বঙ্গদেশ ডেস্ক: আভাস হয়ত এর বহুদিন আগেই পেয়ে গেছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিতে যখন মার্টিন গুপ্তিলের রকেট থ্রোতে রান আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, তখনই হয়ত স্পষ্ট হয়ে গেছিল ললাটলিখন। তারপর থেকে আর ব্যাট হাতে মাঠে নামতে দেখা যায়নি ঝাঁকড়া চুলের দামাল থেকে হঠাৎই ভারতীয় ক্রিকেটের মহীরুহতে পরিণত হওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনিকে।
আজ অবশেষে শেষ করলেন সবটা। গত একবছরেরও বেশী সময় ধরে সারাবিশ্বের প্রতিটি ক্রিকেটভক্তের সেই যে আকুল জিজ্ঞাসা, ‘ কবে ফিরবেন ধোনি?’ তার উত্তর দিলেন তিনি। আর ফিরবেন না আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রাঙ্গণে।দেশের ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসটিকেই বেছে নিলেন নিজের অবসরের দিন ঘোষণার জন্য
বর্ণময় কেরিয়ারে কম প্রাপ্তি তো নেই ওনার। অধিনায়ক হিসেবে তিন তিনটে আইসিসি টূর্ণামেন্ট জিতেছেন। সংগ্রহে রয়েছে হাজার হাজার রান, স্টাম্পিং, ক্যাচ। কিন্তু তবু কোথাও যেন ওনার জীবনে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হয়ে উঠেছিল ১৩০ কোটি দেশবাসীর ভরষা হয়ে ওঠা। শেষের ওভারে যত রানই প্রয়োজন থাকুক না কেন, যতক্ষণ ধোনি ক্রিজে থাকতেন, একমুহুর্তের জন্যও টিভি ছেড়ে নড়তে পারত না কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী।
বিপক্ষের পকেট থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ বের করে আনার জন্য বিশ্বের সেরা ফিনিশারের তকমা পেয়েছিলেন তিনি। কি অদ্ভুত মিল, নিজের কেরিয়ারের শেষটাও করলেন সাধারণ এক ক্রিকেটম্যাচের মত করেই। শেষ ওভার অবধি যেমন ম্যাচগুলোকে টেনে নিয়ে যেতেন, তেমনভাবেই দেশের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলার পরেও অবসর ঘোষণা করতে সময় নিলেন গোটা একটা বছরেরও বেশি কিছু সময়।
মানুষের কৌতুহল যখন চরমে, তখন নির্লিপ্তভাবে শেষ করে দিলেন সবটা। সতীর্থদের কাঁধে চড়ে স্টেডিয়াম ঘোরা নেই, আবেগপ্রবণ হয়ে বক্তৃতা নেই, কিচ্ছু নেই। স্রেফ একটা অধ্যায়ের শেষ ঘোষণা করলেন তিনি। যেন সূর্য্যাস্ত হল, অথচ অন্ধকার নেমে এলো না। গোধূলিবেলার আলো মাখতে দিলেন ভারত তথা গোটাবিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের।