বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে ইন্ডিয়া ওপেন ব্যাডমিন্টনে ‘লক্ষ্যভেদ’ লক্ষ্য সেনের

0
464

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- যত দিন এগোচ্ছে ততই যেন কোর্টে তুখোড় হয়ে উঠছেন ভারতের তরুণ শাটলার লক্ষ্য সেন। একের পর এক সাফল্য তিনি সৃষ্টি করে চলেছেন। এবার তিনি ফাইনালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সিঙ্গাপুরের লোহ কিয়ান ইউয়ের বিরুদ্ধে দুরন্ত লড়াই করে ইন্ডিয়ান ওপেনের খেতাবে ‘লক্ষ্যভেদ’ করছেন।সেমিফাইনালের সেই দুরন্ত ছন্দ‌ও ফাইনালে ধরে রেখেছিলেন তিনি।

ফাইনালে লক্ষ্য সেনের পক্ষে ফল ২৪-২২,২১-১৭। রবিবাসরীয় দুপুরে বিডব্লুএফ বিশ্ব ট্যুর সুপার ৫০০ সিরিজের প্রতিযোগিতা ইন্ডিয়া ওপেনের ফাইনালে সিঙ্গাপুরের লোহ কিয়ান ইউয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। ফাইনালে দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়, শেষ হাসি হাসেন লক্ষ্য। এই নিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় খেতাব জিতেছেন তিনি। ২০২১ সালে বিডব্লুএফ আয়োজিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে পৌঁছান লক্ষ্য। কিন্তু কিদম্বি শ্রীকান্তের কাছে হেরে বাদ পড়েন তিনি। তবে ইন্ডিয়া ওপেনে সেই অপূর্ণতা পূর্ণ করেন লক্ষ্য সেন।

রবিবারের ম্যাচে লো’র বিরুদ্ধে একটু আলাদাভাবেই খেলা শুরু করেন লক্ষ্য সেন। আক্রমণের পাশাপাশি অসাধারণ ডিফেন্সিভ টেকনিকের পরিচয় দিয়ে শুরু করেন ম্যাচ। ম্যাচে সিঙ্গাপুরের প্রতিপক্ষের একাধিক ‘আনফোর্সড এরর’ অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃত ভুলের উপযুক্ত সদ্ব্যবহার করেন তিনি। প্রথম গেমে একেবারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। অবশেষে ২৪-২২ ফলে সেই গেমে জয়ী হন লক্ষ্য সেন। দ্বিতীয় গেম তুলনামূলক সহজ ভাবেই ২১-১৭ ফলে জিতে ইন্ডিয়া ওপেনের শিরোপার জয় নিশ্চিত করেন ভারতের এই তরুণ তারকা শাটলার।

এই প্রথম এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন লক্ষ্য সেন (Lakshya Sen)। আর অভিষেক ম্যাচেই বাজিমাত। এদিন প্রথম গেমের শুরুতে ১৬-১০-এর ব্যবধানে এগিয়ে যান লক্ষ্য। কিন্তু তারপরই ম্যাচ নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেন লোহ। কিন্তু শেষপর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিয়ে ১৯-১৯ লেভেল অবধি স্কোর করেন লক্ষ্য সেন। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের লাশ ছিল লক্ষ্যর হাতেই। দ্বিতীয় গেমের শুরুতেও চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারানো মুখের কথা নয়, তা ভালই অনুভব করছিলেন ভারতীয় তরুণ তারকা। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যান তিনি আর তাতেই ধরা দেয় সাফল্য।

লক্ষ্যর পাশাপাশি টুর্নামেন্টে ট্রফি জিতেছেন আরও দুই ভারতীয় শাটলার স্বস্তিকসাইরাজ ও চিরাগ শেট্টি। এদিনই পুরুষদের ডাবলসে ইন্দোনেশিয়ার জুটি মহম্মদ আহসান ও হেন্ড্রাকে হারিয়ে খেতাব জিতেছেন তাঁরা।

লক্ষ্যর ব্যাপারে টোকিও প্যারালিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী ব্যাডমিন্টন তারকার মনোজ সরকার বলেছেন, সালটা ঠিক মনে পড়ছে না, তখন লক্ষ্যর বয়স খুব বেশি হলে ১০ বছর হবে। ওর বাবা ডি কে সেন স্যারের কোচিং সেন্টারে প্র্যাকটিস দেখতে গিয়েছিলাম আমরা কজন। বেঞ্চে বসে তখন বাচ্চা লক্ষ্য। পাশে ওই অ্যাকাডেমিরই আরেক ছাত্রী। ওর থেকে বয়সে বেশ খানিকটা বড়। হঠাৎ দেখি ডি কে সেন স্যার ওই ছাত্রীকে বললেন, লক্ষ্য যেন ঘুমিয়ে না পড়ে। দরকারে চোখে জলের ঝাপটা দাও, কিন্তু ওকে জেগে থেকে পুরো প্র্যাকটিস দেখাতে হবে। এতটাই কড়া ছিলেন উনি। সেই ১০ বছর বয়সেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এই ছেলে একদিন রাজ্য ও দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।