসলিম ছেলেমেয়েরা তোমরা চাইলে কিছুক্ষনের জন্য একটু ক্লাসের বাইরে যাও।” সেইদিনই স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে জঙ্গি হামলার কবলে পড়তে হয় শিক্ষক স্যামুয়েল পাটিকে।

বেশ কয়েক বছর আগে ফরাসি কার্টুন পত্রিকা, শার্লি এবদোর অফিসে হামলা ও একাধিক মৃত্যুর পিছনেও ছিল নিয়মিত মহম্মদ বা ইসলাম ধর্মকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের ঘটনা। ২০১৫ সালে ইসলাম ধর্মগুরুর কার্টুন ছাপানোর অপরাধে প্রত্রিকার দপ্তরে হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা। গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় ১২ জন শিল্পী ও কর্মীকে। তার তিন দিনের মধ্যে ফের হামলা চালিয়ে আরও ৫ জনকে খুন করা হয়।

সেই থেকেই শুরু। এরপর গত কয়েক বছরে জঙ্গি হামলায় ফ্রান্সে আড়াইশো থেকে তিনশো জন নিহত হয়েছেন। হামলায় জঙ্গিদের সাহায্য করার জন্য সম্প্রতি দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।

গত সেপ্টেম্বরেও প্যারিসে ছুরি নিয়ে হামলায় মারা যায় একটি চ্যানেলের দুই কর্মী। এরপর থেকে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে দেওয়া হয় ফ্রান্সের রাজধানীকে। তবে নিরাপত্তার ফাঁক গলেও ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলার সাক্ষী হতে হলে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসকে। এই হামলার সঙ্গে চার্চে মহিলা খুনের হামলা কোন‌ও ভাবে জড়িত আছে কিনা তা এখনও পর্যন্ত জানা যায় নি।