রাজ্যে বিজেপির উত্থানের নেপথ্যে মূল কারণগুলো একনজরে

0
546

বঙ্গদেশ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বাম শাসনের প্রভাব ছিল দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর। বামেদের পর গত দশ বছর ধরে চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাব। এরই মধ্যে বামদেরকে হটিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে ধীরে ধীরে নিজেদের অস্তিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বিজেপি। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপুল সংখ্যক সিট প্রাপ্তি তা স্পষ্ট করে দিয়েছে৷ বঙ্গ রাজনীতিতে দীর্ঘকাল কোন অস্তিত্ব না থাকার পরেও বিজেপির এই উত্থান বিস্ময়কর মনে হলেও নানাবিধ কারণ রয়েছে এর পিছনে।

একসময় বঙ্গ ছিল শিল্পের প্রাণকেন্দ্র। গঙ্গার তীর ধরে গড়ে উঠেছিল শিল্পাঞ্চল। সেই সময়ে বঙ্গের বুকে ভীন রাজ্যের মানুষজন কর্মসূত্রে পাড়ি জমাতো। অর্থনীতির ভীত ছিল মজবুত। কিন্তু বাধ সাথে বাম আমলের কালো থাবা! বামেদের সিন্ডিকেট রাজ, তোলাবাজি, তোলাবাজি আদায় না হলে শ্রমিকদেরকে উস্কে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সংস্কৃতির বঙ্গের শিল্প ও অর্থনীতি প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। এরপর ক্ষমতার পালাবদল ঘটে তৃণমূল ক্ষমতায় আসলেও বদল হয়নি অর্থনীতির চাকায়৷ রাজ্যের বেকারত্বের হার জাতীয় গড়ের চেয়েও বেশি! অন্যদিকে বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্প। অর্থনৈতিক সাফল্য যথেষ্ট ঈর্ষনীয়।

একসময়ে বঙ্গের বুকে মানুষ কাজের সূত্রে স্থানান্তরিত হলেও বর্তামানে পরিস্থিতি উল্টো। রাজ্য থেকে কর্মের খোঁজে ভীনরাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছে মানুষ। এই অবস্থা থেকে যে রাজ্যবাসী পরিত্রাণ চাইছে বর্তমানে রাজ্যে বিজেপির রাজনৈতিক উত্থানই তার প্রমাণ। বাম আমলের শ্রমিক আন্দোলনের ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বহু শ্রমিক। তাঁরা এখন আস্থা রাখছে বিজেপিতে। এই বিষয়গুলো বিজেপির রাজনৈতিক উত্থানের পিছনে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

রাজ্যের হিন্দিভাষী ভোটারদের বড় অংশ একসময়ে বামেতে আস্থা রাখলেও এখন বিজেপিতে আস্থা রাখছে। এছাড়াও সিএএ আনার পর রাজ্যের উদ্বাস্তু বাঙ্গালীদের সমর্থন পেয়ে যায় বিজেপি। অন্যদিকে রাজ্যের বাঙ্গালী-অবাঙ্গালী বিদ্বেষের বিপরীতে বিজেপির একতার বার্তা কার্যতই তাদেরকে সামনের সারিতে নিয়ে এসেছে। এছাড়াও তৃণমূল সরকারের বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি তোষণ নীতি রাজ্যের হিন্দু ভোটকে বিজেপির দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করেছে। এই বিবিধ কারণগুলোর প্রভাবে ধীরে ধীরে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে মত বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের৷ একুশের নির্বাচনে রাজ্যে পালাবদল হবে কি-না তা সময়ই বলে দেবে।