হিংসার প্ররোচনা দেয় বলে কোরানের ২৬টি আয়াত “মুছে ফেলার” দাবি জানালেন শিয়া নেতা

0
1463

বঙ্গদেশ ডেস্ক – শিয়া, সুন্নি, আহমদীয়া ইত্যাদি একাধিক অভ্যন্তরীণ বিভাজন আছে ইসলাম ধর্মের। তারা আবার বহুধাবিভক্ত হানাফি, ফরাজি, মহম্মদি, কাইফি প্রভৃতি শাখায়। ভারত মূলত সুন্নি-প্রধান দেশ হলেও এখানে শিয়াদের স্থান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরপ্রদেশের শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন সৈয়দ ওয়াসিম রিজভী সম্প্রতি আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেছেন “কোরানের ২৬ টি আয়াত সরিয়ে ফেলতে” চেয়ে। ওপ ইণ্ডিয়া তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করে যে সৈয়দ রিজভী তার পিটিশনে জানিয়েছেন, মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানে “এমন কিছু আয়াত আছে যেগুলি সন্ত্রাসবাদ, হিংসা এবং জেহাদ করতে প্ররোচনা দেয়।”

রিজভীর দাখিল করা পিআইএলে দাবি করা হয়েছে, ইসলামের পবিত্র বইটিতে পরবর্তী সময়ে এই লেখাগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। হয়তো বা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যেই এই কাজ করা হয়েছে। “যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে ইসলামকে ছড়াতে প্রথম তিন খালিফার দ্বারা পরবর্তী সময়ে পবিত্র কোরানে এই আয়াতগুলি যোগ করা হয়” বলেও তিনি দাবি করেছেন এই পিটিশনে।

শ্রী রিজভী তাঁর পিটিশানে আরও বলেছেন, এই ২৬ টি আয়াত যেগুলি খালিফাদের দ্বারা লিখিত হয়েছিল, সেগুলি হিংসায় প্ররোচনা দেয়। রিজভীর মতে জেহাদিরা নিজেদের হিংসার স্বপক্ষে যুক্তি দিতে এই আয়াতগুলিকে ব্যবহার করে। তাঁর মতে এই লেখাগুলি তরুণ মুসলিম প্রজন্মকে উস্কানি দেয় মৌলবাদে এবং তাদের জঙ্গী বানায়, যাদের আক্রমণে লক্ষাধিক সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান।

তবে বলা বাহুল্য, তাঁর যাত্রার পথটি সোজা নয়। সৈয়দ রিজভী অন্যান্য মুসলিমদের আক্রমণের নিশানায় এসেছেন। রিজভীর এই ধর্মবিরোধী কাজের জন্য ‘জম্মু কাশ্মীর সিভিল স্যোসাইটি ফোরাম’ -এর চেয়ারম্যান কাইয়ুম ওয়ানি বলেছেন, “কোরান বিরোধী যে কোনো কথাই মানবতা বিরোধী এবং মুসলিমদের জন্য আরও বেশি, ইতিহাস সাক্ষী যারাই এইধরনের ‘ব্ল্যাশফেমি’ করেছে তারা ভয়ানক সাজা পেয়েছে”। এর সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, “JKCSF ইতিমধ্যেই ভারতের সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন রেখেছে, যাতে তাঁরা কোরানে যেকোনো পরিবর্তনের দাবিকে সঙ্গে সঙ্গেই খারিজ করে। আল্লাহর পবিত্র বইয়ে বিশ্বাসী মুসলিমদের বিশ্বাসকে সম্মান জানিয়ে আদালতের এটি খারিজ করা উচিত।”

এই সঙ্গে ওয়ানি, রিজভীর মতো লোকেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আবেদন করেছেন যাতে “ভবিষ্যতে আর কেউ কোরান বা নবী মহম্মদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার সাহস পাবে না” বলে তিনি মনে করেন। তবে এইভাবে কারুর বাক স্বাধীনতা খর্ব করা যায় কি না, সেই বিষয়টিও বিবেচ্য।