বাংলাদেশের বগুড়ায় সরকারি উদ্যোগে মন্দির ভাঙচুর-দখল, ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ

0
1432

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশে এবার সরকারি উদ্যোগে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চলছে। বগুড়া জেলার সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের রজাকপুর গ্রামে প্রশাসনের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এ.সি এর নির্দেশে প্রায় দেড়শো বছরের পুরাতন কালীস্থান, কালীমন্দির, চড়কপুজার স্থান ভাঙচুর করা হয়েছে । গত ১২ ডিসেম্বর তারিখে সকাল ১০ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। প্রশাসন মন্দির কমিটির কাছে কোন লিখিত বা মৌখিক নোটিশ না পাঠিয়ে রীতিমতো হিংস্রতার আশ্রয় নিয়েছে প্রশাসন। এমনকি যেসব স্থানীয় ব্যক্তি এই মন্দিরের জায়গা দখল ও ভাঙচুরের প্রতিবাদ করেছে তাদেরকেও ধারা ৪৪৭, ১৮৬ ও ৪১৭ দণ্ডবিধি অনুযায়ী মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সদর) আজিজুর রহমান, সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমির হামজা এবং নুনগোলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলিম উদ্দিন মন্দিরের অতি প্রাচীণ ৫২ টি বৃহৎ বৃক্ষের কর্তনপূর্বক বিক্রি করে দিয়ে আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুল হক এই মন্দির ভাঙচুর ও দখলের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় ১১ জন মুসলিম এর বিরুদ্ধেও মামলা করেছে। ইউএনও এর নির্দেশে প্রতিবাদকারীদের পরিবারকে প্রচন্ড হয়রানি করছে স্থানীয় পুলিশ। বগুড়া শহর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ এই ঘটনার প্রতিবাদে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করে৷ এই মানবন্ধনে এলাকার প্রায় তিন শতাধিক হিন্দু নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

রজাকপুর কালী মন্দির কমিটির সভাপতি ডাক্তার সুশীল কুমার বলেন, ” প্রায় দেড়শো বছরের পুরাতন এই ৬৪ শতাংশ স্থানে কালী পূজা ও চড়কপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে৷ ওই জায়গাটির সি.এস.এম.আর.আর এ কালীস্থান হিসেবে উল্লেখিতও রয়েছে। পাশের স্থানে প্রচুর সরকারি খাস জমি থাকা সত্ত্বেও আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিলিত হয়ে এই স্থানে আবাসন প্রকল্পের নামে মন্দির ভাঙচুর করে ও গাছ কেটে বিক্রি করে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে৷ একই গ্রামের ৭০ বছর বয়স্ক শ্রী সূর্যকান্ত বলেন, ” আমি দাদুর কাছে শুনেছি এই মন্দিরের স্থানে কালী পূজা ও চড়ক পূজা হয়ে আসছে। গ্রামের ৮০ বছর বয়সী মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ” ছোটবেলা থেকেই এই স্থানে চরকপূজা ও কালীপূজা সহ বিশাল মেলা হতে দেখেছি৷ ” স্থানীয় হিন্দুরা বর্তমানে মামলা-হামলার ভয়ে প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এদিকে সরকারি কোপানলে পড়ায় কোন সাহায্যের প্রত্যাশাও তারা করতে পারছেন না। একাধিক হিন্দু সংগঠন আদালতে বিষয়টি নিয়ে ছুটলেও কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় স্থানীয় হিন্দুরা অজানা আশঙ্কার মাঝে দিনানিপাত করছে।