বাংলাদেশী মধ্যবিত্ত হিন্দুঃ অজ্ঞাতকুলশীল সেবাদাস?

Bipasa Barman, 4, cries as her mother Sanchita Barman looks on in front of their vandalized house after Bangladesh Jamaat-E-Islami activists attacked a Hindu village in Jessore in this picture provided by Prothom Alo January 6, 2014. Bangladesh Jamaat-E-Islami activists vandalized, looted and torched houses of Hindus in Malopara village in Jessore on Sunday evening, according to the police and district commissioner. Local media reported that at least six hundred people were injured in attacks on Hindu villagers because they had casted their votes in the 10th national elections, which was boycotted by opposition parties. Picture taken January 6, 2014. REUTERS/Prothom Alo/Handout via Reuters (BANGLADESH - Tags: ELECTIONS POLITICS) ATTENTION EDITORS - NO SALES. NO ARCHIVES. FOR EDITORIAL USE ONLY. NOT FOR SALE FOR MARKETING OR ADVERTISING CAMPAIGNS. THIS IMAGE HAS BEEN SUPPLIED BY A THIRD PARTY. IT IS DISTRIBUTED, EXACTLY AS RECEIVED BY REUTERS, AS A SERVICE TO CLIENTS. NO COMMERCIAL USE

মধ্যবিত্ত বাংলাদেশী হিন্দু!  এঁরা ভূমিদা সনন, ভূস্বামী ও নন। অস্তিত্ব বা establishment রক্ষার দায় এঁদের নেই। এনারা পড়াশোনা করে বিক্রয়যোগ্য (tradable) কিছু skills অর্জন করেছেন, যা যেখানে সেখানে বেচে এনারা কোনমতে টিকে থাকতে পারেন। বাঙালী মধ্যবিত্ত জীবন, টিকে থেকে বিয়ে করে, ছেলেমেয়েকে বহাল তবিয়তে রেখে নাতি নাতনির মুখ দেখে মরে যাবার জীবন। দলবদ্ধ হয়ে অস্তিত্বরক্ষা করা বা নিজের সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক সংহতি বা ভবিষ্যৎ ভাবনা এনাদের অভিধানে নেই। তাই উঠতি বয়সীদের “সাম্প্রদায়িক স্বার্থরক্ষায় কর্মচাঞ্চল্য” এনাদের যারপরনাই বিরক্তি উৎপাদন করে। সারাজীবন retirement benefits র স্বপ্ন দেখে এসেছেন উনারা, সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে পড়ে থাকলে চলে? তাই উনারা এই দল, ঐ দল, এই committee, ঐ committee তে যেখানেই যুক্ত থাকুন না কেন, ক্ষমতাবানদের ছাপোষা আর দুর্বলের যম হিসেবেই থাকেন। আমারই এক ছোটভাই এর প্রতীকী নাম দিয়েছেন “আওয়ামী হিন্দু”। যারপরনাই যুতসই নাম! বলতেই হবে।

মুক্তিযুদ্ধ, চেতনা, বঙ্গবন্ধু ইত্যাদি এখন বাংলাদেশের পবিত্রতম শব্দ। চাকরী খুঁজছেন? ভাঙ্গাপ্রেমের কবিতা যুদ্ধ করুন। যদিও আমি কবিতা বুঝিনা, কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা দেখে ওগুলোকে স্ট্রাগলই মনে হয়। ফাঁকে ফাঁকে চেতনা, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বর্ণনা। বোঝা যাবে আপনি ছন্নছাড়া জীবন ছেড়ে এখন উঠতি professional।

সরকারী চাকরি খুঁজছেন? বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা, চেতনা দিয়ে search করে আশেপাশে যা পান পড়ে post করে দিন। ভবিষ্যতের promotion ও BCS এর প্রস্তুতির সবচেয়ে নির্ভর যোগ্য investment। সাথে ২ চিমটি রোহিঙ্গা ও এক চিমটি প্যালেস্টাইন রবি ঠাকুরের সাথে গুলিয়ে দিন। একধাক্কায় চেতনা, মানবতা ও সংস্কৃতিমনস্কতা তিনটি gallery ই complete।

Promotion পেয়ে একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন? সরকারি গাড়ী, বাড়ি র সাথে security, বিদেশভ্রমণ, আরও বেশী সুযোগ, promotion র হাতছানি, সাধারণ মানুষকে governmental complexity র জ্ঞান দিয়ে বেড়ানো ইত্যাকার সুবিধাগুলো উপভোগ করতে গেলে নিজ সম্প্রদায়ের কথা ভাবলে চলে না। আপনি চেয়েছিলেন, আপনার যোগ্যতা বলে পেয়েও গেছেন।

কিন্তু মশাই, আপনি নিজেই নিজেকে চেনেন, সবার চেয়ে বেশী, সবচেয়ে ভালভাবে। আপনার কোন সম্প্রদায় নেই, আপনি বিশ্বমানব, আপনার আছে career। অন্যের বিপদে এগিয়ে আসা আপনার কম্ম ও নয়, ধাত ও নয়। পোড়া ধ্বংসস্তূপ পেরিয়ে হাফেজঘাঁটা বা লালন “সেবনকরা” করা আপনার অভ্যেস। পেট থেকে খসে যাওয়া বাচ্চা, মা মেয়েকে একখাটে ধর্ষণ, লাগাতার দেশত্যাগ আপনার সুদৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হবে, এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু যাঁদের বদান্যতার ধারা অক্ষুণ্ণ রাখতে আপনাকে রোহিঙ্গাদরদী হতে হচ্ছে, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের humanistic moral ground নিয়ে আপনার সেই উঁচু ধারণাই কিন্তু আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

কারণ, বাস্তুহারা রোহিঙ্গাদের পরিচয় আছে আর সে পরিচয়ের প্রতি আপনাকে দায়িত্বশীল হতে হচ্ছে। আপনার তো তাও নেই ……

আপনি স্রেফ দায়িত্বশীল, কারণ আপনার career আছে, আপনার উপর আজ্ঞা আছে। আপনার কুলশীল গর্বিত স্যার, সহকর্মীরা আপনাকে সফলই দেখতে চান।