জাকাত প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আইএএস, আইপিএস, আইআরএস কর্মকর্তাদের বিষয়ে তদন্তের প্রয়োজনীয়তা

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন

0
792

– মধু পূর্ণিমা কিশওয়ার

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহাশয়,

জাকাত প্রতিষ্ঠান ইউপিএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ আমলাতান্ত্রিক পদগুলি অধিকার করার যে সুপরিকল্পিত ও সুসম্পাদিত ক্ষতিকারক পরিকল্পনাটি করছে, তার উদ্বেগজনক প্রভাব এসে পড়ছে ভারতের আইন মেনে চলা নাগরিকবৃন্দের উপর।

স্পষ্টভাবে বলতে গেলে সম্ভ্রান্ত ইউপিএসসি পরীক্ষা সহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতেও একটি মুসলিম সম্প্রদায়ের সংগঠন, তরুণ প্রজন্মকে আরো ভাল ফল করার জন্য সহায়তা করছে – এতে কোনো ভুল নেই বা বেআইনীও কিছু নেই। কিন্তু আমি আরো স্পষ্টভাবে ও দৃঢ়ভাবে বলছি যে আমাদের উৎকণ্ঠা ও সতর্কতা এই প্রতিযোগীদের মুসলিম হবার সঙ্গে একেবারেই সম্পর্কযুক্ত নয়। তাঁদের ভারতীয় জাকাত সংগঠনগুলির সঙ্গে সংযোগই আমাদের মূল উদ্বেগের কারণ।

সুদর্শন সংবাদের “ইউপিএসসি/ নওকরশাহী জেহাদ” শীর্ষক পরিকল্পিত অনুষ্ঠানের সম্প্রচার বন্ধ করে দেবার আদেশের উপর দিল্লির উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য জেহাদী ইসলামীয় সংগঠনগুলি যে বিদ্যুৎগতিতে ব্যবস্থা নিয়েছিল, তাতে ভারতের জাকাত সংগঠনের কর্মসূচির প্রতি জনগণের ভয় ও উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। তাঁদের এই দলবদলের চেষ্টা প্রমাণ করে যে, আদালতগুলি সাধারণত যে অনুষ্ঠানগুলি এখনো সম্প্রচারিত হয়নি, সেগুলির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন না। এ সমস্ত কিছু নির্দেশ করে যে, যে সমস্ত অন্তর্নিহিত স্বার্থগুলি ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছিল, তাতে ভারতের জাকাত সংগঠনগুলির আত্মরক্ষার জন্য অনেক কিছু গোপন করা অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

এমনকি আরো উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, যে তীব্রতায় সুদর্শন সংবাদের মুখ্য সম্পাদক শ্রী সুরেশ চৌহানকে “ঘৃণাবাচক শব্দ” প্রচারের অভিযোগে তাঁরা বিখ্যাত সাংবাদিক, চিত্র পরিচালক, উকিল এবং সভ্য সমাজের সদস্য সহ ১৭০০ জন নাগরিককে সুসংহত করে সাতজন মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করার ব্যবস্থা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত এটি উল্লেখযোগ্য যে তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ দরখাস্তকারী “অ্যাওয়ার্ড ওয়াপসি গ্যাং ” এবং শাহীনবাগ-সমর্থনকারী গোষ্ঠীর অন্তর্গত।

 

সম্ভ্রান্ত সিভিল সার্ভিসে জাকাত সংস্থার প্রবেশ :

২০০৯ সাল থেকে ভারতীয় জাকাত সংস্থা ‘জাকাত’ তহবিল থেকে মুসলিম পরীক্ষার্থীদের ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বৃত্তি এবং প্রশিক্ষণ দানের উদ্দেশ্যে প্রচুর পরিমাণে অর্থব্যয় করে চলেছে। ভারতীয় জাকাত সংস্থার প্রচুর সংখ্যক লাভবান ব্যক্তি বর্তমানে আইএএস, আইপিএস, আইআরএস কর্মকর্তা হিসাবে এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত আছেন।

● শুধুমাত্র ২০২০ সালে ইউপিএসসি তে ৪০ জন মুসলিম প্রতিযোগীর মধ্যে যে ২৭জন নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ভারতীয় জাকাত সংস্থা দ্বারা লাভবান হয়েছেন।

● ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতীয় জাকাত সংস্থার সর্বমোট ১১৯ জন ব্যক্তি সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেছেন।

ভারতীয় জাকাত সংস্থার সন্ত্রাসের সঙ্গে সংযোগসূত্র এবং জেহাদী ইসলামবাদীয় আলোচ্যসূচির অভিযোগ

ভারতীয় জাকাত সংস্থা যে কঠোরভাবে জেহাদী ইসলামবাদীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে – এ বিষয়ে ভারতীয় সরকার কখনই অনবগত থাকতে পারেন না। গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ, তাঁদের জন্যই ভারতীয় জাকাত সংস্থার যে নিষিদ্ধ/ সন্ত্রাসবাদী সংস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ সংযোগ আছে, তা প্রকাশ্যে এসেছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এও প্রকাশ করে যে, সন্ত্রাসসূচক ডাঃ জাকির নায়েকের ভারতীয় জাকাত সংস্থার সঙ্গে অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

আপনার নিজস্ব সরকার বেআইনী কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন, ১৯৬৭, (ইউএপিএ) এর আওতায় ডাঃ জাকির নায়েকের ইসলামীয় গবেষণা সংস্থাকে নিষিদ্ধ করেছেন। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদ স্পষ্টভাবে মন্তব্য করেছেন যে ডাঃ জাকির নায়েক ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে শত্রুতা প্রচার করছেন এবং ভারতে ও বিদেশের মুসলিম যুবকদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হবার জন্য প্ররোচনা দিচ্ছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, ভারতীয় জাকাত সংস্থার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই বিপুল সংখ্যক ইউপিএসসি প্রার্থী ভারতের সম্ভ্রান্ত চাকুরিটিতে নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁদের ক্ষতিকারক সংযোগগুলি অত্যন্ত উদ্বেগের সৃষ্টি করে কারণ, এই সমস্ত আধিকারিকরা কেবল দেশের সুরক্ষা জড়িয়ে আছে এমন রাষ্ট্রীয় গোপন বিষয়গুলিকে গুপ্ত রাখেন তা নয়, তাঁরা দেশের নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের একাংশ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন।

ভারতের জাকাত সংস্থার সর্বমোট যে ১১৯ জন ব্যক্তি সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেছেন তাঁদের তালিকাটি একেবারে শেষে পরিশিষ্ট ১ আকারে সংযুক্ত করা হয়েছে। এই তালিকাটি ভারতীয় জাকাত সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা হয়েছে।

 

আইবি অথবা র কি জাকাত সংস্থার ব্যক্তিদের পূর্বপরিচয় প্রকাশ করেছিল?

ব্রিটিশ যুগ থেকে শুরু করে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের(আইসিএস) আজকের ভারতীয় প্রশাসনিক দপ্তর (আইএএস) এর রূপ পর্যন্ত এই প্রথা প্রচলিত হয়ে আসছে যে, যে সকল প্রতিযোগী লিখিত পরীক্ষায় এবং সাক্ষাৎকারে উত্তীর্ণ হলে তাঁদের গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃকও উত্তীর্ণ হতে হয়। এই ধরণের সতর্কতামূলক পদক্ষেপগুলি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই নানা উপায়ে গৃহীত হয়ে থাকে।

ইউপিএ শাসনের অধীনে এ জাতীয় বিষয়ে শিথিলতা পরিলক্ষিত হয়, কারণ তাঁদের গোপন লক্ষ্য ছিল ভারতে জেহাদী ইসলামের প্রতিষ্ঠাকে সহজতর করা। আপনারা যে কেউ অনুমান করতে পারেন যে ড. মনমোহন সিং এর প্রধানমন্ত্রিত্বকালীন সময়ে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত (ওএসডি) কর্মকর্তা হিসাবে ডঃ সৈয়দ জাফর মাহমুদ ( একজন ভারতীয় রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা এবং জাকাত সংস্থার মুখ্য প্রতিষ্ঠাতা) এর নিয়োগ হয়েছিল এই কর্মসূচিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তাঁকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সাচার কমিটির দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল, যার প্রতিবেদনগুলি মুসলিমদের মনে আক্রান্তের বোধ ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যাপক তত্ত্ব ও তথ্যের নয়ছয় করার কাজ করেছিল। তিনি বর্তমানেও জাকাত সংস্থার সভাপতি।

এখন আমরা যোগসূত্রগুলিকে মেলাতে পারি এবং আমরা বুঝতে পারব যে কেন ডঃ মনমোহন সিংয়ের নির্লজ্জ অসাংবিধানিক বিবৃতিটি – “ (ভারতের) সম্পদের উপর সর্বপ্রথম অধিকার অবশ্যই মুসলিমদের হওয়া উচিত” – এর পর যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল, তা একপ্রকার তিনি উপেক্ষা করে গেছেন।

ইউপিএ সরকারের নীতিগুলি রাষ্ট্রবাদী সরকারের অধীন : এটি সর্বজনবিদিত যে ড. মনমোহন সিং ছিলেন একজন খেলার পুতুল মাত্র। কিন্তু ইহা এটা অস্বীকার করে যে কীভাবে বিগত ছয় বছর ধরে আপনার স্ব-ঘোষিত “রাষ্ট্রবাদী” শাসনকাল যা কিনা দাবি করে যে তাঁরা ভারত থেকে সন্ত্রাসবাদকে মুছে দিয়েছেন, এ ব্যাপারে সে সময় কীভাবে একটি ধ্বংসাত্মক সংস্থা কর্তৃক প্রচুর মানুষ লাভবান হয়ে দীক্ষিত ও প্রশিক্ষিত হয়ে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সহিত সংযোগ রেখেও ভারতের সম্ভ্রান্ত সিভিল সার্ভিসে নিযুক্ত হতে পারেন! আমাদের জানা প্রয়োজন যে গোয়েন্দা বিভাগ (আইবি) এবং গবেষণা বিশ্লেষণ শাখা (র) – কে এই সকল প্রার্থীর পরিচয় পরীক্ষা করা থেকে কারা তাঁদের বরখাস্ত করলেন বা এই ক্ষমতা হ্রাস করে দিলেন? যেখানে সকলে জানেন যে তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী সংগঠনের সঙ্গে এই সকল ব্যক্তির ক্ষতিকর যোগসূত্র আছে!

এটি কি “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস”-এর ধারণাকে একটি বিপজ্জনক সীমার দিকে ঠেলে দেয় না?

গুজরাটের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে হোক বা ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হোক, আপনি কারখানার মালিক, পুলিশ কর্মকর্তা, বিচার বিভাগীয় আধিকারিক এবং বিভিন্ন কেন্দ্রীয় পরিষেবার কর্মকর্তারা কীভাবে আপনার বিভিন্ন নীতি ও পরিকল্পনাগুলিকে তাঁদের নিজস্ব স্বার্থের কারণে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন, তা সম্পর্কে আপনি অবগত আছেন। তাঁদের এই প্রচেষ্টায় ভারতের আভ্যন্তরীণ ও বহির্দেশীয় শত্রুরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। আমলাতন্ত্রের মধ্য থেকে যে মানহানি অভিযান করা হয়েছিল, আপনি স্বয়ংও তার ভুক্তভোগী। তবুও আপনার সরকার প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না যাতে এটা নিশ্চিত করা যায় যে, যে সকল ব্যক্তি জেহাদীইসলামবাদীয় অভিযানে ভারতভঙ্গের কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন, তাঁরা যেন কোনোভাবেই ভারত সরকারের উচ্চ পদ্গুলিতে আসীন হতে না পারেন।

 

জাকাত সংস্থার সঙ্গে সন্ত্রাসজড়িত মদিনা অছি পরিষদের অংশীদারিত্ব

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আপনাকে মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে যে ভারতীয় জাকাত সংস্থার আন্তর্জাতিক অংশীদার হল মদিনা অছি পরিষদ যার ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনের ভারতীয় উচ্চ কমিশনের উপর হামলার সঙ্গে একটি যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এটি তাঁদের বহু বেআইনী কার্যকলাপের পাহাড়ের চূড়ামাত্র। মদিনা অছি পরিষদের ডঃ জাহিদ আলি পারভেজ ইসলামীয় সংস্থারও একজন অছি। দ্য টাইমস প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছিল যে তালিবান ও আলকায়দার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিয়ে নির্মিত তালিকায় এই দুটি ইসলামীয় অছি পরিষদও আছে।

অন্যার্থে, ভারতীয় জাকাত সংগঠন, তালিবান ও আলকায়দার মধ্যে যে যোগসূত্র আছে, তা নিয়ে অনেক আগে থেকেই তদন্ত করা উচিত ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে, ভারত সরকার এই সকল প্রশিক্ষিত তরুণদের “ ভারতের ইস্পাত কাঠামো”-য় অংশগ্রহণ করার অনুমতি দিয়ে চলেছে। এটি ভারতের সুরক্ষা ও অখণ্ডতার জন্য ক্ষতিকারক প্রমাণিত হতে পারে।

অখণ্ড ইসলামবাদীয় কর্মসূচির প্রতি প্রকাশ্য অনুরক্তি

ভারতের জাকাত সংস্থা কখনই তার অভিপ্রায় আড়াল করার কোনো চেষ্টাই করেনি। এমনকি অদ্যাবধি তাঁরা নিজস্ব ওয়েবসাইটে তাঁদের জেহাদী ইসলামবাদীয় কর্মসূচি নিয়ে প্রকাশ্যে গর্ব করে চলেছেন। যাইহোক, সাম্প্রতিককালে প্রকাশ্যে আসার পর কিছুদিনের মধ্যেই তাঁদের ওয়েবসাইট থেকে কিছু কিছু লিঙ্ক হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল। যদিও সেগুলি অন্যান্য ওয়েবসাইটে এখনো বিপুল সংখ্যায় খুঁজে পাওয়া যায়। তাই বহু সংখ্যক ইউপিএসসি প্রতিযোগীর পৃষ্ঠপোষকতা করার ক্ষেত্রে তাঁদের এই উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য আপনার মন্দবুদ্ধি গোয়েন্দা বিভাগগুলিকে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবে না।

শারিয়া পালনকারী ব্যক্তিদের সিভিল সার্ভিসে যুক্ত হবার প্রভাব

তাঁদের ওয়েবসাইটটি শারিয়ার (ইসলামীয় বিধি) প্রতি আনুগত্য ও সমগ্র বিশ্বজুড়ে জাকাত সাদাকা প্রশাসনকে প্রসারিত করার প্রয়োজনীয়তাকে প্রচার করার উদ্দেশ্যেই নিবেদিত। ভারতীয় জাকাত সংস্থা অনুসারে, “যে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কার্যকলাপকে অবশ্যই শারিয়ার বিধি মেনে চলতে হবে (শারিয়ার উপদেষ্টা সংস্থার তত্ত্বাবধানে)”। বর্তমানে এটি সর্বজনবিদিত যে, ‘হালালো-নমিক্স’ (হালাল শংসাপত্রের অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য) এর মাধ্যমে মুসলিমরা ওষুধ, প্রসাধনী সামগ্রী, নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি সামগ্রী সহ প্রায় সকল প্রকার ভোগ্য পণ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বাজার দখল করে ফেলেছে। গোপনভাবে তাঁরা এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন যেখেনে অ-মুসলিম ব্যক্তিরাও জাকাত তহবিলে কয়েক বিলিয়ন ডলার এবং কোটি কোটি টাকা দান করেছিলেন, সেগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল জেহাদী ইসলামবাদীয় কর্মসূচির বাস্তবায়নের জন্য এবং অভ্যন্তরীণভাবে নানা উপায়ে আমাদের গণতান্ত্রিক সমাজকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য।

ভারতের জাকাত সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সিভিল সার্ভেন্টরা ভারত বিরোধী প্রচার ও জেহাদী ইসলামের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য ভয়ঙ্কর ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হল – ২০১০ এর ব্যাচের আইএএস টপার শাহ ফয়জল, যিনি ভারতীয় জাকাত সংস্থার ইস্তাহারের প্রধান মুখ ছিলেন এবং তাঁকে তাঁদের ওয়েবসাইটেও ব্যাপকভাবে প্রদর্শন করা হয়েছিল।

আমিও ভারতের অগণিত অন্যান্য বাসিন্দাদের মত কাশ্মীর থেকে তাঁর সর্বপ্রথম আইএএস আধিকারিক হওয়া নিয়ে অত্যন্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলাম এবং অনুমান করেছিলাম যে তিনি মুসলিমদের মধ্যে বৈষম্যের ধারণাকে মুছে দিয়ে কাশ্মীরি যুবকদের “মূল স্রোতে” ফিরে আসার জন্য অনুপ্রাণিত করবেন। আমি মনে করেছিলাম যে তিনি সকলকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হবেন যে ভারতের সর্বোচ্চ পদে একজন মুসলিমকে আসীন হতে দেখে ভারতবাসী খুশিই হন। কিন্তু খুবই অল্প সময়ের মধ্যে শাহ ফয়জল তাঁর আসল রূপটি প্রকাশ করে ফেলেন। ২০১৮-১৯ সাল নাগাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর পড়াশোনার ছুটিতে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে প্রচার করা শুরু করে দেন এবং সেই ছুটির পর যখন তিনি জম্বু-কাশ্মীরে ফিরলেন, তারপরেই তিনি নাটকীয়ভাবে আইএএস পদ থেকে পদত্যাগ করেন কারণ তিনি একটি নিজস্ব পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ভারতীয় সরকারকে আরো উপহাস করার জন্য শাহ ফয়জল পাকিস্তনের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের সুপারিশ করেছিলেন। সর্বোপরি, তিনি যখন তুর্কিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, যা পাকিস্তানের অন্তরঙ্গ বন্ধুদের মধ্যে একটি, তখন দিল্লির বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার হতে হয়।

শাহ ফয়জল একমাত্র মুসলিম কর্মকর্তা নন যিনি পাকিস্তান ও জেহাদী ইসলামের স্বার্থে ভারতকে নিরাশ করেছেন। প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি একজন আইএফএস আধিকারিক ছিলেন। তিনি আরো নির্লজ্জভাবে তাঁর ভারতবিরোধী কার্যকলাপগুলিকে চালিয়ে গেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ইরানে রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিযুক্ত থাকার সময়, সেদেশে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কার্যকলাপকে তিনি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করেছিলেন, যার ফলস্বরূপ ভারতের সুরক্ষা এবং ইরানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিপর্যস্ত হয়েছিল – তাঁর বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে অভিযোগ করার পরেও তিনি অভিযোগ অস্বীকারের বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি।

আরেকটি সুপরিচিত উদাহরণ হল – প্রাক্তন আইএএস কর্মকর্তা ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ, যিনি জেকেএলএফ এর সন্ত্রাসবাদী ইয়াসিন মালিকের ‘আত্মসমর্পণ’-কে এই পুরস্কারে ভূষিত করেছিলেন যে তিনি ভারতে ইয়াসিন মালিকের সুরক্ষার আশ্বাস দিচ্ছেন। ৩০ বছর ধরে ইয়াসিন মালিক আইএএফ কর্মকর্তাবৃন্দ ও অজস্র কাশ্মীরি পণ্ডিতদের খুনের দায় স্বীকার করে নেওয়ার পরও তাঁকে কোনোদিন কাঠগড়ায় তোলা হয়নি। বস্তুত জামিনে মুক্তি পাবার পর, তিনি এক বীরের মতো অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন এবং তাঁকে প্রচুর পরিমানে অর্থ সংগ্রহের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, বিশাল সম্পত্তি এবং বিশ্বজুড়ে বিলাসবহুল জীবনযাত্রা চালিয়ে যাওয়ার সুবিধা প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সমানে ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে গেছেন।

শুধু হাবিবুল্লাহ কেন, সকলে জানেন যে জম্বু কাশ্মীরের বহু আইএএস ও আইপিএস মুসলিম যে কর্মকর্তারা যে হুরিয়তপন্থী ও পাকিস্তানপন্থী, সে বিষয়ে তাঁরা কোনো গোপনীয়তা বজায় রাখেননি। এর পূর্ব প্রজন্মের কর্মকর্তাবৃন্দ কিন্তু ভারতীয় জাকাত সংস্থা কর্তৃক প্রশিক্ষিত হননি।

সংখ্যালঘুর সহায়তায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারকে বিজেপি সরকারের ছাপিয়ে যাওয়া

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আমি অত্যন্ত দুঃখের সহিত আপনাকে জানাচ্ছি যে, ‘ভারতের ইস্পাত কাঠামো’ কে অভ্যন্তরীণ নাশকতা থেকে রক্ষা করার পরিবর্তে আপনার সরকার সমস্ত ক্ষমতায় তাঁদের প্রবেশাধিকারকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ইউপিএ সরকার সংখ্যালঘুর (খ্রিস্টান ও মুসলমানের পরিবর্তে একটি চতুর শ্রুতিমধুর নাম) নাম করে যে বিশেষ নীতিগুলি আপনাকে মানতে বাধ্য করতে চাইছিল সেগুলিকে আপনি সাহসিকতার সাথে প্রতিরোধ করেছেন। ২০১৩ তে, আমার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে আপনি গর্বের সহিত বর্ণনা করেছিলেন যে কীভাবে আপনি কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘুর জন্য বিশেষ নীতিগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ আপনার রাজ্যের কল্যাণমূলক নীতিগুলি আয়ের মানদণ্ড অনুসরণ করছে – ধর্মের নয়।

তবে প্রধানমন্ত্রী হবার পরে আপনি ইউপিএকে বিশেষত সংখ্যালঘুদের জন্য আপনি অসংখ্য প্রকল্প এমনকি কয়েক হাজার কোটি টাকারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন – যেগুলির নির্দিষ্ট একটি আকর্ষণীয় অংশ প্রত্যেক কেন্দ্রীয় সরকার মন্ত্রক অন্যান্য নাগরিদের দিতে অস্বীকৃত হয়েছিলেন। সর্বোপরি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত প্রকল্পগুলির উদ্ভট বিষয়বস্তু যে কারোর মাথা খারাপ করে দিতে পারে। আপনার প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করার দিনই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই মন্ত্রণালয়কে আপনার উচ্ছেদ করা উচিত ছিল, কারণ এটি আপনার বহুল চর্চিত’ সবকা সাথ, সবকা পাশ, সবকা বিশ্বাস’ স্লোগানের উলঙ্ঘন করে।

কিন্তু পরিবর্তে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গর্ব করে বলে যে বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে ইউপিএ এর দিন গুলির থেকে আপনার সরকারের দ্বারা নতুন এবং পুরাতন প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে। ইউপিএ সরকারের যে ‘জনমোহিনী রাজনীতি’র বিরুদ্ধে আপনি একসময় গর্জে উঠেছিলেন, আপনার সরকার তার থেকেও বেশি নির্লজ্জ হয়ে উঠেছে। আরও খারাপ বিষয় হচ্ছে, ভারতের জাতীয় সুরক্ষার জন্য এবং ভারতীয় সভ্যতার সংরক্ষণের জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের দ্বারা সুবিধাভোগীদের যাচাই করার কোনো পরিকাঠামো নেই।

নয়ি উড়ান নাকি পিচ্ছিল সিঁড়ি?

বর্তমানে এই গুলির মধ্যে সবচেয়ে বিরক্তিকর বিষয় হলো সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নয়ি উড়ান প্রকল্প যার আওতায় প্রত্যেক ইউপিএসসি প্রতিযোগী যারা কোনো “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়”- এর অন্তর্ভুক্ত,তারা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য সরকারী সাহায্য স্বরূপ ১,০০,০০০ টাকার বৃত্তি পাবে।

● ২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত সর্বমোট ‘সংখ্যালঘু’ সুবিধাভোগী সংখ্যা ছিল ৪৮৩ জন।

● ২০১৪ সালে সরকার সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস'” এই স্লোগানটি সোচ্চার করার পর, এই নম্বরটি প্রায় আকাশ ছুঁয়ে ফেলে – এই সংখ্যাটি মাত্র চার বছরে ৪১৪২ এ পৌঁছয় অর্থাৎ প্রায় দশ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

এবং প্রিয় প্রধানমন্ত্রী আপনি নিজেও ২০১৯ এর সাধারণ নির্বাচন এবং তৎসহ অন্য অনেক রাজ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই বিশেষ প্রকল্পগুলিকে আপনার বড় সাফল্য বলে গর্ব বোধ করেছিলেন। এই সকল গর্বের বিষয় গুলিকে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্ত করেন। আবারও দেখা যাচ্ছে যে এখানেও পরিচয় যাচাই এর কখনো পরিকাঠামো নেই এবং ভারত বিরোধী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত ব্যাক্তিদের ছাঁটাই করারও কোনো ব্যবস্থা নেই। এর প্রকৃত অর্থ হল ‘ভারতের ইস্পাত কাঠামো’তে জাকির নায়েকের চেলা চামুণ্ডাদের নিয়োগ করার জন্য আপনার সরকারকে খুব সহজেই দোষারোপ করা যায়। এর তাৎপর্য অত্যন্ত স্পষ্ট। নিজের সুবিধা মতো স্থানে উপবিষ্ট হয়ে মায়ের বুকে ছুরি বসাতে পারেন এবং যখনই তাঁদের পৃষ্ঠপোষকরা এটি করতে বলবেন তখনই তাঁরা এটা করে ফেলতে পারেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, এটি বিনা যাচাই হয়ে দিনের পর দিন চলতে পারে না। যদিও আমি জানি আপনি প্রচেষ্টা করছেন তবুও জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে এবং সভ্যতাগত অখণ্ডতার স্বার্থে আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি:

● ভারতীয় জাকাত সংস্থার সাথে সন্ত্রাসবাদের প্রশিক্ষক ডাঃ জাকির নায়েক, তালিবান ও আল- কায়দার সাথে যোগাযোগের বিষয়ে একটা গভীর তদন্তের নির্দেশ দিন;

● সমস্ত মুলতুবি হওয়া তদন্তগুলি চালু করুন এবং জাকাত সংস্থার সাথে যুক্ত সমস্ত সরকারি কর্মীদের পুনরায় ডাকুন;

● জাতীয় তদন্ত কমিটি (এনআইএ) কে নির্দেশ দিন যাতে তাঁরা প্রত্যেক ইউপিএসসি প্রতিযোগী ও সফল ছাত্রের পরিচয় যাচাই করেন এবং বোঝা যায় যে তাদের মধ্যে কাদের জাকাত সংস্থার সাথে যোগাযোগ রয়েছে এবং তাঁরা কতটা মাত্রায় দীক্ষিত।

ভারতীয় জাকাত সংস্থা এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলি, যেগুলির সন্ত্রাসের সাথে যোগসূত্র রয়েছে, তাদের নিয়ে একটি শ্বেতপত্র জারি করুন এবং তৎসহ একটি স্পষ্ট নীতি বিবৃতি দিয়ে প্রকাশ করুন যে ক্ষতিকারক জেহাদী ইসলামবাদীয় চিন্তাধারা মেনে চলা এরূপ কোনো সংগঠন আদৌ গণতান্ত্রিক ও বহুত্ববাদী ভারতে কোনো স্থান পেতে পারে?

মধু পূর্ণিমা কিশওয়ার একজন বিশিষ্ট লেখিকা। তাঁর মূল লেখা থেকে অনুবাদ করেছেন অঙ্কুশা।

 

(বঙ্গদেশ পোর্টল এই লেখার দায়ভার বহন করে না)