বঙ্গদেশ ডেস্ক:-: ফের একবার স্বমহিমায় মঞ্চে অবতীর্ণ হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এবার তিনি মুখ খুলেছেন জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে রিলিজ হওয়া টিভি সিরিজকে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহোর ভাস্কর্যকে টেনে সরাসরি বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেছেন সাংসদ। ওয়েব সিরিজের একটি দৃশ্যে মন্দিরের মধ্যে তরুণ-তরুণীকে চুমু-খাওয়ারত অবস্থায় দেখানো গিয়েছিল আর তা ঘিরেই বিতর্ক দানা বাঁধে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে রে রে করে রব তুলেছিল হিন্দুত্ববাদীরা। মধ্যপ্রদেশ সরকার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে নেটফ্লিক্সের ওই ওয়েব সিরিজ নির্মাতাদের খতিয়ে দেখতে। নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে আর তার পরেই শিবরাজ সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
খাজুরাহো দেওয়ালের একটি অংশ তিনি টুইটারে পোস্ট করে বলেছেন, “মধ্যপ্রদেশ সরকার পুলিশকে নেটফ্লিক্স খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। অভিযোগ, হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। কিন্তু রাজধানী থেকে মাত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত খাজুরাহো। তার দেওয়ালের দৃশ্য সম্পর্কে মনে হয় রাজ্যের নেতারা ওয়াকিবহাল নন।”
Irony dies a 1000 deaths under @BJP
MP govt asks police to check Netflix series for kissing scenes filmed in temple & if it hurt sentimentsMeanwhile, in Khajuraho just 300 km away from state capital… pic.twitter.com/PagvSRIovq
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) November 26, 2020
প্রগতিশীলদের বরাবরের অভিযোগ, বিজেপি সরকার ক্ষমতা কায়েম করার পর এমন ভাবে যৌন শুচিবায়ুগ্রস্ততাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হচ্ছে যে খোলা মনে কোনো শিল্পী তার শিল্পকর্ম করতে পারছেনা। অযৌক্তিকভাবে ধর্ম-সংস্কৃতি জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, মনুবাদী সংস্কৃতির ছুতোয় সিনেমা, শিল্পকর্ম সব ধরনের কর্ম ও মুক্তচিন্তার উপর বুলডোজার চালিয়ে দিচ্ছে বিজেপি সরকার। যে ঘৃণ্য মানসিকতা নিয়ে কালবুর্গি, গোবিন্দ পানসারে, গৌরী লঙ্কেশ দের হত্যা করা হয়েছে, যে মনোভাব নিয়ে ভারবারা রাও, স্ট্যান স্বামীদের বন্দী করে রাখা হয়েছে এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।
প্রসঙ্গত কয়েক বছর আগে সঞ্জয় লীলা বানশালী পরিচালিত দীপিকা রণবীর অভিনীত পদ্মাবতের মুক্তি ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সূচনা হয়েছিল উত্তর ও পশ্চিম ভারতে। তারপর তড়িঘড়ি ছবি নির্মাতারা নাম বদলে সিনেমাটি রিলিজ করে। অনেকেরই অভিযোগ, এর পেছনের হিন্দুত্ববাদীদের স্পষ্ট মদত ছিল।
অন্যদিকে অভিযোগ ওঠে, এলজিবিটি বা সমকামিতাকে বৈধতা রায়দানের পরেও একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন তার বিরোধিতা করেছিল। তাদের অভিযোগ ছিল, সমকামিতা ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী। পশ্চিমা সংস্কৃতির আমদানি দেশের মাটিতে চলবে না। অনেকের মতে, এটি একটি সহজ এবং স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। এর মধ্যে যে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে সেটাকে অস্বীকার করা যায় না। সেই সময়েও খাজুরাহো মন্দিরের দেয়াল চিত্র তুলে ধরে ভারতীয় সংস্কৃতির কথা বলেছিলেন অনেকে। ফের একবার খাজুরাহোকে ঘিরে বিজেপি সরকারকে খুঁচিয়ে দিলেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র।।