আম্বেদকরের এমন বিশেষ দশটি উদ্ধৃতি যা সেকুলারদের কাছে শ্রুতিমধুর নয়

0
3228

অভিষেক ব্যানার্জী

 

এক সেকুলার একটি প্রতিবেদন লিখেছেন যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “আম্বেদকর তাঁর জীবদ্দশায় এমন ১০টি ফ্যাক্ট বলেছিলেন যা বিজেপি সহ্য করতে পারবে না।”

আমার বিনীত আবেদন হ’ল মাত্র ১০টি উদ্ধৃতি তালিকাভুক্ত করে ডঃ আম্বেদকারের বুদ্ধিমত্তার প্রশস্ততার পক্ষে ন্যায়বিচার করা হয় না। সিনিয়র সাংবাদিক অশোক উপাধ্যায়ের মতোই মহৎ লক্ষ্য নিয়ে, আমি ভেবেছিলাম তাঁর লিখিত আরও দশটি উদ্ধৃতি তুলে ধরবো।

এই উক্তিগুলির বেশিরভাগই ডঃ আম্বেদকরের লিখিত বই “পাকিস্তান অর পার্টিশন অফ ইন্ডিয়া” থেকে গৃহীত।  আশা করি সেকুলাররা এই ব্যাখ্যামূলক আলোচনাটি খুব ভালোভাবে গ্রহণ করবে।

 

(১) কোন সমাজে বেশি সামাজিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে? হিন্দু না মুসলিম?

ডঃ আম্বেদকর বলেছেন:

“সন্দেহের অবকাশ নেই যে হিন্দু সমাজ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে একইভাবে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা দ্বারা ভারতের মুসলিম সমাজও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, মুসলিম সমাজে হিন্দু অপেক্ষা আরও কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেই আরও কিছুর মধ্যে মুসলিম নারীদের জন্য পর্দা প্রথার বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা সহ বেশ কিছু নিয়ম রীতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

“There can thus be no manner of doubt that the Muslim Society in India is afflicted by the same social evils as afflict the Hindu Society. Indeed, the Muslims have all the social evils of the Hindus and something more. That something more is the compulsory system of purdah for Muslim women.”

আপনি উপরোক্ত বক্তব্য থেকে কী বুঝলেন? হিন্দু সমাজ সম্পর্কে ডঃ আম্বেদকরের মূল বক্তব্যকে বিকৃত করে বামপন্থা মতানুযায়ী প্রচার লক্ষ্যণীয়। কারণ এখানে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে আম্বেদকর বলেছেন যে মুসলিম সমাজ বস্তুনিষ্ঠভাবে হিন্দু অপেক্ষা আরও খারাপ। অথচ বামপন্থীরা কেবল হিন্দু সমাজ নিয়েই আম্বেদকরের সমালোচনার কথা বলে।

 

(২) হিন্দুদের “স্বস্তিদায়ক বৈশিষ্ট্য” এবং মুসলমানদের “দুর্দশাক্লিষ্ট” বৈশিষ্ট্য কী?

ডঃ আম্বেদকর এ সম্পর্কে বলেছেন:

“মুসলিম সমাজের মধ্যে বিদ্যমান মান্ধাতা আমলের নিয়মরীতিগুলোর অস্তিত্ব যথেষ্ট সংকটজনক। তবে এর চেয়েও দুঃখজনক বিষয় হ’ল ভারতের মুসলমানদের মধ্যে সেসব নিয়ম নির্মূল করার মতো পর্যাপ্ত পর্যায়ে সামাজিক সংস্কারের জন্য কোনও সংগঠিত আন্দোলন নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেও সামাজিক রীতিনীতি জনিত অনেক প্রতিবন্ধতা বা বলা ভালো প্রাগৈতিহাসিক চিন্তা ভাবনা রয়েছে। তবে এগুলি সম্পর্কে স্বস্তিকর কিছু ব্যাপার রয়েছে, যেমন: হিন্দুদের মধ্যে এই নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বা অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এবং সেগুলো পরিবর্তনের জন্য সক্রিয়ভাবে আন্দোলন চলছে এবং চলবে। অন্যদিকে, মুসলমানরা তাদের গোঁড়া মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না এবং ফলস্বরূপ সেগুলো অপসারণের জন্য আন্দোলন করে না। প্রকৃতপক্ষে, তারা তাদের বিদ্যমান রীতিনীতি অনুশীলনের পরিবর্তনের জন্য কোনোরূপ বিরোধিতার প্রয়োজন বোধ করে না।

“The existence of these evils among the Muslims is distressing enough. But far more distressing is the fact that there is no organized movement of social reform among the Musalmans of India on a scale sufficient to bring about their eradication. The Hindus have their social evils. But there is this relieving feature about them—namely, that some of them are conscious of their existence and a few of them are actively agitating for their removal. The Muslims, on the other hand, do not realize that they are evils and consequently do not agitate for their removal. Indeed, they oppose any change in their existing practices.”

আহ! ভাবনার কী আশ্চর্য স্বচ্ছতা! মুসলিমদের মধ্যে হিন্দুদের চেয়ে সামাজিক কুফলের মাত্রা বেশি। হিন্দুরা নিজেদের সংস্কার এবং কুফলগুলি নির্মূল করার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মুসলমানরা সেসবের ধারধারেন না এবং কোনও ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বিরোধিতাও করেন না।

(৩) কোন ধর্মীয় সম্প্রদায় রাজনীতিতে “গুন্ডা পদ্ধতি” অবলম্বন করে?

এই সম্পর্কে ডঃ আম্বেদকর বলেছেন;

“তৃতীয়ত যে বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় তা হ’ল মুসলিমরা রাজনীতিতে গুন্ডা পদ্ধতি অনুকরণ করে। বিভিন্ন দাঙ্গাগুলি একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে গুন্ডামিবাদ তাদের রাজনৈতিক কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে …। মুসলমানরা যতটা আগ্রাসী হিন্দুরা ততটাই নমনীয়,এর ফলে প্রতিটি সংঘর্ষে হিন্দুরা মুসলমানদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি এখন অনেক বদলেছে। হিন্দুরা পাল্টা দিতে শিখেছে এবং মুসালমানকে ছুরি মারার ক্ষেত্রে আর কোনও সহানুভূতির প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না। প্রতিশোধস্পৃহার এই চেতনা গুন্ডাদের বিরুদ্ধে গুন্ডামি প্রদর্শনে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা বোধ তৈরি করে না। ”

“The third thing that is noticeable is the adoption by the Muslims of the gangster’s method in politics. The riots are a sufficient indication that gangsterism has become a settled part of their strategy in politics. …. So long as the Muslims were the aggressors, the Hindus were passive, and in the conflict, they suffered more than the Muslims did. But this is no longer true. The Hindus have learned to retaliate and no longer feel any compunction in knifing a Musalman. This spirit of retaliation bids fair to produce the ugly spectacle of gangsterism against gangsterism.”

দেখুন কি দুর্দান্ত। প্রিয়, নিরপেক্ষ বন্ধুদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ যদি আমার ভুল হয় তবে আমাকে সংশোধন করে দেবেন, তবে আমার মনে হয় যে, ডঃ আম্বেদকর “ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া তত্ত্ব” ব্যাখ্যা করছেন। এবং তিনি এক এক করে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে সাধারণত সহিংসতা কোন পক্ষ থেকে শুরু হয়।

প্রিয় ধর্মনিরপেক্ষ বন্ধুরা এখন‌ই খেলা ছেড়ে যাবেন না। মজা তো সবেমাত্র শুরু হয়েছে। আসুন দেখা যাক আপনি কতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে শুনতে পারেন।

(৪) ভারতে মুসলমানরা কেন গরু জবাই করে? এটা কি শুধু হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য করা হয়!?

ঠিক আছে, উত্তর খুঁজে বের করা যাক। ডঃ আম্বেদকর বলেছেন:

“মুসলমানদের মধ্যে দ্বিতীয়ত যে বিষয়টি লক্ষ্যণীয় তা হ’ল হিন্দুদের দুর্বলতাকে কাজে লাগানোর সূক্ষ্ম ও চতুর প্রচেষ্টা। হিন্দুরা যদি কোনও বিষয় নিয়ে আপত্তিপ্রবণ হয়, তবে মুসলিম নীতিতে বলে এটির ওপর আর‌ও জোর দাও এবং সেটা তখনই ত্যাগ করা হবে যখন হিন্দুরা মুসলমানদের অতিরিক্ত কিছু ছাড় দিয়ে শুধুমাত্র একটি বিষয়ে যে কোনও চরম মূল্য দিতে‌ও প্রস্তুত থাকবে। মুসলমানদের জোরজবরদস্তি কাজকর্মের এবং শোষণের আরেকটি বাস্তবচিত্র তুলে ধরা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে মসজিদে গরু-জবাই এবং সংগীত নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে। কারণ কুরবানীর উদ্দেশ্যে গরু জবাই করার বিষয়ে ইসলামিক আইন জোর দেয় না এবং হজ করতে গিয়ে কোন মুসালমান মক্কা বা মদিনায় গরু কোরবানি দিতেও পারে আবার নাও পারে, এক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ভারতে তারা গরু ব্যতীত অন্য কোনও প্রাণীর বলি দিয়ে সন্তুষ্ট হবে না। ”

“The second thing that is noticeable among the Muslims is the spirit of exploiting the weaknesses of the Hindus. If the Hindus object to anything, the Muslim policy seems to be to insist upon it and give it up only when the Hindus show themselves ready to offer a price for it by giving the Muslims some other concessions. Another illustration of this spirit of exploitation is furnished by the Muslim insistence upon cow-slaughter and the stoppage of music before mosques. Islamic law does not insist upon the slaughter of the cow for sacrificial purposes and no Musalman, when he goes to Haj, sacrifices the cow in Mecca or Medina. But in India, they will not be content with the sacrifice of any other animal.”

সুতরাং সহজেই বোধগম্য, এই কারণেই ভারতে মুসলমানরা গরু-জবাই করার বিষয়ে জোর দিয়ে থাকে। যাতে এর দ্বারা হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করা যায়। কেবল পুনরাবৃত্তি করার জন্য আবার উল্লেখ করছি, বাবা সাহেব বলছেন যে ভারতে মুসলমানদের গরু-জবাইয়ের উদ্দেশ্য টুন্ডে কাবাব উপভোগ করার জন্য নয়, আসল উদ্দেশ্য হ’ল হিন্দুদের ভয় দেখানো এবং তাদের শোষণ করা … দুঃখিত, শুধুমাত্র শোষণ নয় ” অতিরিক্ত শোষণ” যাতে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নেওয়া যায়।

(৫) তবে বলা যেতে পারে, নিদেনপক্ষে ইসলাম সর্বজনীন সৌভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়, তাই না?

ভুল।  ডঃ আম্বেদকারের এই উত্তরে বলেছেন:

“ইসলামের ভ্রাতৃত্ববোধ মানুষের সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব নয়। এটি শুধুমাত্র একজন মুসলমানের জন্য অপর এক মুসলমানের ভ্রাতৃত্ব। সেখানে একটিই ভ্রাতৃত্ব রয়েছে, যার সুবিধা সেই গোষ্ঠীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ”

“The brotherhood of Islam is not the universal brotherhood of man. It is brotherhood of Muslims for Muslims only. There is a fraternity, but its benefit is confined to those within that corporation.”

এই ভ্রাতৃত্ববোধ অবশ্যই স্বল্পস্থায়ী ও অম্লমধুর এবং পাশাপাশি অবশ্যই কাটাকাটি খুনখারাবি সম্পর্কিত।

(৬) তাহলে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে মুসলমানদের মনে “ভারত সম্পর্কে ধারণা” কী? ভারতীয় মুসলমানদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন করা কি ঠিক?

আসুন জেনে নেওয়া যাক, বাবা সাহেব কী বলছেন:

“ইসলামের দ্বিতীয় ত্রুটি হ’ল এটি সামাজিক স্বায়ত্বশাসিত সরকার ব্যবস্থা এবং স্থানীয় স্বায়িত্বশাসিত সরকারের সাথে তুলনীয়, কারণ একজন মুসলমানের আনুগত্য তার দেশের প্রতি থাকে না অর্থাৎ কিনা যেখানে সে বসবাস করছে সেই জায়গার প্রতি তার আনুগত্য নেই। কিন্তু তার আনুগত্য থাকে সেই বিশ্বাসের উপর যার ওপর তিনি নির্ভরশীল বা যে মতাদর্শে বিশ্বাসী …। যেখানেই ইসলামের শাসন কায়েম সেটিই তার নিজের দেশ হিসেবে গণ্য হয়। অন্য কথায় বলতে গেলে, ইসলাম কখনই প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় মুসলমানদের ভারতবর্ষকে তার মাতৃভূমি হিসাবে গ্রহণ করতে এবং কোনও হিন্দুকে তার আত্মীয়-স্বজন হিসাবে গণ্য করতে দেয় না।

“The second defect of Islam is that it is a system of social self-government and is incompatible with local self-government, because the allegiance of a Muslim does not rest on his domicile in the country which is his but on the faith to which he belongs. …. Wherever there is the rule of Islam, there is his own country. In other words, Islam can never allow a true Muslim to adopt India as his motherland and regard a Hindu as his kith and kin.”

ব্যাপারটি হাস্যকর তাই না! যদি ডাঃ আম্বেদকর আজ বেঁচে থাকতেন তবে ‘ওয়্যার’ এবং ‘স্ক্রোল’-র মতো নিউজ পোর্টাল সম্ভবত তাঁর লেখা প্রকাশ করতে অস্বীকার করতো।

(৭) ভারতের মুসলমানরা হিন্দুদের কোন চোখে দেখে? তারা কি হিন্দুদের নিজেদের সমতুল্য দেখে এবং গঙ্গা-যমুনা-তেহজিব অনুযায়ী শ্রদ্ধার সঙ্গে তাদের সঙ্গে আচার আচরণ করে?

ডঃ আম্বেদকর বলেছেন:

“বাস্তববাদীরা অবশ্যই একবাক্যে স্বীকার করবে যে, মুসলমানরা হিন্দুদের কাফের হিসাবে দেখে, শুধু তাই-ই নয় মনে করা হয় হিন্দুরা সুরক্ষার চেয়ে নির্মূল হওয়ার বেশি যোগ্য। বাস্তববাদীদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, মুসালমানরা যে ধারণা থেকে ইউরোপীয়দের শ্রেষ্ঠ হিসাবে গণ্য করেন সেই ধারণা থেকে হিন্দুকে নিকৃষ্ট বলে মনে করেন। “

“The realist must take note of the fact that the Musalmans look upon the Hindus as Kaffirs, who deserves more to be exterminated than protected. The realist must take note of the fact that while the Musalman accepts the European as his superior, he looks upon the Hindu as his inferior.”

হায় ভগবান! ডঃ আম্বেদকরের মতামত প্রমাণ করে যে সেকুলারবাদীরা “বাস্তববাদী” নন! কতটা নিষ্ঠুর তিনি!

(৮)কখন‌ও কি আশ্চর্য বোধ হয়েছে, যেখানে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ যখন কারোর অতিরিক্ত আদায় অধিকার নিয়ে অতটা ভাবিত নয়,তখন ভারতবর্ষের মুসলমানরা (এবং পশ্চিমা দেশগুলিতে যেখানে তারা সংখ্যালঘু) নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে এত চিন্তিত?

ঠিক আছে, ডঃ আম্বেদকের নিজেই উত্তর দিয়েছেন:

“প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার যদি মুসলমানদের সাহায্য করতে পারে তবে তারা এর দাবিতে শেষ পর্যন্ত লড়বে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যদিও গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্র হিন্দুদের বিরুদ্ধে তাদের উপর কিরকম প্রভাব ফেলবে সেটাই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্যবস্থা তাদের দুর্বল করবে না শক্তিশালী? যদি দুর্বল করে তাহলে তারা গণতন্ত্র মেনে নেবে না।

“If the representative government can help the Muslims, they will demand it, and fight for it. … The dominating consideration with the Muslims is not democracy. The dominating consideration is how democracy with majority rule will affect the Muslims in their struggle against the Hindus. Will it strengthen them or will it weaken them? If democracy weakens them, they will not have democracy.”

(৯) তবে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা কি হিংসার নিন্দা করে না? ইসলাম কি তবে শান্তির ধর্ম নয়?

আপনি এনডিটিভি শুনতে পারেন। অথবা আপনি ডঃ আম্বেদকরের কথা শুনতে পারেন:

“ধর্মান্ধ মুসলমানদের দ্বারা নিহত হিন্দুদের সংখ্যা বেশি বা কম বিষয়গুলি সেভাবে বিবেচ্য নয়। যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হল এই খুনীদের সংখ্যা অর্থাৎ যারা খুন করছে এবং দু-একটি ক্ষেত্রে খুন করতে গিয়ে মারা গিয়েছে, তাদের সংখ্যা যারা গণনা করে তাদের মনোভাব। খুনিদের ওপর আইন প্রয়োগ করে কী শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে সেটাই মূল আলোচ্য বিষয়। নেতৃস্থানীয় মুসলমানেরা অবশ্য কখনও এই অপরাধীদের নিন্দা করেনা। উল্টে, তারা ধর্মীয় শহীদ হিসাবে তাদের প্রশংসা করে এবং তাদের সৎ, ধার্মিক ও পবিত্র দেখানোর জন্য আন্দোলন করে।

“whether the number of prominent Hindus killed by fanatic Muslims is large or small matters little. What matters is the attitude of those who count, towards these murderers. The murderers paid the penalty of law where the law is enforced. The leading Moslems, however, never condemned these criminals. On the contrary, they were hailed as religious martyrs and agitation was carried on for clemency being shown to them. ”

ইয়াকুব মেমনের কথা মাথায় আসছে। আর বাটলা হাউস এনকাউন্টারে নিহত সন্ত্রাসবাদীদের কথা। যাই হোক…।

(১০) আপনার কি কখনও মনে হয়েছে যে, ভারতের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে মুসলমানরা যে অত্যাচার চালিয়েছে সে বিষয়ে অন্ধ?

ডঃ আম্বেদকরকেও একইরকম ভাবনা চিন্তা করেছিলেন:

“তবে মিঃ গান্ধী এ জাতীয় হত্যার বিরুদ্ধে কখনও প্রতিবাদ করেননি। মুসালমানরা কেবল এই ক্ষোভের নিন্দা করেনি সেটাই নয়, এমনকি মিঃ গান্ধীও নেতৃস্থানীয় মুসলমানদের নিন্দা করার আহ্বান জানাননি। তিনি তাদের বিষয়ে চুপ করে ছিলেন। এই ধরনের মনোভাব কেবলমাত্র একটি কারণেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে যে মিঃ গান্ধী হিন্দু-মুসলমান ঐক্য রক্ষার জন্য উদগ্রীব ছিলেন এবং কিছু হিন্দু প্রাণের বিনিময়ে বা বলা ভালো তাদের আত্মত্যাগের দ্বারা যদি এই ঐক্য অর্জন করা যায় তবে তিনি কিছু মনে করবেন না। মুসলমানদের যে কোনও ধরনের ভুলকে ক্ষমা করার জন্য ঐক্যের ধারণার এই মনোভাবটি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে দিকে তিনি সজাগ ছিলেন, মোপলা দাঙ্গার ক্ষেত্রে মিঃ গান্ধী যে বক্তব্য রেখেছিল তা থেকেই এই ধারণা স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল। ”

“But Mr Gandhi has never protested against such murders. Not only have the Musalmans not condemned these outrages but even Mr Gandhi has never called upon the leading Muslims to condemn them. He has kept silent over them. Such an attitude can be explained only on the ground that Mr Gandhi was anxious to preserve Hindu-Moslem unity and did not mind the murders of a few Hindus if it could be achieved by sacrificing their lives. This attitude to excuse the Muslims any wrong, lest it should injure the cause of unity, is well illustrated by what Mr Gandhi had to say in the matter of the Mopla riots.”

এটি টুইটারে রাহুল গান্ধীকে নিয়ে লিখিত দক্ষিণপন্থী কিছু ট্রল নয়। স্বয়ং আম্বেদকর মহাত্মা গান্ধীর সম্পর্কে এই কথা বলছেন।

পুনর্মূল্যায়ন: আম্বেদকর বিশ্বাস করতেন যে হিন্দু সমাজের চেয়ে মুসলিম সমাজ আরও বেশি কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং ক্ষতিকর, মুসলমানরা ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতি ভীষণভাবে গোঁড়া মানসিকতায় বিশ্বাসী, মুসলমানরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, হিন্দুদের তারা সুনজরে দেখে না, বা মুসলমানরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের নিন্দা করে না। মুসলমানরা কখনই ভারতের অনুগত হতে পারে না।

বলার অপেক্ষা রাখে না, বাবা সাহেব অবশ্যই জেএনএসইউ সভাপতি পদ নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন!

অপইণ্ডিয়ায় প্রকাশিত মূল লেখাটি থেকে অনুবাদ করেছেন প্রজ্ঞা পারমিতা।