একলব্যের ভারত

0
1550

দ্রোণাচার্য ব্যানার্জি, শ্যামনগরের একজন অত্যন্ত গণ্যমান্য শিক্ষক শ্যামনগরেই একটি নামজাদা বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যমের স্কুলে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক এবং সেই স্কুলেই দীর্ঘ ২০ বছর শিক্ষকতা করিয়ে তিনি আজ সেখানে পুরুষ বিভাগের সবথেকে সিনিয়র প্রতিনিধি । বলাই বাহুল্য, স্কুলের প্রতিটি ছাত্র আর শিক্ষক তাঁকে যারপরনাই সমীহ এবং শ্রদ্ধা করে দ্রোণাচার্য বাবুর স্ত্রীও একজন শিক্ষিকা আর তাঁদের একমাত্র সন্তান (যার বয়স বর্তমানে ১২) কলকাতার একটি অত্যন্ত নামজাদা ইংরাজি মাধ্যমের স্কুলে পড়াশোনা করে মধ্য চল্লিশের দ্রোণাচার্য বাবু বাঙালি সমাজে যারপরনাই  সফল, দিব্যজ্ঞানী ব্যাক্তি

আজ তাঁরই স্কুলের একজন সহশিক্ষকের (অভিজিৎ চন্দ)বোনের বিয়েতে নিমন্ত্রিত হয়ে সোদপুরে এসেছেন, সপরিবারে অভিজিৎ বছর পাঁচেক হল শ্যামনগরের স্কুলে জয়েন করেছে এবং বলাই বাহুল্য এই বিয়েবাড়ির ব্যস্ততাতেও অভিজিৎ দ্রোণাচার্য বাবুর আপ্যায়নে কোনও ত্রুটি রাখছে না। অভিজিৎ এর স্কুলের বাকি সব শিক্ষক, শিক্ষিকা, প্রধান শিক্ষিকা, এবং স্কুলের ম্যানেজমেন্ট কমিটির গণ্যমান্য সকল ব্যাক্তিই এসে পৌঁছেছেন কিন্তু সকলের ভিড়ের মাঝে দ্রোণাচার্য বাবুর গুরুত্বটা যেন একটু বিশেষ । হবে নাই বা কেন, আগামী দিনে ওনার স্কুলে হেড মাষ্টারের পদ পাওয়ার একটা ভালোই সম্ভাবনা আছে বৈকি! এছাড়াও সাহিত্য চর্চা করেন, নিজে লেখালেখিও করেন (একটি বই ছাপানোরও কথা চলছে), পাড়ায় ক্লাব, রাজনীতি যাকে বলে এক্কেবারে অলরাউন্ডার!

হঠাৎই দ্রোণাচার্য বাবুর চোখ আটকে গেল বছর পনেরোর একটি মেয়ের দিকেমেয়েটি খুবই সুন্দরী এবং তার দিকে চোখ আটকে যাওয়াটা খুবই স্বাভাভিক ব্যাপার কিন্তু এই মেয়েটির মুখটা দ্রোণাচার্য বাবুর ভীষণ চেনা চেনা ঠেকছে ।  আরে! এ তো বিখ্যাত জিমন্যাস্ট অম্বালিকা ভট্টাচার্য্য,এবার অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে! সঙ্গে সঙ্গে তিনি অভিজিৎ কে তলব করলেন, “অভিজিৎ, অম্বালিকা তোমাদের এখানে? তোমার সাথে কি সুত্রে তার পরিচয়?”

অভিজিৎ বললেন, “স্যার, অম্বালিকার বাবা, একলব্য বাবুর সাথে আমাদের পারিবারিক পরিচয়, সেই সুত্রেই ওনারা আজ নিমন্ত্রিত ।” দ্রোণাচার্য বাবু এটা শুনে খুবই পুলকিত বোধ করলেন, “এতো দারুণ ব্যাপার! সবাই বলছে অম্বালিকা এবার অলিম্পিকে সোনা জেতার প্রবল দাবিদার, বাবা! এরকম একজন প্রতিভার সাথে তো আলাপ করতেই হবে, আচ্ছা অভিজিৎ মেয়েটির সাথে ওই ষণ্ডামার্কা ছেলেটি কে? বয়ফ্রেন্ড বলে তো মনে হচ্ছে না?”

অভিজিৎ হেসে উঠলো, “স্যার কি যে বলেন, উনিই তো একলব্য বাবু, অম্বালিকার বাবা ’’ দ্রোণাচার্য বাবু আবাক হয়ে বললেন, “কি বলছ অভিজিৎ, একে তো দেখে একজন ছোকরা মনে হচ্ছে, বড়জোর থার্টি প্লাস, এর কি করে পনেরো বছরের সন্তান থাকতে পারে!” অভিজিৎ বললেন, “স্যার, উনিই একলব্য বাবু, ওনার বয়স এখন ঊনচল্লিশ, জানি আপনার বিশ্বাস করতে কোথাও যেন আটকাচ্ছে, আচ্ছা খোলসা করে বলি, একলব্য বাবু খুব কম বয়সেই ব্যবসা শুরু করেন এবং খুবই দ্রুত সফলতা পান বাইশ বছর বয়সেই উনি বিয়ে করেন ওনার প্রেমিকাকে এবং চব্বিশ বছর বয়সে ওনার প্রথম সন্তান, অম্বালিকা এছাড়াও ওনার আরও দুই সন্তান, অভিমন্যু এবং জাহ্নবী ’’

দ্রোণাচার্য বাবু বেশ অবাক, “বাবা, তিন গণ্ডা সন্তান, একদিকে দেশের জনসংখ্যা হুড় হুড় করে বাড়ছে আর এরা ……… করে তো ব্যবসা, এতজন নিয়ে চলে কি করে?” “কি বলছেন স্যার!” অভিজিৎ-এর গলায় প্রতিবাদের সুর, “উনি হচ্ছেন এই অঞ্চলের সবথেকে বিত্তশালী ব্যবসায়ী, ব্যারাকপুর থেকে দমদম, এই গোটা অঞ্চলে জুড়ে ওনাদের খাসি, ফল আর ঢালাইয়ের ব্যবসা, এর সাথে এখন আবার ছটা পেট্রল পাম্পও শুরু করেছেন, ওনার সাকসেস স্টোরি আমাদের ইন্সপায়ার করে।

খাসির মাংস বিক্রেতার বাড়িতে অলিম্পিয়ান, কি দিনকাল পড়লো!” দ্রোণাচার্য বাবুর এই ব্যঙ্গকে সমর্থন জানিয়ে হেসে উঠলেন স্কুলের বাকিরাও বাঙালির কি অধঃপতন, মাংস বিক্রেতা নাকি সোদপুরের ইন্সপিরেশন! অভিজিৎ, তোমার মতন রুচিশিল ছেলের মুখে এরকম চুনসুরকি, মাংস ব্যাপারীর স্তুতি একেবারেই মানায় না, এরা ওই চুনসুরকি বেচে পয়সা করতে পারে আর গণ্ডায় গণ্ডায় বাচ্চা পয়দা করতে পারে, এদের জন্যই আজ বাঙালির কালচার বিপন্ন, নাহ! হতাশ হলাম।” দ্রোণাচার্য বাবু স্পষ্টতই বিরক্ত, বাকিরাও নাক সিঁটকাচ্ছেন

অভিজিৎ গোটা স্কুলের এরকম একটা নেগেটিভ রিয়্যাকশনে একটু অপ্রস্তুত বোধ করলেও হাল ছাড়ল না, “স্যার, কিছু মনে করবেন না, একলব্য বাবু কিন্তু একজন টিপিকাল মাংসের দোকানে বসাপাতিব্যবসায়ী নন, তিনি ইংরাজিতে একজন মাষ্টার ডিগ্রি হোল্ডার, এবং এম এড, উনি বিস্তর লেখালেখিও করেন, ইংরাজি ছাড়াও সংস্কৃত, ফ্রেঞ্চ এবং জার্মান ভাষায় পারদর্শী, আর উনি টিপিকাল দোকানে বসা দোকানী নন, ওনাদের চেইন অফ বিজনেস বিশেষ করে মাংস আর ফল, বিদেশে রপ্তানি হয় যার সূত্রে বিদেশে ওনার প্রায়ই যাওয়া আসা, আর সবথেকে বড় কথা ওনার আন্ডারে প্রায় দুই হাজার মানুষ নিজেদের জীবিকা ধারণ করেন স্যার, কি মনে হয়, উনি কি বাংলার কালচারের সাথে একেবারেই বেমানান?”

সকলেই স্তম্ভিত, দ্রোণাচার্য বাবু এরকম একটা কালচারাল শক আশা করেন নি, কিন্তু দ্রোণাচার্য তো আর একলব্যের কাছে হারতে পারে না, তাই একটুও দমে না গিয়ে, “বাবা! তাহলে তো এরকম একজন সেলিব্রিটির সাথে আলাপ করতেই হয়, সবার কি মত?” “অফ কোর্স”। সকলেই প্রস্তুত। একলব্যকে বাজিয়ে দেখতে, কালচার্ড বাঙালি সমাজে একলব্যকে তার জায়গা চিনিয়ে দিতে সবাই তখন উদগ্রীব

অভিজিৎ মনে মনে হেসে ফেলল, “ও একলব্যদা, একটু এদিকে আসুন না………… দাদা, এনারা, আমার স্কুলের সব শিক্ষকশিক্ষিকা”। কুশল বিনিময় হলএকলব্য বললেন, “ইট ইজ আ রিয়্যাল প্লেজার টু হ্যাভ ইওর অ্যাকোয়েনটেন্স।” এরকম নিউট্রাল অ্যাকসেন্টের ইংরাজি শুনে স্বয়ং ইংরাজির মাষ্টারমশাইও ভির্মি খেয়ে গেলেন, কিন্তু দ্রোণাচার্য বাবু একটুও দমে না গিয়ে যখন আক্রমণ শানাতে যাবেন ঠিক তখনই একলব্য সহাস্যে বলে উঠল, “স্যার, আমায় আপনি চিনতে পারছেন না?” দ্রোণাচার্য বাবু থতমত খেয়ে আমতা আমতা করছেন, একলব্য বললেন, “স্যার আমি আপনার স্কুলের এক্স স্টুডেন্ট একলব্য, সবাই আমায় রুগ্ন বলে ডাকতো, ভুলে গেলেন?” দ্রোণাচার্য বাবুর ভিতরে একটা স্রোত বয়ে গেল, বহু পুরনো কথা, তাঁর ক্লাসে একটি ছেলে একবার বলেছিল স্কুলের পর সে ব্যবসা করবে, কিন্তু তার সাথে সাথেই সে নিজেকে প্রপারলি এজুকেট করবে, তাই শুনে তিনি গোটা ক্লাসের সামনে সেই রুগ্ন ছেলেটিকে মাথার ডাক্তার দেখাতে উপদেশ দিয়েছিলেন এবং বাঙালির গরিমা সম্পর্কে বিরাট এক ইতিহাসের ক্লাস নিয়ে আজকের ভাষায় যাকে বলে স্যাভেজ ট্রোল করেছিলেন । এ তো সেই রুগ্ন থুড়ি সুঠাম, পলিশড অন্ত্রাপ্র্রেনুয়ার একলব্য !

ভা…… ভালো আছিস তুই? বাবা, তোর তো পুরো ভোল পাল্টে গেছে, তুই তো শুনছি এখানকার সেলিব্রিটি, হ্যাঁ!” একলব্য মনে মনেই বলে উঠল, “স্যার আপনার সেন্স অফ হিউমারটা কিন্তু আজও একই রকম রয়ে গেছে।” “অভিজিৎ আমার সম্পর্কে বাড়িয়ে বলে, সেরকম কিছু না, জীবনে রিস্ক নিয়েছিলাম, ঈশ্বর সহায় ছিলেন, আজও আছেন, দ্যাটস ইট।” দ্রোণাচার্য বাবুর সব কিছু যেন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে, তাও হেরে গেলে চলবে না, “তোর মেয়ে তো অলিম্পিকে যাচ্ছে, আর বাকি ছেলে মেয়েরা? আর কিছু মনে করিস না, আজকের এই জনবিস্ফোরণের ভারতে তোদের মতন শিক্ষিত ছেলেরা যদি পরিবার পরিকল্পনার কথা না ভাবে তাহলে দেশের উন্নতি কিভাবে হবে, কিছু মনে করিস না, কিন্তু না বলে পারলাম না।”

একটুও না দমে একলব্যর উত্তর, “স্যার, যেদিন শাহরুখ, আমির, সৈয়েফ এরা পরিবার পরিকল্পনার কথা ভাববে, আমিও সেদিন ওই পরিবার পরিকল্পনাকে সোনার পাথরবাটির জায়গায় বাস্তব মান্যতা দেবো।” “এ কি ধরনের সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা!” প্রায় সকলেই ওখানে সমবেত সুরে প্রতিবাদ করে উঠলো। “হ্যাঁ আমি সাম্প্রদায়িক, ঠিক যেরকম শ্যামাপ্রসাদ সাম্প্রদায়িক ছিলেন বলে আপনারা এই দেশে নিজেদের হিন্দু আইডেন্টিটিকে ইগনোর করে নিজেদেরকে ধর্মহীন ভেবে পুলকিত বোধ করেন, একইভাবে আমিও নিজেকে সাম্প্রদায়িক বলে পুলক বোধ করি যখন এটা দেখি যে আমার মতন একজন মানুষ দুই হাজার হিন্দুর আর্থিক সংস্থান সুনিশ্চিত করে প্রতি মাসে।”

“আচ্ছা, এইসব আলোচনা এখন না হয় থাক।” দ্রোণাচার্য বাবু এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন, এই একলব্য একজন কঠিন ঠাঁই তাই তিনি আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে দিতে সচেষ্ট হলেন, “না না, ভালো, তুই তো বেশ গুছিয়ে নিয়েছিস, এটাই তো চাই, আচ্ছা, এই সব ব্যবসা ট্যাবসা করে তোর মধ্যে আবার কবি কবি ভাব কিভাবে গজিয়ে উঠল? কিরে হিজিবিজি, নাকি ছন্দ বলে কিছু আছে?” একলব্য স্যরের এই ড্রাই হিউমার দেখে লজ্জিত বোধ করলো, “সারাদিন এতো বেশি রুক্ষতার সাথে মেলামেশা করি যে দিনের শেষে মনের আবেগগুলোকে একটু পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টা করি এই লেখালেখির মাধ্যমে, ঈশ্বরের কৃপায়ে কয়েকটা কবিতার বইও পাবলিশ হয়েছে, এই এইভাবেই চলে যাচ্ছে জীবন, আর এই পজিটিভ এনার্জিটাই নিজের সন্তানদের মধ্যে চ্যানেলাইজ করছি, ওদের শেখাচ্ছি বাঙালির জন্ম শুধু চেয়ারের ওই পাশ থেকে আদেশ নেওয়ার জন্য হয় নি, সময় এসেছে বাঙালি আবার চেয়ারের দখল নিয়ে আদেশ দেবে, বাঙালি নিজের কথা ছেড়ে আবার দেশের কথা ভাববে, সবই আপনাদের আশীর্বাদ।”

“আচ্ছা স্যার, অর্জুনের কি খবর?” অর্জুন দ্রোণাচার্য বাবুর সবথেকে প্রিয় ছাত্র, “অর্জুন পিএইচডি করে এখন আমেরিকার সিয়্যাটেলে ওয়েল সেটেলড!” দ্রোণাচার্য বাবুর গলায় গর্ব । “ভালোই!”একলব্য স্মিত হেসে বলতে থাকল, “দেশে পড়াশোনা করে, বিদেশে গিয়ে সেই শিক্ষা আর ট্যালেন্ট বিক্রি করে সেই দেশের নাগরিক হয়ে গিয়ে তারপর সোশ্যাল মিডিয়াতে বসে বিলাপ করা ধুর্ ভারত হোপলেস, কিস্যু হবে না এই দেশটার! সত্যিই, আক্ষরিক অর্থেই অর্জুন ওয়েল সেটেল্ড, স্যার আপনার গাইডেন্স না পেলে কি আজ অর্জুন এই জায়গায় যেতে পারতো? আমরা সত্যিই ভাগ্যবান আপনার মতন শিক্ষকের সান্নিধ্যে কিছুটা সময় কাটাতে পেরে, এনিওয়ে স্যার, দারুণ লাগলো আপনার সাথে এতদিন পর দেখা হয়ে, আপনি আমাকে ভুলে গেছেন, কিন্তু আমি আপনাকে মনে রেখেছি, আর স্যার, আরেকটা ভালো খবর, মেয়ে এবার মাধ্যমিকে ফিজিক্সে স্কুলের মধ্যে হায়েস্ট নম্বর পেয়েছে, আপনি শুনলে খুশি হবেন, নট ব্যাড ফর আ মাংস বেচনে ওয়ালা, অভিজিৎ চলি রে নেক্সট ব্যাচ এবার বসবে বোধহয়, আসলাম স্যার ।’’

দ্রোণাচার্য বাবু অস্ফুট স্বরে কিছু বলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু বিয়েবাড়ির ভিড়ে সেটা হারিয়ে গেলো । শিক্ষিত দ্রোণাচার্য বাবু কুড়ি বছর মাস্টারি করে বাঙালির ‘গরিমা’ ধরে রেখেছেন বটে, কিন্তু দিনের শেষে তিনি চেয়ারের ওপার থেকে আদেশ নিয়েই যাচ্ছেন, আর ভবিষ্যতেও, হেড মাষ্টার হলেও তাঁকে ওপর মহলের ইয়েস ম্যান হয়েই থাকতে হবে রুজি রোজগারের তাড়নায়, কিন্তু একলব্য প্রকৃত অর্থেই কাণ্ডজ্ঞানী, দ্রোণাচার্য বাবুর অহংকার সেটা স্বীকার করতে না চাইলেও তিনি এই সত্যকে ঝেড়ে ফেলতে পারছেন না। শিক্ষা আর সাহস এই দুইকে সম্বল করে একলব্য আজ প্রকৃত অর্থেই বঙ্গ সমাজকে এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে।

এই মহাভারতের পটভূমিকায় একলব্য আজ কোনরকম রক্তপাত ছাড়াই দ্রোণাচার্য বাবুর বুড়ো আঙ্গুলটা কেটে নিয়ে ধর্মের প্রতিষ্ঠা করল।