মাতৃভাষা দিবসে ভাষাবীর রাজেশ-তাপসের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে

0
405

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ২০ সেপ্টেম্বর দিনটিকে হুতাত্মা রাজেশ এবং তাপসের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ মাতৃ ভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় আজ ভাষা দিবস পালন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর উত্তর দিনাজপুর জেলার দাঁড়িভিট হাইস্কুলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে উর্দু শিক্ষক নিয়োগ করা নিয়ে ছাত্র বিক্ষোভ হয়। কারণ, ছাত্রদের অন্য বিষয়ের শিক্ষকের প্রচণ্ড দরকার ছিল।দীর্ঘদিন ধরে বাংলা-সহ তিনটি বিষয়ের শিক্ষক ছিল না এই স্কুলে। সেই শিক্ষক নিয়োগের দাবি তুলেছিল ছাত্র এবং অভিভাবকেরা।

কিন্তু সেই সব বিষয়ের শিক্ষকের বদলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে উর্দুর শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। যেখানে সেই স্কুলের মাত্র একজন ছাত্রীর ঐচ্ছিক বিষয় ছিল উর্দু। আর সেই ছাত্র বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। গুলি চালায় পুলিশ।

পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ এবং তাপসের। এমনকী, তাঁদের বাড়ির লোক অভিযোগ করে ,তাঁরা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁদের বাধা দেয় নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ।

দুই যুবকের মৃত্যুকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে যায় এলাকা। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। এখনও রাজেশ এবং তাপসের দেহ পোড়াননি গ্রামবাসীরা। মাটির নিচে কবর দিয়ে রাখা হয়েছে তাঁদের দেহ। কারণ, পরবর্তীতে যদি তদন্তের জন্য পুনরায় দরকার হয়। এই মৃত্যুকে ঘিরে গর্জে উঠেছিল সারা বাংলা। সকলেই ধিক্কার জানিয়েছিল রাজ্য সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনকে। আর তারপর থেকেই ২০ সেপ্টেম্বর দিনটি প্রত্যেক বছর রাজেশ এবং তাপসের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ ভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মোহিত রায় মনে করেন , “দাড়িভিটের প্রতিবাদ জন্ম দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব ভাষা আন্দোলন। দাড়িভিট আমাদের সুযোগ দিয়েছে বাঙ্গলা ভাষা ও বাঙ্গালীর নতুন পরিচয়কে সবার সামনে তুলে ধরতে। বাঙ্গলাভাষী হলেই সে বাঙ্গালী হয় না, তাঁকে পাঁচ হাজার বছরের ভারতীয় সংস্কৃতির উত্তরাধিকার স্বীকার করতে হয়। দাড়িভিটের ঘটনা থেকে শুরু হতে পারে রাজ্য জুড়ে মাদ্রাসা বন্ধের আন্দোলন, মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষা বন্ধের আন্দোলন। ২০শে সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ মাতৃভাষা দিবস।“