নেটে ভাইরাল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিজ্ঞাপন, বাস্তবে বলি রাহুল রাজপুত

0
1144

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- বর্তমানে বিজ্ঞাপন মার্কেটে কম্পিটিশন অত্যন্ত বেশি। প্রত্যেক কোম্পানিকে সব সময় মাথায় রাখতে হয় বিজ্ঞাপনকে কতটা আকর্ষণীয় করে তুললে তা রীতিমতো ভাইরাল হবে। ঠিক সেই উদ্দেশ্য মাথায় রেখেই গত শুক্রবার, তানিস্ক জুয়েলারী একটি নতুন বিজ্ঞাপন বাজারে এনেছে যেখানে মিশ্রসংস্কৃতির এক দম্পতির কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রটি সাবেকি সাজে সজ্জিত হয়ে সাধ ভক্ষণ অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

অপ‌ইন্ডিয়া সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে, লিড হিরোইনের পরনে ঐতিহ্যবাহী শাড়ি, গহনা এবং কপালে লাল টিপ রয়েছে যেখানে তার চারপাশের লোকজন সাবেকি মুসলিম সাজে সজ্জিত। বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে একটি মহিলা নায়িকার হাত ধরে বাগানে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি সম্ভবত শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাগানের যে জায়গায় মহিলাটিকে সাধ ভক্ষণের জন্য বসানো হচ্ছে তার চারিদিকে মঙ্গলদ্বীপ জ্বালানো হয়েছে এবং একটি নটরাজের মূর্তিও উঁকি দিতে দেখা গেছে।

দেখা গেছে, সাধ ভক্ষণ অনুষ্ঠানে বসার আগে মেয়েটি তার শাশুড়িকে জিজ্ঞাসা করছে কীভাবে তাদের (মুসলিম পরিবার) বাড়িতে এই হিন্দু রীতিনীতি পালন করা হয়? শাশুড়ি জবাবে বলছে কন্যাকে খুশি রাখাই হচ্ছে সর্বজনীন আচার সেখানে হিন্দু মুসলিম ভেদাভেদ নেই।

এই বিজ্ঞাপনটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির উদাহরণ হিসেবে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। কিন্তু এই ভিডিওটি ঠিক সেইদিন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে সবার কাছে পৌঁছে যায় যেদিন আঠারো বছর বয়সী রাহুল রাজপুতকে তার প্রেমিকার পরিবার হত্যা করে। প্রতিবেদন অনুসারে, মুসলিম মেয়েটির পরিবার, বিশেষত মেয়েটির ভাই, বিধর্মী প্রণয়ের বিরোধিতা করেছিল। সমাজের একাংশের অভিযোগ , বাস্তবে এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটে যেখানে হিন্দু মহিলাদের মুসলিম পুরুষদের বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। শুধু তাই নয় বিয়ের পর তাদের মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করতে‌ও জোরজবরদস্তি করা হয়। সম্প্রতি নিউজ মিডিয়ার একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একটি কুড়ি বছরের কিশোরীর পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছে যে সলমান নামে এক ব্যক্তি তাদের মেয়েকে অসাধু উদ্দেশ্যে ফাঁদে ফেলে মেয়েটিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার পর বিয়ে করে। বেশ কিছুদিন আগের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে উঠতি মডেল পূজা আত্মহত্যা করে। অভিযোগ, তার স্বামী জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে‌ বাধ্য করেছিল।

বিগত কয়েকদিনের মধ্যেই ঘটে গেছে দুটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। একঝলক দেখে নেওয়া যাক।

এক, লক্ষ্মীপতির সঙ্গে নিজামুদ্দিনের ছোট মেয়ের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল।। রামনগড়ার পুলিশ সুপার, এস গিরিশ জানিয়েছেন, “গত মাসে এই দুইজন বিয়ে করতে চেয়েছিল কিন্তু নিজামুদ্দিন তার মেয়েকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার সকালে নিজামউদ্দিনসহ আরও তিনজন লক্ষ্মীপতি ও তার বড় ভাই নটরাজকে কুডুরের কাছে কানাকানাহল্লিয়ার একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। বিয়ের অজুহাতে সেখানে নিয়ে গিয়ে চারজন মিলে লক্ষ্মীপতিকে নৃশংসভাবে খুন করে।” (বিস্তারিত এখানে)

দুই, রাহুল আদর্শ নগর এলাকায় মুলচন্দ কলোনিতে নিজের পরিবারের সাথে থাকত। সে নিজের বাড়িতেই টিউশন পড়াত আর সে নিজে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। তার সাথে একটি মেয়ের সম্পর্ক ছিল। আর সেই মেয়ের পরিবার রাহুলকে পছন্দ করত না! কারণ তাঁরা অন্য ধর্মের ছিল। আর এই কারণে যুবতীর পরিবার রাহুলের হত্যার ষড়যন্ত্র কষে। মৃতের পরিবার জানায়, যুবতীর পরিবার রাহুলকে বাচ্চাদের টিউশন পড়ানোর বাহানায় ডেকে নিয়ে যায় আর যুবতীর বাড়ির থেকে একটু দূরেই তাকে হত্যা করে। ই মামলায় পুলিশ এখনো পর্যন্ত তিনজন নাবালক সমেত মোট পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। সাবালক অভিযুক্তরা হল মনবার হোসেন আর মোহম্মদ রাজ হোসেন। বাকি তিনজন নাবালক।(বিস্তারিত এখানে)