দুই “মা”য়ের দুই বাজেট: স্বৈরাচারীর দায়িত্বহীনতা বনাম গৃহিণীর নিপুণ ব‍্যবস্থাপনা

0
1174

সুদীপ্ত গুহ

মমতা ব্যানার্জীর ভোট অফ একাউন্ট তাঁর গত দশ বছরের ব্যর্থতার একটি তালিকা মাত্র।গত দশ বছরে তাঁর যা যা করা উচিৎ ছিল, কিন্তু তিনি করতে ব্যর্থ, সেই কাজ তিনি এই তিন মাসে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করতে চলেছে আসন্ন নির্বাচনের দিন। এর‌ই মধ্যে প্রচুর পরিকাঠামো প্রকল্প, প্রচুর স্কুল, প্রচুর হাসপাতাল, প্রচুর ব্রিজ বানানোর ঘোষণা মমতা ব্যানার্জী করলেন।বাঙালি মাত্র তিন মাসে কী কী পেতে পারে? তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এটা কি তাঁর বাজেট? নাকি তাঁর ব্যর্থতার তালিকা। এই বাজেট তিনি 2011 তে পেশ করলেন না কেন? দশ বছর ধরে তাহলে তিনি কী করলেন? 

গত 10 বছরের তাঁর আর্থিক নীতির একটাই উদ্দেশ্য ছিল সরকার শিল্পপতিদের জমি দেবে না, স্পেশাল ইকোনমিক জোন দেবে না, কোন‌ও শিল্প আসবে না, মানুষ বেকার থাকবে। আর তিনি সবাইকে দিনে 200 টাকার চাকরি দেবেন, মেয়েদের বছরে 500 টাকা দেবেন, সাইকেল দেবেন। শুধু দেবেন না নিজের পায়ে দাঁড়াতে।

2016 তে কেন্দ্র সরকার গঙ্গাসাগরে একটা গভীর সমুদ্র বন্দরের অর্থ বরাদ্দ করেন, যা পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তরপ্রদেশ এর অর্থনীতি পরিবর্তন করে দিতে পারতো। কিন্তু তিনি সেটা হতে দিলেন না। এর ফলে, লাভ বাংলাদেশের চারটি বড় বন্দরের। তাঁর বদলে মুখ্যমন্ত্রী এবারের বাজেটে ঘোষণা করলেন তাজপুর বন্দর, যার ফল পাবে পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু অংশ মাত্র। এছাড়া অমৃতসর কলকাতা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোরিডোর, লুধুয়ানা ডানকুনি ফ্রেইট করিডোর, ইস্ট কোস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোরিডোর, মুম্বাই হাওড়া ফ্রেইট করিডোর, কলকাতা বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট ভিলেজ ইত্যাদি বহু প্রকল্পের টাকা তিনি ফিরিয়ে দেন।

মমতা ব্যানার্জীর জমিনীতির ফলে হয়নি সড়ক সম্প্রসারণ, বিমান বন্দর সম্প্রসারণ, জল প্রকল্প, সেচ প্রকল্প, বিদ্যুৎ প্রকল্প। আসেনি কোন‌ও শিল্প।এর মধ্যে কিছু কিছু উনি এবার ঘোষণা করলেন। তবে, 2011 তে কে তাঁর হাত বেঁধে রেখেছিলো? 

  • এবারের বাজেটে বহু স্কুল তৈরির কথা বলা হয়েছে। 2011 তে তবে তিনি ঘোষণা করেননি কেন? 
  • এবারের বাজেটের শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির কথা বললেন তিনি। এটা গত 50 দিন বিকাশ ভবনের সামনে ধর্ণারতদের বললেন না কেন? 

    34 বছরের অপশাসনের পর মমতা ব্যানার্জীকে বাংলার মানুষ বসিয়েছিল এক সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। কিন্তু তাঁর জমিনীতি, SEZ নীতি, FDI নীতি ও অর্থ নীতির জন্য রাজ্য না এসেছে কোন‌ও শিল্প না হয়েছে কোন‌ও উন্নয়ন পরিকাঠামো। তাঁর একগুঁয়েমির জন্য রাজ্যে হয়নি তাঁরই ঘোষিত মেট্রো প্রকল্পগুলি।

    দুর্নীতি আকাশ ছুঁয়েছে এবং সমাজে তাঁর প্রতিফলনও পড়ছে।

    1. রাজ্যের যুবক যুবতী বুঝে গেছে সৎ পথে সরকারি চাকরি হবে না। তাই বন্ধু হবার মুখে RICE/MICE / জর্জ টেলিগ্রাফ।

    2. রাজ্যের যুবক যুবতী বুঝে গেছে এরাজ্যে শিল্প আসবে না। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং এর আসনও ভর্তি হচ্ছে না। 

    3. সল্টলেক থেকে জলপাইগুড়ি পরিণত হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে।

    4.চার বছর ভেঙে পড়া পোস্তা ব্রিজ এখনো সরানো গেল না।

    5. সৌরভ গাঙ্গুলীকে কর্ণাটক থেকে ডাক্তার উড়িয়ে নিয়ে আসতে হয়। বাকিরা ভগবানের ভরসায়।

    6.মমতা ব্যানার্জীর জেদের জন্য গত 11 বছর জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ সেতু, ডালখোলা বারাসাত রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ।

    তাহলে খরচা কী করলেন তিনি এই দশ বছরে?

    মূলত সব ধারণের ভোটারদের ঘুষ দেয়া, বেকার, মহিলা, বৃদ্ধ, মৌলবী। আজকাল মমতা ব্যানার্জীকে তাঁর স্তাবকরা ‘বাংলার মা’ বলে সম্বোধন করছেন। হ্যাঁ তিনি মা। তিনি এমন মা যিনি সন্তানকে পড়াশুনা করতে না বলে পড়াশুনার খরচ সন্তানের হাতে তুলে দিয়ে সাময়িকভাবে ভালো হবার চেষ্টা করেন। পরিবর্তে নষ্ট করেন সন্তানের ভবিষ্যৎ। 

    কেন্দ্রীয় বাজেটে আমাদের সরকারের অর্থমন্ত্রী মহাশয়া ঠিক সেই ভাবে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ রেখেছেন, যেভাবে একজন মধ্যবিত্ত ভারতীয় মা তার সংসার দেখেন।

    1. একজন মা যেমন হাত খরচ দিয়ে নয়, সন্তানদের পড়াশুনা /স্বাস্থ্য খেলাধুলায় খরচ করার মাধ্যমে তাঁদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেন, নির্মলাজি ঠিক তেমন কঠোর মায়ের ভূমিকা পালন করেছেন এই অতিমারীর যুগে।তিনি হাতে টাকা তুলে না দিয়ে স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ (বন্দর, রেলপথ, জলপথ, বিমানপথ, সড়কপথ ) করেছেন মূলত দুটি কারণে। নির্মাণের সময় বহু মানুষ কাজ পাবে। নির্মাণ শিল্পের কর্মী থেকে ইঞ্জিনিয়ার, সিমেন্ট, বলি, ইস্পাত, পরিবহনসহ বহু শিল্প এতে অক্সিজেন পাবে। নির্মাণের পর স্থায়ী পরিকাঠামো অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন এনে দেবে, জীবন ও জীবিকার মান বাড়বে । এর পরিবর্তে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বামপন্থী অর্থনীতিবিদদের কথা শুনে যদি হাতে টাকা তুলে দিতেন, তাতে কিছুদিন মানুষ ভোট দিতো, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অন্ধকার দিন ঘনিয়ে আসত। যেটা পশ্চিমবঙ্গে বাম আমলের বার্গাদারী প্রথা কিংবা তৃণমূল আমলের বিভিন্ন ‘ শ্রী ‘ প্রথার ফলে হয়েছে।

    2. অথচ, তিনি অতিমারীর মুহূর্তে কোন নতুন আয়কর বসাননি।

    3. এদিকে, কর্পোরেট কর বাড়ালে বিদেশী পুঁজি চীন থেকে সরাসরি ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম বা মেক্সিকো চলে যাবে। বিনিয়োগ বাড়াতে এখানেও হাত দেননি নির্মলাজি। বিনিয়োগ এলে স্থায়ী উন্নয়ন হবে পরের প্রজন্মের।

    4. GST বাড়ালে মানুষের উপর চাপ বাড়বে, বাড়বে মুদ্রাস্ফীতি। তাই এখানেও হাত দেননি।

    5. অন্যদিকে শিক্ষা খাতে বহুগুণ  ব্যয় বাড়াতে হয়েছে নতুন শিক্ষা নীতি অনুযায়ী।

    6. স্বাস্থ্য খাতে টাকা বাড়াতে হয়েছে ভবিষ্যতের কথা ভেবে।

    7. এছাড়া পারিকাঠামোতে বিপুল বরাদ্দ করা হয়েছে জীবন ও জীবিকার জন্য, বাজার বৃদ্ধির জন্য।

    কিন্তু কোথা থেকে আসবে টাকা? কীভাবে মিলবে হিসাব? 

    উপায় 1: টাকা ছাপানো 

    উপায় 2: বিদেশী ব্যাংক থেকে ধার নেয়া 

    উপায় 3: রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বিক্রি 

    উপায় 4: এমন কিছু বিশেষ দ্রব্যে দাম বাড়ানো, যার ব্যাবহার কমলে দেশের উপকার, দশের উপকার।

    সরকার 3 & 4 নম্বর বেছে নিয়েছে। এখানে মা, ঘরের সোনা বিক্রি করে সন্তানের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যতের কথা ভেবেছেন কীভাবে ?

    1. টাকা ছাপালে টাকার দাম কমবে, জিনিসের দাম বাড়বে, বোঝা বাড়বে সাধারণ মানুষের। 2. বিদেশ থেকে ধার নিলে তার সুদ গুনতে হবে গরিব ভারতীয়কেই।
    সেক্ষেত্রে, 3. ভারত সরকারের গত 30 বছরের নীতি ( কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী স্বর্গীয় নরসিমা রাওজির ) সরকার ব্যবসা করবে না। সেই নীতি মেনেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত এবং 4,  সরকার বিদেশ থেকে আসা পেট্রোলিয়াম জাত দ্রব্যে দাম বাড়িয়ে রাখছে, যাতে এই সংকটে পেট্রল আমদানি করে টাকার দাম আর না কমে। টাকার দাম কমলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কেনা ঔষধ ইত্যাদির দাম বেড়ে যাবে। তাই পেট্রপণ্যের দাম কামালেন না।

    কিন্তু জাতীয় সম্পত্তি বিক্রি কি সঠিক পদক্ষেপ? জাতীয়করণ তো একসময়ের গর্বের বিষয় ছিল।তাহলে একটু পিছিয়ে যাই, জাতীয়করণের প্রথম দশ বছর মনে আছে? 1966-1975 ? জনঅরণ্য, ইন্টারভিউ, চৌরঙ্গী, আপনজন, এখনি, নতুন দিনের আলো, … একবার ইউটিউবে দেখলে মনে পড়ে যাবে। ইঞ্জিনিয়াররা নিজের কাজ ছেড়ে মিলিটারি,  ব্যাংক, সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। ডাক্তাররা দেশত্যাগ।চারু মজুমদার, সুবোধ ব্যানার্জী, চিত্তব্রত মজুমদার, জ্যোতি বসুদের স্বর্গ এই পশ্চিমবঙ্গ। 1974 এ 33% মুদ্রাস্ফীতি। 1975 এ মাঠ সামলাতে জরুরি অবস্থা জারি। 1979 তে দেশের জিডিপি নেগেটিভ। তখন কিন্তু কোভিড ছিল না। 1991 মে, দেশ দেউলিয়া হবার মুখে এবং IMF ভারতকে সতর্ক করলো। 1991 জুন নরসিমা রাও প্রধানমন্ত্রী হয়ে নেহেরুভিয়ান অর্থনীতিকে চিরবিদায় দিয়ে মুক্ত বাজার অর্থনীতির দরজা খুলে  দেশকে ছয় মাসের মধ্যে বাঁচিয়ে দিলেন। শুরু হল বেসরকারী পুঁজির স্বর্ণ যুগ। পরের ত্রিশ বছরে, 2019 এ, আমাদের শাসন করা দুই মহাশক্তি তথা ফ্রান্স ও ব্রিটেনকে নমিনাল জিডিপি তে ছাড়িয়ে, সেই ভারত যখন বিশ্বের পঞ্চম শক্তি এবং চতুর্থ সামরিক শক্তি, তখন সেই চাচা নেহেরুর রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো জন্য চোখের জল কীসের?  আর জিডিপি-র পিপিপি গণনায় আমরা পৃথিবীতে তৃতীয়। আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আছে কৌটিল্য পণ্ডিত বলেছিলেন, রাজা যেন ব্যবসা না করে।পরের 2000 বছর বিশ্বঅর্থনীতিতে যৌথ রাজত্ব করেছিলাম আমরা ও চীন। কিন্তু মার্ক্স সাহেব ঠিক উল্টো বললেন। সোভিয়েত রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপের দেখাদেখি নেহেরু গান্ধী পরিবারও মার্ক্স সাহেবের রাস্তা ধরলেন । বলাই বাহুল্য, সবাই ধরাশায়ী। 1991 তে ভারতের রাজনীতির দ্বিতীয় কৌটিল্য নরসিমা রাও আবার কৌটিল্যে অর্থশাস্ত্র অনুসরণ করে প্রায় দেউলিয়া হওয়া দেশকে বাঁচিয়ে দেন। পরের 30 বছরের চূড়ান্ত সাফল্য আশাকরি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে নিয়ে কুম্ভীরাশ্রু খেলা না খেললেই ভাল হয়।

    কিন্তু তাই বলে ব্যাংক বেচে দেবেন মশাই? 

    সরকার কেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বিক্রি করছে? এটা কি দেশকে বেচার নামান্তর? তাহলে,  বাজেটের কিছু অংশ আরেকবার দেখি। শিক্ষা ও  স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বরাদ্দ দ্বিগুণ। প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো হয়নি । পরোক্ষ কর ও বাণিজ্য কর বাড়ালেও বিদেশী বিনিয়োগ ভিয়েতনাম, মেক্সিকো চলে যাবে। বাজার চাঙ্গা করতে মানুষের হাতে টাকা পাঠানোর দুটি রাস্তা। এক, রেশন দোকানে 20 টাকার পাউচের সঙ্গে টাকা বেটে দেওয়া এবং দুই, পরিকাঠামো। সরকার কয়েক লক্ষ কোটি পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ করেছে, যা ভোটের বাক্সে ডিভিডেন্ড না দিলেও আগামী 100 বছরের জীবন জীবিকার মান বাড়াবে। তাহলে এত টাকা কোথা থেকে আসবে। সরকার  বেসরকারীকরণকে রাস্তা হিসেবে ভেবেছে। এক্ষেত্রে লাভজনক নাকি লাভজনক নয় সেটা বিবেচ্য নয়।

    কিন্তু তাই বলে  ব্যাংক বেসরকারীকরন? 

    তারপর সরকার বলছে মাত্র আট লক্ষ টাকা দেবে ব্যাংক ডুবলে? প্রসঙ্গত, এই টাকা এতদিন এক লক্ষ ছিল। যারা বিরোধিতা করছে, তারা এতদিন চুপ করে ছিল। তাছাড়া, কাগজে যাই লেখা থাকুক, সরকার পুরো টাকা দিয়েছে yes bank এর আমানতকারীদের। 

    পরের প্রশ্ন, NPA। সরকারি ব্যাংক NPA হলে RBI টাকা ছাপিয়ে আমাদের পকেটে পাঠিয়ে দেয়।কিন্তু বেসরকারি হলে RBI আমাদের ঘুমের গ্যারান্টি দেবে ? 

    প্রসঙ্গত, 1991 জুন থেকে গত 30 বছরে মোট NPA র 99% রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির এবং ঋণখেলাপি করা ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবার কোন আইন আমাদের দেশে ছিল না।এমন কি বাম ও তৃণমূল সমর্থিত মনমোহন সিংও কোন আইন প্রণয়নের কথা ভাবে নি। ফলত ভুগেছে ব্যাংক, RBI টাকা ছাপিয়ে ব্যাংককে বাঁচিয়েছে। চালের দাম 2 টাকা, ডালের দাম 3 টাকা বেড়েছে। পয়সা দেশের সেই সব মানুষের পকেট থেকে গেছে যারা ব্যাংকে টাকা রাখে কিংবা রাখে না।কিন্তু আমরা বুঝিনি। নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছি এই ভেবে যে আমার টাকা সুরক্ষিত।

    কিন্তু সরকার আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় কি করছে? 

    1. আগেই বলা হয়েছে বেসরকারী ব্যাংকে NPA-র পরিমাণ 1%. ফলে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা কম।

    2. সরকার IRDA /SEBI র মতো রেগুলেটরি অথরিটি বানাবে। ফলে ধার দেয়া এবং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এর ব্যাপারে সরকারের পূর্ণ অধিকার থাকবে।

    3. ম্যানেজমেন্ট এর দোষে ব্যাংক ডুবলে সরকার আমানতকারীদের অধিকার সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। রেখেছেন Yes Bank-এ, এর ক্ষেত্রে ফলে ভয় নেই।

    সরকার ব্যাঙ্কিং ব্যাবস্থা সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখতে একটি রেগুলেটরি বিল আনছে। আগেও এনেছিল। কিন্তু বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন ও বিরোধী দলগুলি তা আটকে দেয়। এবার তা আসবেই, পাশ হবেই। সরকার মানুষের কষ্টার্জিত টাকা সুরক্ষিত রেখে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বধ্যপরিকর‌।

    কিন্তু বীমা ক্ষেত্রে বেসরকারীকরণের কি প্রয়োজন ছিল? কেন বাড়ালো হল বিদেশী লগ্নির জন্য 74%? 

    প্রথমতঃ আন্তর্জাতিক বীমা সংস্থা না এলে বহু বিদেশী কোম্পানি এদেশে আসবে না।

    দ্বিতীয়তঃ সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বিক্রি হলে ম্যানেজমেন্ট সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।

    এক কথায় বাজেটকে এভাবে বলা যায় মহামারীর দিনে মধ্যবিত্ত মা ঠিক করেছেন, সন্তানের হাতে টাকা দিয়ে তার ভবিষ্যৎ ঝরঝরে না করে, সিন্দুকে রেখে দেয়া সোনা বিক্রি করে তিনটি কাজ করলেন :

    1. সন্তানের শিক্ষার ব্যাবস্থা 

    2. সন্তানের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে তাঁকে খেলাধুলায় ভর্তি করলেন 

    3. সোনা বেচে বাড়ির পরিকাঠামো বাড়ালেন যাতে সন্তানদের পড়াশুনায় মন বসে এবং ভবিষ্যতে নিজেদের জন্য জায়গা পান।

    ধন্যবাদ নির্মলাজিকে, ভারত মাতার সন্তানদের ভবিষৎ গড়ার রাস্তা বানানোর জন্য। 

    লেখক রাজ‍্য বিজেপির অর্থনীতি গ্রুপের সহ-আহ্বায়ক।