বাঙ্গালী ছদ্মবেশে কলকাতার আবাসনে লিভ ইন, গ্রেফতার বাংলাদেশী সন্ত্রাসবাদী

0
633

বঙ্গদেশ ডেস্ক:এ রাজ্যে বহু বাংলাদেশী আত্মগোপন করে রয়েছে এমন অভিযোগ অনেকবার উঠেছে। এমনকি খোদ কলকাতার বুক থেকে বহুবার অবৈধ বাংলাদেশী গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার ডানলপ থেকে একজন JMB জঙ্গী গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় চারিদিকে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটেছে।

যদিও, এই প্রথম নয়, যে রাজ্য থেকে বাংলাদেশী জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। এর আগেও বহুবার এমন ঘটনা ঘটেছে। সূত্রের খবর, গত সোমবার ডানলপের নর্দান পার্ক থেকে নূর নবী নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নবী ওই এলাকায় নিজের নাম পাল্টে তমাল চৌধুরী পরিচয় দিয়ে থাকতো। ইন্টারপোল থেকে গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পরপরই ডানলপে অভিযান চালিয়ে নবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।বাংলাদেশের গোয়েন্দা দফতর থেকে ইন্টারপোলে খবর আসে, এই জঙ্গী নূরনবী ডানলপ এলাকায় নর্দান পার্কে একটি আবাসনে রয়েছে। এক মহিলার সঙ্গে লিভ ইনও করত সে।

নবীর গ্রেফতারির খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাবাসীর মধ্যে তুমুল আতঙ্ক ছড়িয়েছে।কলকাতা গোয়েন্দা অফিসার ও বরানগর থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডানলপের এই আবাসনে হানা দেয় মঙ্গলবার। আবাসনের বাসিন্দারা বলেছেন যে, তমাল ওরফে নবী যে একজন কুখ্যাত জঙ্গি, তা তারা টের পায়নি। আবাসনে বেশ মিশুকে বলেই পরিচিত ছিল নবী। সবার সঙ্গে হাসিখুশি ভাবে কথাবার্তা বলে তাদের মন জয় করেছিল সে। পুলিশি অভিযান চালিয়ে নবীর কাছ থেকে ভারতীয় পাসপোর্টও উদ্ধার করা হয়েছে।

ইন্টারপোল সূত্রে খবর, নূর নবীর বিরুদ্ধে বর্তমানে বাংলাদেশে কমপক্ষে ২৪টি মামলা রয়েছে। এমনকি ১ ডজন মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে আদালত। চোরাচালান, খুন, ডাকাতি, অস্ত্রপাচারের মতো কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল সে। আর বাংলাদেশী পুলিশের হাত থেকে আত্মরক্ষা করতেই সে ওমান পালিয়ে যায়।

ওমানে‌ রঙ মিস্ত্রীর কাজ শুরু করে নবী। সেদেশে এক শাগরেদ ধরার পড়তেই কলকাতায় এসে গা ঢাকা দেয় কুখ্যাত এই জঙ্গী। নিউ মার্কেটের কাছে মাছের ব্যবসা করত সে। মধ্যমগ্রামের এক মহিলাকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ডানলপে মাসে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি ঘরও ভাড়া নেয় নবী।

আবাসনের এক মহিলা আবাসিক বলেছেন, আমরা তো বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা কীভাবে সম্ভব ? ওই মেয়েটাকে তো নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিত। নিজেকে তো বাঙালি বলেছিল, কিন্তু ও আদৌও বাঙ্গালী ছিল না। ভাবা যায় এও সম্ভব!

বুধবার ওই আবাসনে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সিআইডির প্রতিনিধিদল ও বরানগর থানার পুলিশ হাজির হয়। নূরনবী ওরফে তমাল চৌধুরীকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দা দফতরের অফিসাররা। নূরনবীর সঙ্গে অন্য কোনও জঙ্গী সংগঠনের যোগাযোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জাল নথি তৈরি করে এই আবাসনে কীভাবে এতদিন সে বসবাস করলো, সে বিষয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।