দেশভাগের প্রভাব নিয়ে অনন্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে কলকাতায়

0
443

বঙ্গদেশ ডেস্ক:ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে অত্যাচারিত হয়ে রাতের অন্ধকারে কাঁটাতার পেরিয়ে শত শত হিন্দু পরিবার চলে আসে এই দেশে। উদ্বাস্তু হিন্দুদের মধ্যে একজন শান্তিরঞ্জন গাঙ্গুলী। বরিশালের পৈতৃক ভিটে ছেড়ে বাবা মা ও দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন এপারে।

শান্তি বাবুর নাতনি অর্চি বন্দ্যোপাধ্যায় এক অভিনব চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন ICCR -এর দ্বিতলে, বেঙ্গল মিউজিয়ামে। দুই বাংলার প্রায় একশোজন মৃৎশিল্পী, শঙ্খশিল্পী, বেনারসি ও তাঁত শিল্পী হাজির ছিলেন। তাদের কর্মজীবনে দেশভাগের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রভাব ছিল প্রদর্শনীর থিম।

পূর্ববঙ্গে তাঁদের বাড়ির দুর্গাঠাকুরের প্রতিমা গড়তেন হীরালাল পাল। দেশভাগের পরে বরিশাল থেকে কলকাতায় পটুয়া পরিবারটিও‌ চলে আসে এপারে। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শিল্পী-কারিগরেরা নিজেদের কর্মদক্ষতা আর প্রাণটুকু ছাড়া কিছুই আনতে পারেননি সঙ্গে, এই ভাবনাই ভাবিয়ে তুলেছিল অর্চি বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ফ্যাশন ডিজ়াইনিং-এর ছাত্রী অর্চির লেখাপড়া চেন্নাই ও লন্ডনে, ‘মিড ফেলোশিপ’ পেয়ে তিনি ফিরেছেন শিকড়ে, বাঙ্গলার কারুশিল্প ও শিল্পী-জীবনে খুঁজে চলেছেন দেশভাগের প্রভাব। ফলশ্রুতিতে তাঁরই কিউরেট করা প্রদর্শনী ‘পার্টেড ক্রাফ্টস’, শুরু হয়েছে ২৫ নভেম্বর আইসিসিআর-এর বেঙ্গল গ্যালারিতে। কলকাতা পার্টিশন মিউজিয়ামের সহযোগিতায় অন্য রকম এই প্রদর্শনী চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত, দুপুর ৩টে-রাত ৮টা।

প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে মৃৎশিল্প, সুদৃশ্য শীতলপাটি, মুখোশ,শোলা ও শঙ্খের কাজ, শাঁখ কাটার করাত ইত্যাদি। রবিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘সীমান্তে বাংলার শিল্প’ শীর্ষক আলোচনা সভা। তাতে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা মিউজিয়াম ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি ঋতুপর্ণা রায়, ডিজাইনার ও শিল্প গবেষক অর্চি বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘তাঁতিপাড়ার আখ্যান’- এর‌ লেখক হরিপদ বসাক ও বিশ্বভারতীর রিসার্চ স্কলার তথা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহম্মদ তারিকাত ইসলাম।