গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের ভূমিঅধিকার সুনিশ্চিত করতে মোদীর ‘স্বামিত্ব’ প্রকল্প

0
444

বঙ্গদেশ ডেস্ক:-গত রবিবার অর্থাৎ ১১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ‘স্বামিত্ব’ প্রকল্পের আওতায় নথিগুলির সরকারীভাবে বিতরণ শুরু করেছিলেন। স্বামিত্ব, যা বাঙ্গালায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘নিজস্ব মালিকানা’, দূর দূরান্তের প্রান্তিক, গ্রামীণ ভূ-মালিকদের কাছে সম্পত্তি কার্ডের বিতরণ শুরু করেন। আগামী দিনে তিনি এই কাজে আরো জোর দেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বা পিএমও শুক্রবারের এই উদ্বোধনটিকে “গ্রামীণ ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাবার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ” হিসাবে বর্ণনা করেছে, লাইভমিন্ট তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে।

“এই প্রথমবারের জন্যে লক্ষ লক্ষ গ্রামীণ সম্পত্তির মালিকদের উপকারের জন্য প্রযুক্তির আধুনিকতম পদ্ধতির সাথে জুড়ে একটি পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে যা সাধারণ প্রান্তিক মানুষের উন্নতি করবে”, পিএমও বক্তব্য রেখেছে। এই স্কিমটি ২০২৪ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে কার্যকর করা হবে বলে স্বরাজ্য ম্যাগ রিপোর্ট করেছে।

এই প্রকল্পের প্রণয়নে ছয়টি রাজ্য জুড়ে ৭৬৩ টি গ্রামের প্রায় ১৩২,০০০ জমি মালিকরা দেখেছেন – উত্তর প্রদেশের ৩৬৬টি, হরিয়ানা থেকে ২২১টি, মহারাষ্ট্র থেকে ১০০টি, মধ্য প্রদেশের ৪৪টি, উত্তরাখণ্ডের ৫০টি এবং কর্ণাটকের দু’জন তাদের সম্পত্তির শিরোনামের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন।

এই ছয়টি রাজ্য ইতিমধ্যেই ভারতের সমীক্ষা দপ্তরের সাথে (Survey of India) একটি সমঝোতা স্বাক্ষর করেছে। এই গ্রামীণ সম্পত্তিগুলির ড্রোন দ্বারা জরিপের মাধ্যমে মানচিত্রকরণ করা হবে।

এই প্রকল্পের প্রথম ধাপটি ২০২০-২১ এ বাস্তবায়িত হবে এবং ধীরে ধীরে উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, মধ্য প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, কর্ণাটক এবং পাঞ্জাব ও রাজস্থানের কয়েকটি সীমান্তবর্তী গ্রামকে অন্তর্ভুক্ত করবে।
এই প্রকল্পটি চার বছর ধরে চলবে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে ৬.৬২ লক্ষ গ্রামকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এই প্রকল্পটির গুরুত্ব

বর্তমানে এই প্রকল্পটি প্রায় এক লাখ সম্পত্তি ধারককে তাদের মোবাইল ফোনে প্রেরিত এসএমএস লিঙ্কের মাধ্যমে তাদের সম্পত্তির কার্ডগুলি ডাউনলোড করতে সাহায্য। তারপরে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার কর্তৃক সম্পত্তি কার্ডের বিতরণ শুরু হবে।

এই সম্পত্তি কার্ডগুলি গ্রামবাসীদের নিজেদের সম্পত্তিকে অর্থ্যায়ন করার বা আর্থিক এসেট হিসেবে ব্যবহারের সুবিধা দেবে। এর মাধ্যমে তারা ঋণ নিতে সক্ষম হবে, ফলে জমি-সম্পদের লিক্যুইডিটি বাড়বে।

গ্রামীণ সম্পত্তির মালিকদের আরও আর্থিক শক্তি দেওয়ার পাশাপাশি, এই প্রকল্পটি দীর্ঘস্থায়ী সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্তেও সহযোগী হবে। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামীণ সম্পত্তির মালিকদের জমি অধিগ্রহণের যথাযথ ডকুমেন্টেশন নেই।

জরিপের সার্ভে ও রেকর্ড বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে রাজস্ব বিভাগ এবং অন্যান্য সহযোগী বিভাগের কর্মকর্তারা প্রস্তুত করবেন ও মালিকানার প্রশ্নে এটি বিশেষভাবে সহায়ক হবে। কর্মকর্তারা বিরোধ নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থাও করবেন।

প্রশাসনিকভাবে এই প্রকল্পটি উন্নততর গ্রাম পঞ্চায়েত ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় Gram Panchayat Development Plans (GPDPs) তৈরি করতে সাহায্য করবে। এপ্রিলে, স্বমীতভা প্রকল্প চালু করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি ইউনিফাইড ই-গ্রামস্বরাজ পোর্টাল এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও চালু করেছিলেন যা এই জিপিডিপিগুলি প্রস্তুত ও কার্যকর করতে সহায়তা করে।

এই প্রকল্পটি সুনিয়োজিত একটি পরিকল্পনার মাধ্যমে তৈরি যা রাজস্ব আদায়, ভূ-সম্পদের লিক্যুইডিটি বৃদ্ধু, সহজ ঋণ গ্রহণ এবং গ্রামীণ অঞ্চলে সম্পত্তি অধিকারের বিষয়ে স্পষ্টতারক্ষা করবে।