মাউন্ট আলি রত্নি টিব্বা শৃঙ্গ জয় চার বাঙ্গালী পর্বতারোহীর

0
462

বঙ্গদেশ ডেস্ক:;প্রথম ভারতীয় হিসেবে একসঙ্গে হিমাচলের ‘মাউন্ট আলি রত্নি টিব্বা’ শৃঙ্গ জয় করলেন চারজন বাঙ্গালী পর্বতারোহী (Bengal Mountaineers Climb Up Mount Ali Ratni Tibba)। নিখোঁজ হওয়ার আগেই চিন্ময় মণ্ডল, অভিজিৎ বণিক, দিবস দাস ও বিনয় দাস নামে বাঙ্গলার এই চার অভিযাত্রী দুর্গম পর্বত শৃঙ্গ সফলভাবে আরোহণ করেছেন। গাইড কিংবা বিশদ উপকরণ ছাড়াই ‘আল্পাইন স্টাইল’পদ্ধতিতে মিলেছে এই সাফল্য। যা বাঙ্গলার পর্বতারোহণের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা বলেই মনে করছে পর্বতারোহী মহল।

7 সেপ্টেম্বর হিমাচল প্রদেশের কুলুর বেসক‍্যাম্প থেকে সামিটের দিকে রওনা হ‌ওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না চার বাঙালি পর্বতারোহী অভিজিৎ বণিক, চিন্ময় মণ্ডল,বিনয় দাস এবং দিবস দাসের। কিন্তু 24 ঘণ্টা পরও তাঁদের বেসক‍্যাম্পের দিকে ফিরতে না-দেখে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে শেরপার কপালে। বিপদের আঁচ বুঝতে পেরে তিনি বাকি দুই পর্বতারোহীকে সঙ্গে নিয়ে কুলুর মালানার কাছে ওয়াচেম নামে একটি গ্রামে হাজির হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর খবর আসে ওই চার পর্বতারোহীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি। তাঁদের হদিশ পেতে কুলুর জেলা প্রশাসন অটল বিহারী মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সাহায্য নিয়ে দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করে।

কিন্তু বিশেষ অগ্রগতি না-হওয়ায় শেষপর্যন্ত বায়ুসেনার সাহায্য নেওয়া হয়। সাফল্য আসে রবিবার। সেদিনই নিখোঁজ চার বাঙ্গালী পর্বতারোহীকে সুস্থ অবস্থায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায় বায়ুসেনার উদ্ধারকারী দল। সোমবার তাঁদের বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হয় কুলুর বেসক‍্যাম্পে। উদ্ধার করার পর ওই চার পর্বতারোহীর ‘মাউন্ট আলি রত্নি টিব্বা’ শৃঙ্গজয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন তাঁরা।এই চার পর্বতারোহীর শৃঙ্গ জয়ের কৃতিত্বে গর্বিত পরিবারের লোকেরা।

পর্বতারোহীদের কথায়,7 সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটা নাগাদ যখন তাঁরা দুর্গম এই শৃঙ্গের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন তখনও শৃঙ্গের মাথা প্রায় 200 মিটার উঁচুতে। এই অবস্থায় 5 হাজার 300 মিটার উচ্চতা সম্পন্ন ‘মাউন্ট আলি রত্নি টিব্বা’ শৃঙ্গে কোনও স্লিপিং ব‍্যাগ,তাঁবু এবং স্নো-বুট ছাড়াই একটি পাথরের গর্তের মধ্যে রাত কাটান ওই চার পর্বতারোহী।ওই রাতেই লাইট সিগন্যালিং করে সামিট ক‍্যাম্পে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টাও করেন তাঁরা। কিন্তু আলো বেস ক‍্যাম্প পর্যন্ত পৌঁছায়নি। এমনকি ওয়াকি টকিও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এই চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও হাল ছেড়ে দেয়নি পর্বতারোহীরা। পরের দিন সকালে ফের যাত্রা শুরু করেন তাঁরা । অবশেষে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ‘মাউন্ট আলি রত্নি টিব্বা’ শৃঙ্গের চূড়ায় পৌঁছান চার পর্বতারোহী। কোনারকম গাইডেন্স ছাড়াই এরকম টেকনিক্যাল পিক সামিট ছোঁয়া অত‍্যন্ত কৃতিত্বের বলেই মনে করছেন পর্বতারোহী মহল।

সেফটি গিয়ার খুলে পুনরায় দড়ির সাহায্যে র‍্যাপলিং করে নামতে গিয়ে ওই চার পর্বতারোহীর সন্ধ্যা হয়ে যায়। ততক্ষণে বেসক‍্যাম্প খালি হয়ে যায়। 8 সেপ্টেম্বর দুপুরেই পর্বতারোহীদের সম্পর্কে অ্যালার্ট জারি হয় কুলুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ক্লান্ত হয়ে 9 সেপ্টেম্বর সামিট ক‍্যাম্পেই বিশ্রাম নেন ওই চারজন। ওইদিন ভোরেই শেরপা নীচে এসে তাঁদের নিখোঁজের সংবাদ দেন। সেদিনই ওই উদ্ধারকারী দল চার পর্বতারোহীর খোঁজে রওনা দেন বেসক‍্যাম্পের উদ্দেশ্যে। তারপরই খোঁজ মেলে তাঁদের ৷