রাজর্ষির সিংহনাদ

0
733

শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী

ছিন্ন স্বপ্ন, ছিন্ন স্বাভিমান, ছিন্ন গৌরব অবিরাম
ছিলো হতাশা হৃদয়ে,ছিলো অশ্রু, চাপা ব্যাথা।
শতশতবছরের স্বপ্নাতুর চোখগুলিতে ছিলো
এক দীপ্ত সিংহনাদের প্রতিক্ষা।

হিমালয় থেকে আসবে,
এক আকাঙ্ক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণে
নবীন সন্ন্যাসী আধুনিক বেশে,
বৈরাগ্যের গৈরিক সন্ন্যাসবসন
হবে তাঁর মস্তকের রাজমুকুট।
রাজা হয়েও রাজর্ষি তিনি,
পরিবারে থেকেও মুক্ত
বন্ধনহীন এক সন্ন্যাসী।
ভুবনময় ছড়ানো তাঁর
স্বদেশরূপ সংসার;
তিনি যে আর্ত, নিপীড়িত
লাঞ্ছিত মানুষের হৃদয়সম্রাট।

পুবের বন্ধ দুয়ার খুলে দিয়ে
শঙ্খনাদে বজ্রধ্বনিতে আহ্বান
সিংহশয্যায় ঘুমন্ত হিন্দুজাতিকে:
“এসো মিলি সবে, এক অখণ্ডিত হৃদয়ে।
আছে সূত্র, আছে বিছিন্ন মণিমুক্তা-রত্নরাজি,
সূত্রবদ্ধ করে গেঁথে দিতে হবে বিচ্ছিন্নকে।
সংকীর্ণতা বিদূরিত হয়ে হবে আপনার
জাতি,সংস্কৃতি, ভাষার বন্ধনে আবদ্ধ
সাম্যবাদের ঐক্যবদ্ধ অদ্বিতীয় মালা।
সে ঐক্যের নির্মাল্যই আজ সমর্পিত হবে
বিধাতাপুরুষ আদিনাথকন্ঠে।”

অকারণ বেলা বয়ে গিয়ে
বড় বিলম্ব হয়ে গেছে বন্ধু।
আজ পুবের দুয়ার খোল!
দ্বারে অপেক্ষমান অহনাকাল
আলোর অঞ্জলি হাতে।

আজি ঐক্যের জাতিযজ্ঞে
আমরা সবাই অগ্রনায়ক
সবাই ঋত্বিক, সবাই রাজা।

আঁধারের আঁধার কেটে শুরু হল
হৃদয়ে আলোক যজ্ঞের মহোৎসব।
সে যজ্ঞে নেই উঁচুনিচু, নারীপুরুষ ভেদ
অখণ্ডিত সাম্যমন্ত্রে যেথা সদাই অনুরণন।
শতসহস্র বছরের বন্ধ জানালা
দিকেদিকে খুলে দিয়ে, মুক্ত হৃদয়ে
রাজর্ষি হোতার আহ্বানে সমাগত।
অখণ্ডের যজ্ঞে নেই আপন পর ভেদ,
সাম্যের বৈদিক বারতায় সকলেই অভেদ।