বাংলাদেশে অজস্র সরস্বতীমূর্তির শিরচ্ছেদ মৌলবাদীদের! ‘বাচ্চাদের দুষ্টুমি” সাফাই পুলিশের

0
727

বঙ্গদেশ ডেস্ক: দুর্গাপুজোর মূর্তি ভাঙার দগদগে স্মৃতি এখনও জীবন্ত। ভয়ে ভয়ে একটু একটু করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিল বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। কিন্তু, হিন্দুরা বাংলাদেশে শান্তিতে থাকুক সেটা চায় না সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণীর মানুষ। এই উগ্রপন্থী মৌলবাদীরা একজন সাধারণ হিদুর সুখের জীবন সহ্য করতে পারে না। একজন মৌলবাদী শরিয়তপন্থী অন্যের আনন্দ, উৎসব নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আর নিজের স্বার্থসিদ্ধি পূরণের জন্য সে যেকোনোও ক্ষতি করতেও পিছপা হয় না।

ফের মৌলবাদীদের ক্রোধের শিকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। গত অক্টোবর মাসে একটা ভুয়ো ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে গোটা বাংলাদেশে দুর্গা পুজো মণ্ডপে তাণ্ডব চালিয়েছিল সে দেশের মৌলবাদীরা। পাশাপাশি ইস্কন মন্দিরে হামলা চালিয়ে সেখানকার সন্ন্যাসীকে হত্যা করে তারা। সেই জের না মিটতেই বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মীয় উৎসবের প্রাক্কালে উত্তেজনার সৃষ্টি করা হয়েছে। চট্টগ্রামে সরস্বতী দেবীর মূর্তি ভাঙচুর করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশের মৌলবাদীরা। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই সরস্বতী পুজো। জোরকদমে চলছে তার প্রস্তুতি। তাই বিদ্যার দেবীর মূর্তিও গড়া হচ্ছে বাংলাদেশে। কিন্তু সেই মূর্তিরই শিরচ্ছেদ করল উগ্র মৌলবাদীর দল। বোয়াখালিতে মোট ৩৫টি প্রতিমার শিরচ্ছেদ করেছে মৌলবাদীর দল।

শুক্রবার রাতে উপজেলার পূর্ব শাকপুরার ঐতিহ্যবাহী লালার হাট আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এই অদ্ভূত কাণ্ড ঘটেছে। মৃৎশিল্পী বাসুদেব পাল বিক্রির জন্য তৈরি প্রতিমাগুলো তৈরি করেছিলেন। এমন হামলায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন সকলেই।

মৃৎশিল্পী বাসুদেব পাল বলেছেন, লালার হাটে প্রতি বছর তিনি প্রতিমা তৈরি করেন। শনিবার সকালে সরস্বতী প্রতিমাগুলি ভগ্ন অবস্থায় দেখতে পান। এগুলোর বেশিরভাগই অগ্রিম বায়না নেওয়া আছে। আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি তার।
স্থানীয় বাসিন্দা সুদীপ্ত বিশ্বাস বিভু বলেছেন, ছোটবেলায় স্কুলে যাওয়ার পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাঁই দাঁড়িয়ে থেকে বাসুর প্রতিমা তৈরি দেখতাম। কখনও পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। কে বা কারা রাতের অন্ধকারে মূর্তি ভেঙে দিয়েছে।

বোয়ালখালি পুজো উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব অমিত লালা বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য এই এলাকায় একটি কুচক্রী মহল পরিকল্পিতভাবে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। বাসুদেব পালের গড়া প্রতিমা ভাঙচুর করে দীর্ঘদিনের সেই বিশ্বাসকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এর তদন্ত চাই।ওই স্থানে হাজির হয়েছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কবীর আহমেদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম সহ বাকি অফিসাররা । আবদুল করিম বলেছেন যে, রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নীচে ছিল প্রতিমাগুলো। এটা পরিকল্পনামাফিক হামলা নয়। আশেপাশের ছোট বাচ্চারা খেলার সময় দুষ্টুমি করে অথবা মিনিট্রাকে বাঁশ নিয়ে যাওয়ার সময় ভুলবশত দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে।