বাঙ্গালী বিজ্ঞানীর হাত ধরে কলকাতা থেকে তৈরি হবে অত্যাধুনিক ড্রোন বেস এসএআর

0
456

বঙ্গদেশ ডেস্ক:মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রাক্তন শীর্ষ বৈজ্ঞানিক তপন মিশ্রর এবার বাংলায় প্রযুক্তিগত বিনিয়োগে উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি তৈরী করতে চলেছেন ড্রোন বেস এসএআর বা সিন্থেটিক অ্যাপারেচর রাডার। যেটি বেশ কম উচ্চতা থেকেও পরিষ্কার ছবি তুলতে পারবে। এর আগে শুধুমাত্র স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এই ছবি তোলা যেত। এই রাডারের সঙ্গে ড্রোনেও জুড়ে দেওয়া সম্ভব। ফলে এটি সেনাবাহিনীর প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি নাগরিক পরিষেবার ক্ষেত্রেও অনায়াসে ব্যবহার করা যাবে।

তপন মিশ্র বলেছেন, প্রাথমিকভাবে একটি ড্রোননির্ভর উচ্চ- রেজলিউশন সম্পন্ন রাডার তৈরি করা হয়েছে। এরকম আর কোনও ড্রোন বেসড এসএআর রয়েছে কি না, জানা নেই। কারণ, কম তাপমাত্রায় বিভিন্ন ঝঞ্ঝাট দেখা যায়। যা ছবি তোলার সময় সমস্যা তৈরি করে এবং ছবির মান ঠিকঠাক থাকে না। সাধারণত, এসএআরকে গতিশীল জিনিসের সঙ্গে জোড়া হয় সেটা যুদ্ধবিমানও বা উপগ্রহও হতে পারে।

তপন মিশ্র এই সংস্থার নামকরণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতার পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা শিশির কুমার মিত্রের নামে করেছেন। নাম রেখেছেন ‘শিশির রাডার’। তপনবাবুর ছেলে সৌম্য মিশ্র ও পুত্রবধূ উর্মি ভাম্বানিও আহমেদাবাদে নথিভুক্ত এই নতুন সংস্থা ‘শিশির রাডার’-র সঙ্গে যুক্ত। তপনবাবুর কথায়, ইসরো যা তৈরি করে, আমিও যদি সেই এসএআর-ই বানাই, তবে লোক আমার কাছে কেন আসবে? আমি এমন একটা রাডার তৈরি করলাম, যেটা একটানা পরিষ্কার ছবি দেবে। সাধারণ সিন্থেটিক অ্যাপারেচর রাডারের পক্ষে কিন্তু সেটা সম্ভব না। আশা রাখছি দু’বছরের মধ্যে এই নতুন রাডার তৈরি হয়ে যাবে।

তপন মিশ্র বলেছেন, কোম্পানিটা তিনি কলকাতাতেই চালাবেন। কলকাতায় বিনিয়োগকারীও পেয়েছেন। বেতারতরঙ্গের ইঞ্জিনিয়ারও কলকাতায় যথেষ্ট পরিমাণে আছে। ছেলে ও বউমা তাঁকে নতুন সংস্থার কাজে ভীষন সাহায্য করছে। বেশ সুবিধাই হচ্ছে বলে তপনবাবু বলেছেন।

তবে কারা বিনিয়োগ করছে তাঁর সংস্থায়? সেবিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ এই বাঙ্গালী বিজ্ঞানী। ইতিমধ্যেই বহু সংস্থা তাঁর এই নতুন ধরনের এসএআর তৈরির কথা জানতে পেরে উৎসাহ দেখাতে শুরু করেছে।কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে তাঁর সংস্থার এই রাডার কি আদৌ মানুষের কাজে লাগবে? তপনবাবুর স্পষ্ট জানিয়েছেন, যে সংস্থা শস্যবিমা দেয়, তাদের মহাকাশে উপগ্রহ থেকে ব্যবহৃত রাডারের দরকার হয় না। তারা দেখতে আগ্রহী, যে খেতের জন্য বিমার টাকা দিচ্ছে, তার একটা পরিষ্কার ও স্বচ্ছ ছবি। এই রাডার ড্রোন থেকে ব্যবহার সম্ভবপর। যার সাহায্যে বিমা সংস্থাগুলো সেই পরিস্কার ও স্বচ্ছ ছবি সহজেই পেয়ে যাবে। তাছাড়া, জমির ফসল পোকায় খাচ্ছে কি না, তা এই রাডারের সাহায্যে বোঝা যাবে। খনি থেকে পরিকাঠামোর কাজ সব ঠিকঠাক চলছে কি না, সেই ব্যাপারে ও জানা যাবে। এছাড়াও, গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পের কাজও ঠিকমতো হচ্ছে কি না, স্রেফ ড্রোনে এই রাডার লাগিয়েও জানা যাবে।