মরিশাসের আগালেগা দ্বীপে তৈরি হচ্ছে ‘মিলিটারি বেস’, ভারত শাসন করবে সমুদ্রপথেও

0
892

বঙ্গদেশ ডেস্ক – ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সফর করেছিলেন মরিশাসে। সেই সফরকালে ভারত, দুর্গম ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাসের সঙ্গে “পরিকাঠামো স্থাপন ও উন্নত করার” জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে এটি ‘পরিকাঠামো উন্নয়নের’ বকলমে সেই দেশের আগালেগা দ্বীপপুঞ্জে একটি সামরিক ঘাঁটি তৈরির চুক্তি ছিল।

পরিকল্পনা ছিল বি ৭৩৭-৯০০ থেকে শুরু করে এয়ারবাস ৩২১ ধরণের বিমানের আসা যাওয়ার সুবিধার্থে দ্বীপের মাঝখানে একটি রানওয়ে তৈরি করার ব্যবস্থা করা। এর সঙ্গে শত্রু বা মিত্র জাহাজ চিহ্নিতকরণের জন্য ট্রান্সপন্ডার সিস্টেম বসানোর ভাবনা আছে। প্রাক্তন জেটি, কাঠামো ও স্থাপনাগুলির জায়গায় একটি বন্দর তৈরির ভাবনাও আছে।

প্রকল্পটির বিষয় ২০০৫ সালে প্রথম উত্থাপিত হয়েছিল এবং মরিশাসের ঘরোয়া রাজনীতিতে এটি একটি বিতর্কিত ইস্যুতে পরিণত হয়েছিল। ফলত চুক্তি সই হওয়ার পরে প্রথম কয়েক বছরে অগ্রগতি খুব কম হয়েছিল। তবে ২০১৮ সাল নাগাদ নরেন্দ্র মোদীর সরকার দ্বীপের রানওয়ে এবং বন্দর ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজটি ভারতের ‘আফকন ইনফ্রাস্টাকচার’কে প্রদান করে। এরপরে ২০১৯ সালে আবার কাজ শুরু হয় এবং খুব দ্রুত গতিতে তা চলতে থাকে।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজের রিসার্চ অফিসার স্যামুয়েল ব্যাশফীল্ড কিছুদিন আগেই মরিশাসের এই দ্বীপের উপগ্রহ চিত্র ভাগ করে নেন, তাতে দক্ষিণ আল্গি দ্বীপে পরিকাঠামো তৈরির প্রমাণ পাওয়া গেছে। ছবিটি ২০২০ এর ডিসেম্বারে তোলা, তাতে একটি ৩,০০০ মিটার লম্বা বিশাল রান-ওয়ে দেখা যাচ্ছে, ১৯৮০ -তে তৈরি একটি ছোট্ট এয়ার স্ট্রীপের পাশে।

স্যাটেলাইট চিত্রে নতুন তৈরি রানওয়ের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত মূল জেটির কাছাকাছি অঞ্চলে সংগঠিত নির্মাণকাজও পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। দুটি পৃথক বসতিতে প্রচুর বিল্ডিং, একাধিক শেড এবং শত শত ভারতীয় নির্মাণ শ্রমিকের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে স্বরাজ্য তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে। এই বিল্ডিংগুলির কয়েকটি অস্থায়ী হতে পারে তবে এগুলির বেশ কিছু ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্যেও রেখে দেওয়া হতে পারে।

অভ্যন্তরীণ কাঠামো ছাড়াও, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে স্যাটেলাইট চিত্রতে দুটি নতুন জেটিও দেখা যায়। এই জেটিগুলি দ্বীপে বিদ্যমান জেটির তুলনায় অনেক দীর্ঘ এবং সরাসরি গভীর জলে গিয়ে মিশেছে। বলা বাহুল্য ভারতের এই চুপিসারে শক্তিবৃদ্ধি চীন-পাকিস্তানের মাথা ব্যাথার কারণ হবে। একই সঙ্গে ভারতের সামুদ্রিক শক্তিও বহুগুণে বাড়াবে এই মিলিটারি বেস।