শাসন করার ‘শাস্তি’, শিক্ষিকাকে অর্ধনগ্ন করে মারধর! ৪৮ ঘণ্টা পরেও অধরা দুষ্কৃতীরা

0
250

বঙ্গদেশ ডেস্ক: স্কুলের স্টাফ রুমে ঢুকে শিক্ষিকাকে অর্ধ নগ্ন করে প্রহারের পাশাপাশি শ্লীলতাহানি, মারধরের ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বালুরঘাট থেকে হিলি – গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলা জুড়ে উঠেছে তীব্র প্রতিবাদের ঢেউ। দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে পথে নেমেছেন একধিক শিক্ষক সংগঠন, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলিও। দোষীদের বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ ইতিমধ্যে দায়ের হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত,গত বৃহস্পতিবার হিলি (Hili) ব্লকের ত্রিমোহিনী প্রতাপচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ক্লাসের বাইরে ঘোরাঘুরি করছিল নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী জান্নাতুন খাতুন। ওই স্কুলের একজন শিক্ষিকা চৈতালী চাকী তার কান টেনে বকা দিয়ে ঘরে পাঠান। আর এর ফলেই শুরু হয় বিপত্তি। বিষয়টি জানাজানি হতেই ছাত্রীর পরিবার ও প্রতিবেশীরা একসঙ্গে চড়াও হয়ে প্রধান শিক্ষকের ঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। এরপর স্টাফ রুমে ঢুকে পড়ে শিক্ষিকার শাড়ি একটানে খুলে শ্লীলতাহানি (Molest) ও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘিরে শুক্রবার থেকেই ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয়েছে স্কুল চত্বরে।

ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার ত্রিমোহিনীর ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ (NH) করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। সেখানে শামিল হয় প্রাক্তন পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ। হিলি-কলকাতা সহ একাধিক রুটের বাস ও যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। শিক্ষিকা নিগ্রহের ঘটনায় ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে প্রভাব পড়েছে।

বালুরঘাটের নালন্দা বিদ্যাপীঠ নামে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পথে নেমেছেন। পাশাপাশি শিক্ষক- শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এই স্কুলের শিক্ষক দীপক দাস বলেন,আমরা শারীরিক হেনস্তার শিকার শিক্ষিকার পাশে আছি। বিভিন্ন সময় অন্যায়ভাবে হেনস্থা হতে হয়। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যখন খুশি শিক্ষকদের নিগ্রহ করা যায় না।

নিখিলবঙ্গ শিক্ষিক সমিতির (এবিটিএ) পক্ষ থেকে বিকেলে বালুরঘাট (Balurghat) শহরে ধিক্কার মিছিল করে দোষীদের শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে। অপরদিকে, বিষয়টি মিটমাট হয়ে গিয়েছে বলে এড়িয়ে যাওয়া ত্রিমোহিনী প্রতাপচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শনিবার নিজের অবস্থান বদল করেছেন। শেষ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক কমল কুমার জৈন শিক্ষিকা চৈতালী চাকীর পাশে দাঁড়িয়ে হিলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ফিরদৌস মণ্ডল, আফ্রুজা মণ্ডল, জাকির হোসেন, মাসুদা খাতুন ও মাফুজা খাতুনের নামে।