ওহে এত প্রেম আমি কোথা পাব নাথ, তোমারে বর্ডারে রাখিতে?

0
1143

শান্ত স্বভাব, মিতভাষী; আঁকা থাকে মুখে হাসি – শি চিনফিং (বাজারি বানানবিধি; তবে আরেকটু এগিয়ে চিচিং Fcuk হ’লেই গেছিল আর কি!) যেদিন খড়ের গাদায় জন্ম নিলেন, বাজারি পত্রিকা সেই দিন থেকেই চীন দেশের কোনো এক সর্বহারা কাস্তে-তারা আঁতুড়ঘরে ব’সে রিপোর্ট লেখা শুরু করল। তারপর হি-শি কীভাবে বেড়ে উঠলেন, খড়ের গাদায় শুয়ে রাতের পর রাত তিনি ঠিক কী কী করতেন,  এসবকিছুই বাজারিপোর্টার নোট ক’রে নেন।

বাজারি পত্রিকা ব’লে কথা, তা কি আর যে সে ব‍্যাপার ভায়া? সেখানে কাজ করতে গেলে পার্টি-গণিতে অন্তত একশত শতাংশ নম্বর চাই মাধ্যমিকে (রায় ও মার্টিন এর সহায়তায়)। সেই অঙ্কের সাহায্য নিয়ে শি’র মুখে শুকনো হাসি ঠিক কত ডিগ্রীতে ফুটছে তা মাপা হয়তো গেল, কিন্তু হায়! তাঁর ছাতির মাপ জানতে না পারার দুঃখ যে বড় বেদনার!

এই গল্পের ড্রাগন যখন তালগাছে উঠে ফোঁস ফোঁস নিঃশ্বাস ছাড়ছে, তখন তার তপ্ত আঁচে দিল্লিতে তাপমাত্রা গিয়েছে ক্রমেই বেড়ে; অথচ কেজরিবাবু তবুও মাফলার খোলার সময় পান নি।

বাজারিবাবু কিন্তু এতগুলো দিন চীনে কাটিয়ে তাঁর আদরের শি’র স্বভাব একেবারেই বুঝে গিয়েছেন। যেমন শি কি সুন্দর লজ্জা-লজ্জা মুখে কূটনৈতিক সৌজন্য বিনিময় করে থাকেন ইত্যাদি। চীনের কোন্‌ পর্বতের কোন গুহায় শি ঠিক কতগুলি বিনিদ্র রজনী যাপন করেছেন, কী ক’রে তিনি কৃষিকাজ শিখলেন, কীভাবে শহরের মানুষকে শিক্ষিত ক’রে তুললেন, এসবকিছুর সাক্ষী এই মহান বাজারিপোর্টার। সেই শি, ছোটবেলায় যার কোন বন্ধু ছিল না, তাঁকে ‘শান্ত ভাই আমার শি চিনফিং’ গেয়ে বুকে টেনে নিয়েছিলেন এই একমাত্র ব‍্যক্তি।

এই প্রগাঢ় বন্ধুত্ববশতঃই হয়তো, ভারতের কূটনীতিকরা শি-কে বুঝে উঠতে যতই অক্ষম হয়ে থাকুন না কেন, বাজারিবাবু কিন্তু শি-চরিত্রচরিতামৃত পুরো গুলে খেলেও এর কোনো তথ্যই ফাঁস করেননি। ভারতের ফ‍্যাসিস্ট সরকারকে চীনের প্রজাতান্ত্রিক কমিউনিস্ট সরকারের আমৃত্যু প্রেসিডেন্টের তথ্য কেনই বা দিতে যাবেন উনি?

তবু কালের নিয়মে, আর বাজারে দশটা-পাঁচটা হাজিরা দেবার তাগিদেই একদিন লালফৌজদের ছেড়ে বুকের বাঁ দিকে সামান্য চীন-চীন’ ব‍্যাথা নিয়ে ড্রাগনের দেশ ছাড়তে হল। বিদায়বেলায় শি মেপে একটু ভেজা কান্না দিল, বাজারি বাবু গভীর আবেগে বলে উঠলেন, “শি… প্লিজ়… ডোন্ট!”

শি বললে, “আই অ্যাম এ ড্রাগন, রিমেম্বার?”

তারপর এতদিনের বন্ধুকে শি তিনটি ড্রাগন ডিম্ব দিয়ে বিদায় জানালেন, যাতে আজও অগ্নিসংযোগ করা হয়ে চলেছে, তবু এখনো তারা ফেটে বেরোয়নি!

তবে এই আধুনিক যুগে দূরত্ব কই আর? ‘চাওমিন’ মোবাইলের ‘টিকটিকি’ অ্যাপের সাহায্যে এখনো শি’র সাথে কথা হয় মাঝে মাঝে।

পুনশ্চ : বাজারি পত্রিকার পুরো লেখাটি প’ড়ে গণশক্তির চোখে জল! “চীনের দালাল”, সবেধন লালমণি এই গর্বের উপাধিও যে এবার হাতছাড়া হতে চলেছে। শেষমেশ এই “মেড ইন চায়না” গণশক্তিকে হারাতে পারবে কি “পেড ইন চায়না” বাজার?

রেফারেন্স ১ ও ২: টেলি-ধারাবাহিক ‘গেম অফ থ্রোন্স’