চীনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ, চাপে কমিউনিস্ট শাসিত ওলি সরকার

0
709

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ভারতের ভূখণ্ড দেশের মানচিত্রে জায়গা দিতে গিয়ে দিল্লির দিকে আঙুল তুলেছিল নেপালের ওলি সরকার। আর এখন তাদের দেশে ঢুকে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে ‘বন্ধু’ চিন।

নেপালের হুমলা এলাকার মধ্যে বেআইনি ভবন তৈরির অভিযোগ রয়েছে চিনের বিরুদ্ধে। আর সেই কারণেই উত্তাল নেপাল। চিনের অনৈতিক অনুপ্রবেশের বিষয়টি যে পাহাড়ের দেশ নেপালের মানুষ একদম ভালো ভাবে মেনে নিচ্ছেন না, সেটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিতে চাইছেন তাঁরা। কাঠমাণ্ডু শহরের রাস্তায় চিন বিরোধী প্রচারেরই ঝলক সেই বার্তাই দিল।

বুধবার রাজধানীতে পথে নামেন অগণিত মানুষ। তাঁদের মুখে ছিল চিন বিরোধী স্লোগান, ব্যানারে লেখা ছিল ‘‌ব্যাক অফ চায়না।’‌ আসল ঘটনার সূত্রপাত উত্তর নেপালের হুমলা জেলায় চিনা অনুপ্রবেশের মাধ্যমে। এরপর থেকে সেই এলাকা নিজের বলে দাবি করতে শুরু করেছে চিনা কমিউনিস্ট সরকার। সেই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদেই এদিন কাঠমাণ্ডুতে চিনা দূতাবাস ঘেরাও করেন নেপালের সাধারণ মানুষ। আগেই হুমলা
জেলার লাপচা এলাকা, যেখানে চিন অবৈধ নির্মাণ করছে, সেখানকার সাধারণ মানুষ স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাঁদের ক্ষোভ, অভিযোগ জানিয়েও শেষ পর্যন্ত লাভ হয়নি কারণ চীন প্রধানমন্ত্রী ওলির অত্যন্ত প্রিয় পাত্র‌।

নেপাল তিব্বত সীমান্তের এই গ্রাম এমনিতেই দুর্গম। রাস্তা ঘাট, যোগাযোগের তেমন কোনও সুযোগ-সুবিধা নেই এখানে। কিন্তু মজার বিষয় হল, নেপালের দিক থেকে যোগাযোগের অসুবিধা থাকলেও, চিনের দিক বেশকিছু রাস্তা আছে। চিনা প্রশাসন সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই অনুপ্রবেশ করেছে। আর শুধুমাত্র অনুপ্রবেশ নয়, স্থানীয় মানুষদের রীতিমতো হুমকি দেওয়াও শুরু করেছে বলে অভিযোগ সেই অংশের বাসিন্দাদের। অভিযোগ, চিনারা হুমকি দিচ্ছে, নেপালের ওই অংশের বাসিন্দারা যেন সীমান্তের আশেপাশে না ঘেঁষে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিক্ষোভের ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে চিনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

যদিও, এখনও এই বিষয়ে নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কোনও রিপোর্ট জমা করেনি। কিন্তু ঘটনা নিয়ে চিন্তিত স্থানীয় প্রশাসন। বিষ্ণু বাহাদুর লামা নামে যে স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটি প্রধান এই ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছিলেন, তিনি বলেছেন, “প্রতিনিয়ত লালফৌজের লোকজন স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দলে টানার চেষ্টা করছে।” সেই সঙ্গে চিনের নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। তিনি জানিয়েছেন, এগারো বছর আগে, একটি স্থানীয় রাস্তা তৈরির সময় ১১ নম্বর পিলারটি, যেটি সীমান্ত নির্দেশ করত, সেটি ভেঙে পড়ে। আর তারপর এতদিনেও সেটি মেরামত হয়নি। নেপালের গড়িমসির কারণেই চিন এই পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়াতেও চিনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নেপালের সাধারণ মানুষ। তবে সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, চিন নেপালের জমি দখলের কথা বেমালুম উড়িয়ে দিয়েছে। নেপালে চিনা দূতাবাস থেকে অভিযোগ বলা হয়েছে গোটা বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা করছে ভারতের মিডিয়া। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জমি দখলের বিষয়টি তদন্ত করতে একটি টিম পাঠিয়েছে হুমলায়।