রাস্তার ধারে রাত কাটাতে হচ্ছে বন্যা দুর্গতদের

0
445

হঠাৎ করে মহানন্দা নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় ঘরের সম্পূর্ণ আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে পারেনি বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারা। নদীর জল বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় পুরাতন মালদা পুরসভার ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ২০০ পরিবার এখন রাস্তার ধারে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ অবশ্য এলাকার স্কুলগুলিতে আশ্রয়ে ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। কিন্তু পুজোর মরশুমে হঠাৎ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায়, এখন চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে। বানভাসি মানুষদের অভিযোগ, স্কুলগুলিতে থাকার ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ত্রাণসামগ্রীও সঠিকভাবে মিলছে না। করোনা আবহে অনেকেই কাজও হারিয়েছেন। তাই এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কাছে সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন বানভাসিরা।

পুরাতন মালদা পুরসভার ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অনেকটা অংশ মহানন্দা নদী সংলগ্ন। ওয়ার্ডগুলিকে নীচু এলাকাগুলিতে বিপুল সংখ্যক মানুষের বসবাস। গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের জেরে মহানন্দা নদীর জল বেড়েছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে ওই দুই ওয়ার্ডের নীচু এলাকা। কমপক্ষে ২০০ পরিবার বন্যায় প্লাবিত হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বহু মানুষ নিজেদের ঘর থেকে অনেক আসবাবপত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। একদিকে করোনা সংক্রমণ, অন্যদিকে, বন্যার এই দুর্যোগ সব মিলিয়ে চরম সংকটের মধ্যে দিন কাটছে বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের। বানভাসিদের অভিযোগ প্রসঙ্গে পুরাতন মালদা পুরসভার প্রশাসক কার্তিক ঘোষ বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইবার বন্যার মুখে পড়তে হল। এই পরিস্থিতিতে ওই দুটি ওয়ার্ডের একাংশ বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। যারা মহানন্দা নদীর পাড় সংলগ্ন নীচের অংশে বসবাস করেন, সেইসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য পুরসভা থেকে সবরকম সহযোগিতা করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুরের নীচু এলাকার বাসিন্দা সন্তোষ মণ্ডল, শ্যাম মণ্ডলদের অভিযোগ, “রাতারাতি মহানন্দা নদীর জল বেড়েছে। বাড়িঘরে জল ঢুকেছে। ঘরের আলমারি, আলনা, শোকেস সরানোর সময় পাইনি। ওইসব আসবাবপত্র ঘরেই থেকে গিয়েছে। জলে থেকে জিনিসগুলি নষ্ট হচ্ছে। কোনওরকমে জামাকাপড় সহ বেশ কিছু জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছি। বাকি আসবাবপত্র বাড়িতে জলবন্দি হয়ে পড়ে আছে। রাস্তার ধারে কোনওরকমে আশ্রয় নিয়েছি। স্কুলে জায়গা পাচ্ছি না। তারমধ্যে ঝড়-বৃষ্টিতে দুর্ভোগ এতটাই বেড়েছে যে বলার অপেক্ষা রাখে না। নদীর জল কবে কমবে, আর কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কিছুই বুঝতে পারছি না। এই অবস্থায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। হাতে কাজ নেই। রোজগারের সমস্যায় পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটছে। তাই এই ব্যাপারে পুরসভা এবং প্রশাসনের কাছে সহযোগিতার দাবি করছি।” প্রশাসক বলেন, “পুরসভা থেকে যতটা সম্ভব ওই দুটি ওয়ার্ডের বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। স্কুলগুলিতে বানভাসিদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো পরিস্থিতি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”