উত্তর চীন সাগরে ভারত-ভিয়েতনাম মহড়া, সাবধান বার্তা চীনকে

0
526

বঙ্গদেশ ডেস্ক – ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভিয়েতনামী কাউন্টারপার্টের সাথে দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলন করেছিলেন গত বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ রিপোর্ট করেছে যে, মধ্য ভিয়েতনাম বন্যার দ্বারা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত। এই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জন্য ১৫ টন মানবিক ত্রাণ সরবরাহ নিয়ে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কিল্টান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াস্থিত দেশটির হো চি মিন সিটিতে পৌঁছেছে।

একটি করভেট ভারত সরকারের “মিশন সাগর – ২” -এর অংশ হিসাবে হো চি মিন শহরের নহা রং বন্দরে পৌঁছেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল ভারত কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালীন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা দেশগুলিতে মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছিল। এছাড়া দুর্যোগ পরিস্থিতিতে একাধিকবার ত্রাণ সহায়তাও পরিচালনা করেছে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আই.এন.এস কিল্টান এখন ওই দেশের ‘ডকে’ই থাকবে। আগামী ২৭ ও ২৮ শে ডিসেম্বর দক্ষিণ চীন সাগরে ‘ভিয়েতনাম পিপলস নেভি’ -র সাথে “পাসিং অনুশীলন” (passing exercise) -এ অংশ নেবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দক্ষিণ চীন সাগর একটি বিতর্কিত অঞ্চল। যেহেতু রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এই অঞ্চল্টিকে চীনের সার্বভৌম অঞ্চল হিসাবে দাবি করেছেন এবং ভিয়েতনামও নিজের অধিকার ছাড়েনি, তাই এই ‘মহড়া’টি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে বর্তমান পরিস্থিতিতে। চীন – ভিয়েতনাম দুই কমিউনিস্ট রাজ্যের দড়ি টানাটানিতে সনাতনী ভারতের ভূমিকা আগামীতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করতে চলেছে।

আই.এন.এস কিল্টনের এই সফরের লক্ষ্য, দুদেশের নৌবাহিনীর মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক সুরক্ষা ও স্থিতিশীলতা জোরদার করা। সাথে সাথে চীনের আগ্রাসী পদক্ষেপ নিয়ে উভয় দেশের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে, এটি একটি ‘ব্যালেন্সিং ফ্যাক্টর’ হিসেবেও কাজ করবে।

লড়াইটা শুধুমাত্র সামরিক দিকেই সীমাবদ্ধ নেই, প্রসারিত হয়েছে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও। একাধিক সংস্থা চীন থেকে নিজেদের কারখানা সড়িয়ে অন্য দেশে নিয়ে যেতে চাইছে, তাদের অন্যতম প্রিয় দুটি গন্তব্য হল ভারত এবং ভিয়েতনাম। উভয় দেশের মধ্যে সংযোগ যত বাড়বে, ব্যবসায়িক আদান প্রদান বাড়বে, ততই একঘরে হবে চীন।

ইতিমধ্যেই ভারত একশ মিলিয়ান ডলারের একটি ‘ক্রেডিট লাইন’ দিয়েছে ভিয়েতনামকে। তারা এই ‘ধার’কে কাজে লাগিয়ে যুদ্ধজাহাজের অর্ডার দিয়েছে ভারতকে। এর ফলে ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রজেক্ট শক্তিশালী হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে ডিফেন্স এক্সপোর্টও মজবুত হয়েছে। আবার অন্যদিকে ইতিমধ্যেই হ্যানয় ভারতের ব্রাহ্মোস মিসাইলও কিনতে চেয়েছে। ভবিষ্যতে দুই দেশ যতো কাছে আসবে, ততোই রক্ষণশীল হবে চীন।