গো হত্যার প্রতিবাদ; নিজ সম্প্রদায়ের হাতে নিহত মুসলিম যুবক

0
856

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- রাক্ষসকুলের প্রহ্লাদকে মনে আছে!? ভগবান বিষ্ণুর দয়ায় প্রহ্লাদ প্রাণে বেঁচেছিলেন। কিন্তু বাস্তবের প্রহ্লাদকে তার‌ই গোষ্ঠীর লোকজনের হাতে বলি হতে হলো। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খন্ডের গারওয়া জেলায়। নিহত যুবকের নাম মহম্মদ আরজু। বয়স ১৮।তার অপরাধ ছিল সে গোমাতার প্রাণ রক্ষা করতে মরিয়া ছিল। আর এই অপরাধেই তাকে নৃশংসভাবে গলার নলি কেটে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের দাবি, মুসলিম যুবক কাফেরদের দেবীর (গোমাতা)প্রাণ বাঁচাতে তৎপর ছিল, ইহা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী। তাই শরীয়ত মেনে তাকে গলা কেটে খুন করা হয়েছে।

অপ‌ইন্ডিয়ার রিপোর্ট থেকে ঘটনাচক্রে দেখা গিয়েছে, যে দুজন তাকে গলা কেটে খুন করেছে বলে অভিযোগ, তারা স্বজাতির। অভিযুক্তদের নাম মুন্নু কুরেশি ও কায়েল কুরেশি। তাদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি আরজুর দেহ পাঠানো হয়েছে পোস্ট মোর্টেমের জন্য। ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ওই গ্রামে গিয়েছিলেন রাজ্যের পানীয় জল সরবরাহমন্ত্রী মিথিলেশ ঠাকুর।

ছেলের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে সুবিচার চেয়ে নিহত আরজুর মা সাংবাদিকদের বলেছেন, আমার ছেলে হিন্দু মুসলিম বিভেদ থেকে শতহস্ত দূরে থাকতো। গো‌হত্যা দেখে তার প্রাণ কেঁদে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত গোহত্যায় বাধা দিতে গিয়েই আমাদের নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্যেই বিরোধিতার কবলে পড়তে হয়েছে ওকে। সোমবার রাতে স্থানীয় কয়েকজন যুবক আক্রোশের বশে তার ওপর চড়াও হয়। তারপর তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়।

মঙ্গলবার সকালে মিথিলেশ ঠাকুর গারওয়ার সাসার হাসপাতালে দেখা করতে গেলে নিহত যুবকের মা আয়েশা খাতুন তাঁকে সবিস্তারে সব ঘটনা জানান। সূত্রের দাবি আয়েশা দেবী কাঁদতে কাঁদতে দোষীদের কঠোর শাস্তি চেয়েছেন।

ইনস্পেক্টর রাজেশ কুমার বলেছেন, নিহতের মায়ের অভিযোগ, তাঁর ছেলে এলাকার পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে বলে নিয়মিত ওদের গোহত্যা ছেড়ে দিতে বলত। তাছাড়া তার ছেলে বারবার বলতো গোমাতা হিন্দুদের দেবী। তাকে হত্যা করা পাপ। পথের কাঁটা উপড়ে ফেলতে সেজন্যই তাকে বলি হতে হলো। এফআইআরে তিনজনের নাম করা হয়েছে কাইল কুরেশি, মুন্নু কুরেশি ও খালিদ কুরেশি

পুলিশ জানিয়েছে, প্রধান অভিযুক্ত কাইল কুরেশি জন্তু-জানোয়ার হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র দিয়ে লোকজনের ওপর হামলা করার জন্য এলাকায় কুখ্যাত। অতীতে সে নিজের পরিবারের লোকজন এবং আশেপাশের লোকজনের ওপরও বহুবার আক্রমণ চালিয়েছে। এই মামলায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার আগে সব দিক বিচার বিবেচনা করে দেখা হবে বলেও জানান রাজেশ কুমার।