রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মান নিয়েও মিথ্যাচারের অভিযোগ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে

0
1036

বঙ্গদেশ ডেস্ক: গত ১৯ আগস্ট টুইটারে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে ঘোষণা করা হয় যে, রাষ্ট্রসঙ্ঘের সহযোগী একটি এনজিও ‘UNWPA’ কোভিডের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের লড়াইয়ের প্রশংসা করেছে৷ এই বিষয়ে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে। এই খবর শোনার পরে তৃণমূল সমর্থকরা তো বটেই৷ গোটা রাজ্য তথা দেশবাসী গর্ব অনুভব করেছিলেন।

একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই খবরটি প্রকাশ করেছিল। তবে চিঠিটির বিষয়ে একটু খতিয়ে দেখলে মারাত্মক তথ্য উঠে আসে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠতে শুরু করে৷

ইউনাইটেড নেশন ওয়ার্ল্ড পিস অ্যাসোসিয়েশন যে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে, তাতে অভাবনীয়ভাবে ইংরেজি ব্যকরণের ভুল ধরা পড়ে৷ অপরিণত বাক্যগঠনও চোখ এড়ায়না। তাছাড়া চিঠিতে UN এর পুরো কথা United Nations এর বদলে United Nation-ও লেখা রয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সহযোগী একটি এনজিও খোদ রাষ্ট্রসঙ্ঘের ফুল ফর্ম লিখতেই ভুল করবে! এমনটা মেনে নিতে সমস্যা হয় অনেকেরই। সর্বোপরি এই করোনাযোদ্ধার স্বীকৃতিরুপে চিঠিটি মুখ্যমন্ত্রী কিংবা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে না পাঠিয়ে, দেওয়া হয়েছে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীকে৷ স্বাভাবিকভাবেই খটকা লাগতে শুরু করে সকলের৷

তাছাড়া সহযোগী সংস্থার সত্যতার বিষয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। রাজ্যের শাসকদল রাষ্ট্রসঙ্ঘের সহযোগী সংস্থার যে টুইটার হ্যান্ডলটি ট্যাগ করেছিল, খোদ সেই টুইটার হ্যান্ডলটির ফলোয়ার সংখ্যা মাত্র ১৩ জন। ফেসবুক পেজের লাইকসংখ্যাও ৭০০-র কাছাকাছি। সেটিকে চালানো হচ্ছে ফিলিপিনস থেকে৷ এই খবর সামনে আসার পরে নেটিজেনরা প্রশ্ন করেন, এরকম একটি আআন্তর্জাতিক সংস্থার ফলোয়ার্স সংখ্যা এত কম?

সর্বোপরি, পশ্চিমবঙ্গকে লেখা চিঠিটিতে শেষে উল্লেখ করা রয়েছে ‘Her excellency পিঙ্কি দত্ত’। এই পিঙ্কি দত্ত সম্পর্কে খোঁজ নিলে ফেসবুকে Priya Dutta বলে একটি প্রোফাইলের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রোফাইলে তিনি নিজেকে ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। প্রোফাইল ঘেঁটে কদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অসুস্থতা সহ রামমন্দিরের ভূমিপূজন নিয়ে ব্যঙ্গ, বিরোধিতা সহ একাধিক কেন্দ্র সরকার বিরোধী পোস্ট দেখতে পাওয়া যায়।

এখানেই শেষ নয়, একটি সর্বভারতীয় বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম UNWPA-র সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে এই চিঠির সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে যে এই চিঠিটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। তারও পরে মেইলের মাধ্যমে জানানো হয় যে, এটি জাপান থেকে পাঠানো হয়নি। হতে পারে ভারতে তাদের রাষ্ট্রদূত পিঙ্কি দত্ত এই চিঠিটি নিজে থেকে পাঠিয়েছেন৷

নেটিজেনদের একাংশের এইসব অভিযোগ যদি সত্যি হয় তবে তা হবে রাজ্য সরকারের একটি অন্যতম ষড়যন্ত্র,জালিয়াতি, রাজ্য তথা দেশবাসীকে বোকা বানানোর কদর্য চেষ্টা।