ভুলে যাই, আমরা ভুলতে চাই তাই

0
552
– কল্যাণ গৌতম

 

মৃত্যু-বর্ষণ, ধর্ষণ ছাপিয়ে
সম্প্রীতি পেয়েছে ফুল
সাক্ষী আছে বাংলার জনপদ নদীকূল।
পূজা ভালো।
ভালো নয় তার ছলে
পূজারীর আপনাকে ভোলা।
মাটি ভুলে যাই
ভোলায় দানব,
ফসল-শিশুর চেয়েও
দিকচিহ্নপুর স্মৃতি হয় তোলা।
ফুল ভালো
যতদূর ফল দেয়। যতদিন
বিষফল না মেরেছে আমায়,
যতদিন মিছে সুখ
নিত্যকাল দাঙ্গায় রাঙ্গায়,
যতদিন ফুলরঙে রক্ত এঁকেছে জামায়।
বৃন্তের কুসুম একই হবে
এটাই নিয়ম। জগতের হিতে
আলাদা গাছ কেন হল তবে?
পৃথক দেশ, অত্যাচারী জাতি?
আলাদা আলাদা তার ভিন্নরূপ বাতি? 

ঘরে ছিল সাপ; ছিল কি বেদে,
শঙ্খচিল? ছিল না।
ছিল শুধু বিষাক্ত ছোবল!
গোয়ালন্দ ছেড়ে স্টীমারে চেপে
কান্না তাই খড়কুটো পেতে
রান্নাঘর বসায় শহরের ঘাটে
শোকে তাপে ভুলে যাওয়া মানুষ —
শাপে ছেঁড়া উদ্ভিন্ন যৌবন।

ভুল পাত পেড়েছিল প্রতি রাত
পার্টি-করা-ছেলে,
হরতাল ডেকেছিল মুখার্জীরই কোলে;
মেয়ে তার ডেকেছিল নিজে
বঙ্গশাসন। শ্যামার প্রসাদখানি
জ্যোতির ভাষণ দিয়েছে চাপা।

তবুও বুকে করে রেখেছি আগুন
তবুও উবে নি জল চোখের সে কোণ।
ভোলে নি বোন তার, কেঁদেছিল
পায়ে পড়ে, যারা নরাধম অসুর;
তাদেরই কালরাত্রি-দুঃশাসনে
কোন্ কবি শুকাছিলো অঢেল অসুখ?

ইতিহাসে জানাবোই আমি।
বিষরাশি নষ্টজাতি অসভ্য বর্বর —
ভুল তার কতবার ভাঙ্গাবো রোজ রোজ?
যে অশান্ত মন বাঙ্গলার হাটে
রেখেছে দৈনিক খবরের খোঁজ —
ফালি এই জমিতে রয়েছি সুখে
বিশ্বময়, প্রসাদ তুলেছি মুখে;
শাসিয়েছে অহরহ বিষাক্তের ফৌজ।

এই সেই পবিত্র দিবস।
ভুলিনি ভুলোনা তুমি
এসেছো বিশে জুন —
অকারণ খুন দেখিবার শেষ
আবেগে শপথে হতেছি অবশ!
মাতা তুমি, ধরেছো এতকাল
শিরায় শিরায় তোমার সুবাস
অমোচ্য রস; ধরিত্রীর যাবতীয় যশ।